ফেলে দেওয়া নারকেলের খোল দিয়েই দুর্দান্ত লক্ষ্মীলাভ, চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করেই কোটিপতি মারিয়া
বর্তমানে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য প্রকৃতির বিপরীতে যায়, এমন দ্রব্য ব্যবহার করা একেবারে বর্জন করা হচ্ছে। তাহলে প্রকৃতিকে কখনোই আর বাঁচানো যাবে না, যদিও এখনো মানুষ বুঝতে পারছে না, তারা যত্রতত্র প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহার করছে, তা কিন্তু একেবারেই প্রকৃতির বন্ধু নয়। প্রকৃতির প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত পরিবেশবান্ধব এমন কিছু ব্যবহার করা প্রতিদিনের জীবনযাত্রায়। এমন অনেক মানুষ আছে, যারা পরিবেশবান্ধব পরিত্যাক্ত জিনিস দিয়ে আমাদের পরিবেশকে আবারো নতুন করে সুন্দর করে সাজিয়েছেন, তার মধ্যে একজন অন্যতম হলেন মারিয়া কুরিয়াকোস। ফেলে দেওয়া নারকেলের মালা দিয়ে, তিনি দারুন দারুন জিনিস বানিয়ে সবাইকে রীতি মতন তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
নারকেল কুরে নেওয়ার পরে নারকেলের যে খোলা বা নারকেলের যে মালা আমরা একেবারে হেলায় ফেলে দিই, সেই নারকেলের মালাকেই তিনি সুন্দর করে সাজিয়ে বাটি, গাছ রাখার জায়গা আরো কত কি তৈরি করেছেন। এগুলো দেখে মনেই হয় না, এগুলো ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে তৈরি। মারিয়া ২০১৯ সালে ‘থেঙ্গা কোকো’ নামে তার একটি প্রোডাকশন শুরু করেন। ২০২২ – ২৩ সালের মধ্যে এটি প্রায় এক কোটি টাকা আয় করেছে। এই ব্যবসা যখন তিনি প্রথম শুরু করেছিলেন, তখন কেরালার ত্রিশূর থেকে তিনি কয়েকটা নারকেলের খোলস সংগ্রহ করে তাকে ৩০ কাগজ দিয়ে ভালো করে ঘষে মেজে পরিষ্কার করে প্রথম একটা বাটি তৈরি করেছিলেন।
তারপর আর থেকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি, নারকোলের খোল দিয়ে একটার পর একটা জিনিস বানিয়ে রীতিমতন সবাইকে চমকে দিয়েছেন তিনি। মালায়ালাম ভাষা থেঙ্গা মানে হল নারকোল। মুম্বাইয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে মারিয়া স্পেনে গিয়েছিলেন পড়াশোনা করতে তারপর তিনি সেখান থেকে ফিরে এসে নারকেল গাছের প্রতিটা অংশ নিয়ে তিনি সবাইকে বলা শুরু করেন। নারকেল গাছটি আমাদের জীবনে কতখানি উপকারী একটা গাছ সেটা সম্পর্কে তিনি সব্বাইকে সচেতন করতে শুরু করেন। ২০১৭ সালে তিনি একটা মোটা মাইনের চাকরি পান কিন্তু সেই চাকরির পাশাপাশি তার ব্যবসা মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে, তারপর তিনি সেই মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে নিজের ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন।
তার এই জিনিসপত্র কিন্তু শুধু আর ভারতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এত সুন্দর জিনিসপত্র বিদেশ থেকেও মানুষ নিতে চায় সেজন্য সেখানেও পাঠানো হয় পার্সেল করে। আর তার কর্মচারীদের মধ্যে অধিকাংশ হলে মহিলা অর্থাৎ তিনি যে নিজে স্বনির্ভর হয়েছেন এবং পরিবেশবান্ধব জিনিসপত্র তৈরি করে পরিবেশকে বাঁচাচ্ছেন, তাই নয়, তিনি মহিলাদেরও স্বনির্ভর করছেন এই জন্য তাকে অবশ্যই একটা স্যালুট জানাতে হয়।