মহান বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) তাকে খুঁজেছিলেন ভবিষ্যতের হিরে হিসেবে। সিংহভাগ ঠিকই ছিলেন তিনি। কারণ যাতে তিনি খুঁজে এনেছিলেন পরবর্তীকালে সেই তরুণী বাংলা সিনেমার একটা অধ্যায় হয়ে দাঁড়ান। তিনি বলিউড সিনেমার চিরদিন মনে রাখার মত এক নায়িকা। তিনি মনসুর আলি খানের ঘরণী, সইফ আলি খানের মা – শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore)। দীর্ঘদিন যিনি সিনেমার রূপোলী জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। তবে তিনি ফের ফিরলেন। ৭৮ বছর বয়সে ফিরলেন তাঁর নতুন সিনেমা ‘গুলমোহর’ দিয়ে। এখনো যেন একইভাবে জীবন্ত আছেন আশির দশকের এই ‘হার্টথ্রব’ অভিনেত্রী।
ধর্মেন্দ্র (Dharmendra) সহ একাধিক অভিনেতার সঙ্গে অন-ক্যামেরায় জুটি বাঁধলেও শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে রাজেশ খান্নার (Rajesh Khanna) জুটি আজও ভোলেননি দর্শকরা। তাদের কেমেস্ট্রি যেন অনেকাংশে আলাদা ছিল বাদবাকি সব জুটির থেকে। দুজনে একসাথে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন অনেক ছবিতে। যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিল ‘সুপারহিট’। ১৯৬৯ সালে ‘আরাধনা’ ছবির মাধ্যমে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন রাজেশ ও শর্মিলা। বিপুল জনপ্রিয়তা পায় ছবিটি। তারপর আরও বেশ কিছু সফল ছবিতে তাদের একসাথে দেখা যায়। ‘অমর প্রেম’, ‘সফর’ তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু একটা সময় পর আর একসাথে অভিনয় করতে দেখা যায়নি এই যুগলকে। কিন্তু কেন? এর পিছনে থাকা বিশেষ কারণ আছে কি কিছু? দেখুন সবিস্তারে।
অভিনেতা রাজেশ খান্নাকে নিয়ে তৈরি হওয়া একটি অডিওবুক ‘রাজেশ খন্না: এক তনহা সিতারা’-তে এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। অভিনেতার বিরুদ্ধে তিনি দেরি করে কাজে আসার অভিযোগ তোলেন তাতে। আর এই কারণেই নাকি তার উপর বিরক্ত হত অনেকেই। তিনি বলেন, ‘ওনার সঙ্গে শুটিংয়ে এটা অসম্ভব ছিল। ৯ টায় শিফট থাকলে উনি ১২ টার আগে আসতেনই না। আমরা সময়ে কাজ শেষ করতে পারতাম না। ইউনিট চাপে পড়ে যেত। আমায় বাড়তি সময় কাজ করার জন্য জোর করত। এটা যেন একটা নিয়ম হয়ে গিয়েছিল। আমার মনেও এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলত।” এছাড়াও অভিনেত্রী বলেন, ‘এক নায়িকার সঙ্গে বার বার কাজ করতে চাইতেন না রাজেশও। স্থবির হয়ে যাওয়ার ফল ভাল হয় না। যাই হোক, অল্প কিছু ছবিতে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। মানতে বাধা নেই, এটা আমায় অনেক স্বস্তি দিয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, একটা সময় রাজেশ খান্নার অভিনয় কেরিয়ার মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে। কেরিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে ‘ফ্লপ’ অভিনেতার তকমা লাভ করেন তিনি। শুরুতে এমন জমকালো কেরিয়ারে সামলে এসে এই অন্ধকার নিতে না পেরেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন অভিনেতা। শেষমেষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১১ সালে প্রয়াত হন অভিনেতা রাজেশ খান্না।
View this post on Instagram