Hoop News

প্রথম দর্শনেই প্রেম, কিন্তু অপূর্ণ রয়ে গেল স্বপ্ন, চোখে জল আনবে শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহের স্ত্রীর কাহিনী

মানুষ চলে যায়, থেকে যায় তার স্মৃতি। সেই স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে থাকা সহজ নয়। মানুষটা আর কোনদিন ফিরবে না, অপূর্ণ রয়ে যাবে একসঙ্গে দেখা স্বপ্নগুলি, এটাই বিশ্বাস করে ওঠা হয়ে ওঠে কঠিন। ঠিক এমনটাই হয়েছিল স্মৃতি সিং (Smriti Singh) এর সঙ্গে। ভারতীয় সেনার ক্যাপ্টেন শহিদ অংশুমান সিং (Captain Anshuman Singh) এর বিধবা স্ত্রী স্মৃতি। গত বছর ১৮ ই জুলাই যখন তাঁরা ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করছিলেন, ঠিক করছিলেন আগামী ৫০ বছর কেমন হবে, তখন স্মৃতি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তার পরের দিন সকালেই স্বামীকে হারিয়ে ফেলবেন চিরতরের জন্য।

২০২৩ এর ১৯ শে জুলাই সিয়াচেন হিমবাহ এলাকার ভারতীয় সেনা শিবিরের গোলাবারুদ রাখার ঘরে শর্ট সার্কিট থেকে বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভিতরে আটকে পড়া সহকর্মীদের উদ্ধার করতে সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহ। চার পাঁচজনকে উদ্ধারও করেছিলেন। এরপরেই পাশের মেডিকেল ইনস্পেকশন রুমেও ছড়িয়ে পড়ে আগুন। সেখান থেকে আর ফিরতে পারেননি ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহ। সহকর্মীদের বাঁচাতে গিয়ে শহিদ হন তিনি। ১৯ শে জুলাই খবরটা শুনে বিশ্বাস করতে পারেননি স্ত্রী স্মৃতি।

৬ ই জুলাই, শনিবার মরণোত্তর কীর্তি চক্র পুরস্কারে শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহকে ভূষিত করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সাদা শাড়িতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন স্মৃতি। পুরস্কার হাতে নিয়ে তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর প্রথম সাত আট ঘন্টা বিশ্বাসই করতে পারেননি তিনি। তবে এখন হাতে কীর্তি চক্র নিয়ে তিনি বুঝতে পারছেন, এই খবরটাই সত্যি। এদিন তিনি আরো বলেন, স্বামী শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহ তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর সময় বুকে পিতলের চাকতি অর্থাৎ মেডেল থাকবে। সেটাই হয়েছিল।

এদিন স্বামীর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কের নানান অজানা কথা শেয়ার করেন স্মৃতি। কলেজে প্রথম দর্শনেই প্রেম হয়েছিল তাঁদের। তার এক মাস পরেই আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে সুযোগ পান অংশুমান সিংহ। দীর্ঘ সাত আট বছর দূরে থেকে থেকে প্রেম পর্বের পর বিয়ে করেন তাঁরা। কিন্তু বিয়ের দু মাসের মধ্যেই সিয়াচেনে মোতায়েন করা হয় অংশুমান সিংহকে। একসঙ্গে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। একত্রে নতুন বাড়ি, সন্তান। সে সবই রয়ে গেল অধরা, রইল শুধু স্মৃতি।

Related Articles