গরমকাল পড়তে না পড়তেই বিদ্যালয়গুলিতে নানান রকম কিছু কান্ড কারখানা চলছে। কিছু কিছু বিদ্যালয় তো মর্নিং এ করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু যেগুলো সম্ভব হয়নি, সেগুলোতে অনেকগুলোতেই আবার এসি লাগিয়েছেন শিক্ষকরা। নিজের বেতনের টাকা খরচা করেই এসি কিনেছেন, কিন্তু এবারে আবারো একটা অভিনব উদ্যোগ নিতে দেখা গেল স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। পুরুলিয়া ১ ব্লকের সিন্দরী চাষ রোড উচ্চ বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলে অসাধারণ একটা ব্যবস্থা করলেন শিক্ষকরা।
সরকারি বিদ্যালয় তে মিড ডে মিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রকল্প, কারণ এখানে শুধুমাত্র যে ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করতে আসে, তা নয়। এক বেলা ভর পেট খাবারও পেতে পায়, যেখানে প্রত্যন্ত গ্রামে একবেলা খাবার জোটানোটাই একটা খুব কষ্টের ব্যাপার, সেখানে স্কুলে এসে যদি পড়ুয়ারা একবেলা খাবার খায় এবং তারপরে পড়াশোনা করে, তা তো সব মিলিয়ে সত্যিই ভীষণ ভালো একটা উদ্যোগ।
এই উদ্যোগের কথা শুনলে আপনি একেবারে চমকে যাবেন। স্কুলের সামনে আইসক্রিমের ঠেলাগাড়ি দাঁড় করানো আছে, আর পুরো আরা এক মুখ হাসি নিয়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছে, কিন্তু এত টাকা কে খরচ করবে? চিন্তা নেই, এই টাকা খরচ করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তীব্র গরমে মিড ডে মিলের পাতে আইসক্রিম পড়বে, এমনটা ভেবেই বেশ মজা পাচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। গরমে হাঁসফাঁস করেছে অনেকেই, বিদ্যালয় আসা ছেড়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু মিড ডে মিলে যদি এমন ঠান্ডা ঠান্ডা আইসক্রিম পাওয়া যায়, তাহলে স্কুল কামাই করবে না।
গোটা মাস জুড়েই কষ্ট পেয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা
সেখানে বিদ্যালয়ে আসাটাই একটা কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে পড়ুয়াদের কাছে, আর এই কষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও চোখে পড়েছে। তারপর যেমন ভাবা ঠিক তেমনি কাজ, আইসক্রিম কাকু তার আইসক্রিমের ঠেলাগাড়ি নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, এই স্কুলের সামনে আর তারপর থেকে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়ারা পেয়েছে আইসক্রিম।
শিক্ষক কিরণময় পাত্র অবশ্য বলেছেন, এই তীব্র গরমে ওরা যে আইসক্রিম খেয়ে একটু হাসছে এটাতেই তিনি অনেক খুশি হয়েছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও ভীষণ খুশি ছাত্র-ছাত্রীদের এত খুশি দেখে।
