শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee) 2020 সাল থেকে ব্যক্তিগত জীবনের জেরে প্রায় সবসময়ই চর্চিত হচ্ছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠদের মতে, খুব সহজেই প্রেমে পড়ে যান শ্রাবন্তী। ফলে তৃতীয়বার বিবাহ বিচ্ছেদের পর কলকাতার একটি কনফেকশনারি চেনের মালিক অভিরূপ নাগচৌধুরী (Abhirup Nagchowdhury)-র সাথে শ্রাবন্তীর সম্পর্কের গুঞ্জন ছড়াতে দেরি হয়নি। একই আবাসনে থাকেন তাঁরা। এমনকি নিজের অ্যাপার্টমেন্টে অভিরূপের জন্মদিন পালন করেছিলেন শ্রাবন্তী। সেই ছবি ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অবশ্যই শ্রাবন্তী বা অভিরূপ নন, তৃতীয় ব্যক্তির উদ্যোগে ভাইরাল হয়েছিল সেই ছবি। তবে বর্ষশেষের মুখে আবারও চর্চিত এই জুটি। শোনা যাচ্ছে, তাঁদের ব্রেক-আপ হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু কোনো ঝগড়ার মধ্য দিয়ে নয়, পারস্পরিক বোঝা-পড়ার মাধ্যমে ব্রেক-আপ করেছেন শ্রাবন্তী ও অভিরূপ। তবে শ্রাবন্তীর গলায় অন্য সুর। তিনি জানালেন, একই আবাসনে থাকার সূত্রে তাঁরা দুজনে যথেষ্ট ভালো বন্ধু। নিজেকে অভিরূপের কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বলে দাবি করেছেন শ্রাবন্তী। তিনি জানিয়েছেন, ব্রেক-আপের ঘটনা নেহাতই গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু কয়েক মাস আগে অবধি শ্রাবন্তী ও অভিরূপকে হাত ধরাধরি করে বিভিন্ন পার্টিতে প্রবেশ করতে দেখা যেত। এমনকি দুর্গাপুজোর সময় একসাথে তাঁদের সময় কাটাতেও দেখা গিয়েছে। এত কিছুর পরেও শ্রাবন্তী বলছেন, তাঁরা শুধুই ভালো বন্ধু।
শোনা গিয়েছিল, শ্রাবন্তী নাকি অভিরূপের সাথে ছুটি কাটাতে যেতেন। কিন্তু তাঁর কোনো ভিডিও অথবা ছবিতে দেখা যায়নি অভিরূপকে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিরূপ ও শ্রাবন্তীর কথোপকথন নজর কাড়ত। কারও বুঝতে বাকি ছিল না, তাঁদের মধ্যে রয়েছে সম্পর্কের উষ্ণতা। তবে তা একতরফা কিনা তাও জানা যায়নি। সকলে শ্রাবন্তীর দিক থেকে সম্পর্কের ইঙ্গিত করলেও তিনি বারবার বন্ধুত্বের দাবি করেছেন। হয়তো অভিরূপ তাঁর প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিলেন বলেই শ্রাবন্তী বন্ধুত্ব থেকে সরে আসতে চেয়েছেন। তবে তিনি এই ঘটনাকে কালিমালিপ্ত করতে চাননি।
View this post on Instagram
পরিচালক রাজীব বিশ্বাস (Rajib Biswas)-এর সাথে প্রথমবার সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন শ্রাবন্তী। কিন্তু এর ফলে বহুদিন অন্তরালে ছিলেন তিনি। শ্রাবন্তী ও রাজীবের পুত্র অভিমন্যু একটু বড় হওয়ার পর আবারও রূপোলি পর্দায় ফিরে আসেন নায়িকা। পরবর্তীকালে শ্রাবন্তী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রাজীবের বিরুদ্ধে। অচিরেই তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর শ্রাবন্তীর সাথে বিয়ে হয় মুম্বইয়ের স্ট্রাগলিং অভিনেতা ও মডেল কৃষ্ণ বিরাজ (Krishna Biraj)-এর। কিন্তু তিনি শ্রাবন্তীকে ব্যবহার করে নিজের কেরিয়ার তৈরি করতে চেয়েছিলেন। ফলে বিয়ের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ততদিনে শ্রাবন্তীর জীবনে এসেছেন রোশন সিং (Roshan Singh)। পেশায় কেবিন ক্রু ও পরবর্তীকালে সুপারভাইজার রোশনের সাথে 2019 সালে অমৃতসরে বিয়ে হয় শ্রাবন্তীর। কিন্তু বিয়ের এক বছর পরেই হয় সমস্যার সূত্রপাত। সেপারেশন হয়ে যায় তাঁদের। শ্রাবন্তীকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বারবার অপমান করতে থাকেন রোশন। শ্রাবন্তী বিবাহ বিচ্ছেদ চাইলেও রোশন বৈবাহিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার মামলা করেছিলেন যা টেকেনি।
একটি মেয়ের দিকে বারবার আঙুল তোলার আগে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। বিয়ের পর স্ত্রীকে অন্তরালে রাখার সিদ্ধান্ত কি ভালোবাসা? ডিভোর্সি মহিলাকে বিয়ে করে তাঁকে কেরিয়ারের জন্য ব্যবহার করার নাম কি ভালোবাসা? প্রকৃত প্রেমিক অথবা পুরুষ কি কখনও তাঁর ভালোবাসার নারীকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপমান করতে পারেন? নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বৈবাহিক অধিকার ফলানোর জন্য মামলা করতে পারেন? শ্রাবন্তী ভালোবাসা খুঁজেছিলেন। একবিংশ শতকের স্মার্টফোনগুলিতে সকলেই অবশ্য এক নারীর ভালোবাসা খোঁজা অথবা নিজের ইচ্ছায় বাঁচাকে অনুমোদন না করে ট্রোল করেন। তবে শ্রাবন্তী আপাতত এই ধরনের সমালোচনায় অভ্যস্ত। তাঁরও কিছুই যায়-আসে না।
View this post on Instagram