Hoop PlusTollywood

Aindrila Sharma: দুর্গাপুজোয় নির্জলা উপবাস করেছিলেন ঐন্দ্রিলা, মেয়ের স্মৃতিতে আবেগপ্রবণ শিখা শর্মা

ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) নেই। দেখতে দেখতে কেটে গেছে দশটি দিন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরে গিয়েছেন সব্যসাচী (Sabyasachi Chowdhury)। অন্তরাল বেছে নিয়েছেন তিনি। কুঁদঘাটের বাড়ির প্রতিটি কোণে শুধুই পরিবারের কনিষ্ঠ কন্যা মিষ্টির ছোঁয়া। নীরব ঐশ্বর্য (Aishwarya Sharma) ফেসবুকে শেয়ার করেছেন বোনের সাথে শৈশবস্মৃতি। ঐন্দ্রিলার সন্তানসম সারমেয়রা কলিং বেল বাজলেই ছুটে যাচ্ছে। ওই বোধহয় তাদের মা ফিরে এলেন। কিন্তু তিনি আর কোনোদিন ফিরবেন না। ঐন্দ্রিলাকে কেড়ে নিয়েছে মারণরোগ ইউয়িং সারকোমা নামে এক বিশেষ প্রজাতির ক্যান্সার। লাল বেনারসিতে সাজিয়ে বোনকে বিদায় দিয়েছেন ঐশ্বর্য। কিন্তু নববধূর সাজে সেজে সব্যসাচীর সাথে সাতপাক ঘোরার কথা ছিল ঐন্দ্রিলার। তাঁর মা শিখা শর্মা (Shikha Sharma) জানিয়েছেন, আগামী বছর বিয়ের কথা ছিল এই জুটির।

পরিবারের ‘জিয়ন কাঠি’ ঐন্দ্রিলার জন্ম মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থে। শৈশব থেকেই দুষ্টু ছিলেন ঐন্দ্রিলা। প্রায়ই গার্জেন কল হত। সহপাঠীদের সাথে ঝগড়া,মারামারি লেগেই থাকত। কিন্তু পাশাপাশি স্কুলে সবচেয়ে মেধাবী ছিলেন তিনিই। নাচে, গানে, আবৃত্তিতে প্রথম হতেন ঐন্দ্রিলা। বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়াতে জানতেন। একবার মায়ের প্রিয় শাল নিয়ে গিয়ে দিয়েছিলেন এক গরিব মানুষকে। লকডাউনের সময় ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচী দাঁড়িয়েছিলেন সাধারণ মানুষের পাশে। তাঁদের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল অবৈতনিক পড়াশোনার ব্যবস্থা।

সব্যসাচী ও ঐন্দ্রিলা ছিলেন একে অপরের পরিপূরক। একবার শুটিংয়ে থাকাকালীন ঐন্দ্রিলা জানতে পারেন, সব্যসাচীর শরীর খারাপ। তিনি নিজেই তৎক্ষণাৎ স্কুটিতে বসিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সব্যসাচীকে। ঐন্দ্রিলা জানতেন, তাঁর ‘সব্য’-র লেখার হাত দারুণ। ঐন্দ্রিলার উৎসাহেই লিখতে শুরু করেন সব্যসাচী। ফাঁকি দেওয়ার জো ছিল না। লেখা পড়ে শোনাতে হত ঐন্দ্রিলাকে। নাহলেই জিজ্ঞাসা করতেন “কী গো, শোনালে না তো!” এইভাবেই আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় প্রথম বই ‘দলছুটের কলম’-এর মাধ্যমে লেখক হিসাবে আত্মপ্রকাশ সব্যসাচীর। অথচ ঐন্দ্রিলা কিন্তু কোনোদিনই বই পড়তে ভালোবাসতেন না। কিন্তু সব্যসাচীর লেখা পছন্দ করতেন। শিখা দেবী শুনেছেন, বইয়ের গল্প থেকে ফিল্ম তৈরির পরিকল্পনা ছিল সব্যসাচীর। হয়তো বা ফিল্মের নায়িকা হতেন ঐন্দ্রিলাই।

এককথায় শিখা দেবী বললেন, ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর ভালোবাসার মতো ভালোবাসা তিনিও দেখেননি। সব্যসাচী লিখতে চাইছেন না। ঐন্দ্রিলার জন্য ছিল এত আয়োজন। কিন্তু তিনিই তো নেই।

চলতি বছর নিজের হাতে দুর্গাপুজো ও লক্ষ্মীপুজো করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। দুর্গাপুজোয় নির্জলা উপবাস করে ঠাকুরের ভোগ এনেছিলেন। কিন্তু সবকিছু ওলোট-পালোট করে দিল 29শে নভেম্বর তারিখটা। না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা। রেখে গেলেন একরাশ মুহূর্ত যা আঁকড়ে বাঁচছেন তাঁর প্রিয়জনেরা।

Related Articles