Bengali SerialHoop Plus

Shweta Bhattacharya: থাকতেন ছোট্ট ঘরে, শুধু নুন দিয়ে ভাত খেতে হয়েছে ‘যমুনা ঢাকি’-র শ্বেতাকে

“ক্লাস টেন। উপস্থিত হয়েছিলাম ডান্স বাংলা ডান্সে। হঠাই সুযোগ পেলাম একটি সিরিয়ালে। পড়াশোনা চলছে কি করবো ভেবে উঠতে পারিনি। বাবা পাশে এসে দাঁড়ান। আমার হাতটা ধরে বলেন, তুই চল আমি তোর সঙ্গে যাবো। পড়াশোনার সাথে এটাও করবি। তারপরেই শুরু আমার বাংলা বিনোদনে নতুন করে বাঁচার যাত্রা। স্নেহাশীষ দার কাছে তুমি রবে নীরবে, জড়োয়ার ঝুমকোর মতো একের পর এক মেগায় হিট দিতে থাকি।” প্রায় অনেকগুলি বছর হয়ে গিয়েছে বাংলার ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ শ্বেতা ভট্টাচার্যের।

সপ্তম সিজনে বাবার হাতটা ধরে প্রতিযোগী হয়ে ‘দিদি নং ১’-এ উপস্থিত হয়েছিলেন শ্বেতা। নিজের জীবন কাহিনীর প্রায় সবটা তুলেও ধরলেন রচনা ব্যানার্জীর সামনে। তিনি বললেন, “নাচ আমার প্রাণ। কোনোদিন ভাবিনি অভিনয়ে সুযোগ পাবো। আমি তো এসব লাইট, ক্যামেরা, একশন কিছুই বুঝতাম না। আগে বাবাই আসতেন। কিছুদিন হলো মা আসছেন। মাও খুব অসুস্থ। দু’বার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। ডাক্তার মাকে তাই বেশি টেনশন নিতে বারণও করেছেন। এদিকে আমার যদি সেটে কাজ করতে গিয়ে ৬টা বেজে যায়। ফোন না ধরতে পারি মা রীতিমত প্যানিক করে ফেলেন।”

ফিরে তাকালে পুরোনো দিনের কোন মুহূর্তগুলো ভেসে ওঠে চোখের সামনে?

অভিনেত্রীর ভাষায়, “দাদা ছিল আমার। দাদাকে হারিয়ে ফেলেছি।” ছলছল করছিল বাবা-মেয়ের চোখ। শ্বেতা আবার বললেন, “আমাদের যখন জয়েন্ট ফ্যামিলি ছিল আমরা খুব ছোট্ট একটা ঘরের মধ্যে দিয়ে দিন কাটিয়েছি। মাঝেমধ্যে এমনও হয়েছে সকাল বেলা নুন দিয়ে ভাতটা খেয়ে ফেললাম। কিন্তু রাত্রে কি খাব তার কোন ঠিক ঠিকানা ছিল না। প্রথম দিন যখন আমি আমার একটা বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম গিয়ে তার বাথরুমটা খুলেছিলাম, দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ইঃ কত বড় বাথরুম। এমন বাথরুমে তো আমারা থাকতাম। আসলে বড়লোকদের বাথরুম যেরকম হয় আমাদের ঘরটা সে রকম ছিল।”

বাবা-মায়ের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল শ্বেতা?

শ্বেতা কিন্তু নিজের বাবা-মাকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবাসেন। শ্বেতার ভাষায়, “ কথায় আছে বড় হয়ে মা বাবাকে দেখবে। সেখানে দাঁড়িয়ে আমি বলছি আমি মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমার মা-বাবার জন্য আমি জীবনটা দিয়ে যেতে চাই। আমার বাবা আমার জন্য ওয়ার্ল্ড আমার ভগবান। বাবাকে কোনোদিন আমি পুজোতে একটা শার্ট বা জিনিস কিনতে দেখিনি রিপু করে পড়তেন। মাও কোনোদিন শাড়ি কেনেননি। আমার যদি কিছু পছন্দ হত তাহলে সেটা ঠিক কিনে দিত। মা বাবার জন্মদিন কবে সেটাও জানে না। কোনোদিন পালনই হয়নি।” অভিনেত্রীর বাবার ভাষায়, “ঝড়ঝাপটা গেছে। কঠিন পরিস্থিতিও অতিক্রম করতে হয়েছে। তার মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে এসেছি। এখন রাস্তায় বেড়োলে সবাই বলে ওই দেখ ঝুমকোর বাবা যাচ্ছে। মেয়ের পরিচয়েই তো বাবার পরিচয়। বিরাট পাওনা।”

whatsapp logo