Hoop Life

Lifestyle: বাড়িতে স্বল্প জায়গায় ব্রকলি চাষ করে আয় করুন হাজার হাজার টাকা

গাছ বাগান তৈরি করার শখ অনেকেরই রয়েছেন। কেমন হয় এই শখ কে যদি আপনি কাজে লাগিয়ে কটা পয়সা রোজগার করতে পারেন। বিষয়টা একেবারেই মন্দ হয় না। আমাদের দেশে এই ব্রকলি চাষ এখন হচ্ছে। যদিও ব্রকলি বিদেশি ফল হিসাবে আগে অনেকটাই বিখ্যাত ছিল। কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্যসচেতন ভারতীয়রা ব্রকলি অনেক বেশি পরিমাণে খাচ্ছে। সাধারণত ফুলকপির মত এই সবজির চাষ করতে মোটামুটি একই জলবায়ুর প্রয়োজন হয়। মোটামুটি এককালীন দু তিন হাজার টাকা খরচ করে মাসে দশ বারো হাজার টাকা রোজগার করা কোনো ব্যাপার না।সম্পূর্ণ জৈবসার প্রয়োগ করলে খরচ স্বাভাবিকভাবেই কম হবে।

বাড়ির সামনে ছোট্ট উঠোনে অথবা ছাদ বাগানে আপনি ব্রকলি চাষ করতে পারেন। চাষ করে বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে এবং আরেকটু বিশাল আকারে ভাবতেই পারেন। বীজ থেকে চারা বাড়িতে তৈরি করতে পারেন। অথবা নার্সারি থেকে ছোট ছোট চারা কিনে আনতে পারেন। যদি টবে করতে চান তাহলে অবশ্যই বড় মুখ ওয়ালা ১০ ইঞ্চি টবে করতে হবে।

জলবায়ু হতে হবে ১৫ ডিগ্রি – ২৫ ডিগ্রি। এপ্রিল এরপর ভালো ফলন দেবে। তবে বর্ষার পর থেকে শুরু করতে হবে। সেপ্টেম্বরের থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চারা বপন করলে আপনি শীতকালে ভালো ফল পাবেন।

জল জমে না, উর্বর দোঁয়াশ মাটি দরকার। তবে টবে করলে কোকোপিট এর সাথে সরষের খোল, বা পাতা পচা সার, গোবর পচা সার দিতে হবে। উঠোনে বড় জায়গায় ভালো করে মাটি, কোকো পিট এবং ভার্মিকম্পোস্ট, নদীর সাদা বালি মাটি ভালো করে মিশিয়ে দিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে।

ব্রকলি শুধু যে সবুজ রংয়ের হয় তাই নয়, এখন নানান ধরনের এক্সপেরিমেন্টাল বেগুনি, সাদা, সবুজ, হলুদ রঙের ব্রকলি হতে পারে। নার্সারি থেকে কথা বলতে পারেন কোন ব্রকলি থেকে কেমন রঙের চারা হবে নার্সারির মানুষেরা ভালো করে আপনাকে বলে দিতে পারবেন।

নার্সারি থেকে চারা নিয়ে এসে প্রথমে ছোট ছোট কাপের মধ্যে বা ছোট ছোট পাত্রের মধ্যে দিয়ে আপনি গাছটিকে আস্তে আস্তে বড় করুন। কিছুক্ষণ বড় হওয়ার পরে বড় পাত্রের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। শীতকালীন সারাদিন রোদ এই প্রক্রিয়ার ওপর পড়তে হবে। তবে একটা খেয়াল রাখতে হবে কখনো শিশির লাগানো যাবে না। মাটি তৈরি করে কয়েকদিন ফেলে রাখতে হবে। তারপরে টবের মধ্যে ভরে অথবা জমি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে এর মধ্যে চারাগুলি বসিয়ে দিতে হবে। একটি টবে একটি চারা বসাতে হবে। আর যদি বাগানে করেন তাহলে বেশ এক হাত দূরত্ব করে করে চারাগুলি বসিয়ে দেবেন।

দশ দিন অন্তর অন্তর গোবর সার অথবা ভার্মিকম্পোস্ট অথবা সরষের খোল পচা তরল সার দিতে হবে। অথবা যারা রাসায়নিক সার দিতে চাইছেন তারা ইউরিয়া প্রয়োগ করতে পারেন এতে ফলন অনেক ভালো হবে।

বর্ষার পর থেকেই মাটি ভালো করে প্রস্তুত করে নিতে হবে তবেই শীতকালে আপনি ভালো ব্রকলি পাবেন। একেকটা ব্রকলি কে আপনি ৪০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবেন। তবে কাটার সময় পুরোটা গোড়া থেকে কাটবেন না। ফুল কেটে নেবেন তাহলে একটি গাছ থেকে অন্তত তিন চারবার ফলন পাবেন।

ব্রকলি গাছে রোগ পোকার আক্রমণ হয়। অনেক সময় দেখা যায়, পাতার পিছনে ঝাঁকে ঝাঁকে পোকার আক্রমণ হয়েছে। যদি একেবারে জৈবিক পদ্ধতিতে এই পোকা কে দমন করতে চান, তাহলে জলের মধ্যে হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন। অথবা নিম তেল স্প্রে করতে পারেন। আর আরেকটি সহজ পদ্ধতি হলো প্রতিদিন পাতা উল্টে হাতে করে বা কোন কাপড়ের সাহায্যে চেপে চেপে পাতা ভালো করে পরিষ্কার করে পোকা মেরে ফেলতে পারেন।

ব্রকলির গাছের গোড়ায় আগাছা সব সময় পরিষ্কার করে দিতে হবে অন্তত দশ দিন অন্তর অন্তর আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। যাতে উজ্জ্বল আলো পায়, সূর্যের তাপ পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে সূর্যের তাপ যত বেশি তত বেশি সুন্দর হতে পারে। গাছের গোড়া শুকিয়ে গেলে তবে এতে জল দিন। জল পছন্দ করে কিন্তু গোড়ায় কখনোই জল জমে রাখা যাবে না।

whatsapp logo