চলতি বছরের 26 শে জানুয়ারি চুপিসাড়ে বিয়ে সেরেছেন সুদীপ সরকার (Sudip Sarkar) ও অনিন্দিতা রায়চৌধুরী (Anindita Roychowdhury)। মাত্র পাঁচ মাসের প্রেম পরিণতি পেয়েছে সাতপাকে। সুদীপের মতে, এবার থেকে বিবাহবার্ষিকীর দিন কেউ তাঁকে কাজে ডাকতে পারবেন না। তবে বিয়ের এক দিন পরেই ফিরতে হয়েছে ফ্লোরে। সবসময়ই সুদীপ বলেন, তাঁর জনসংযোগ খারাপ। কিন্তু বর্তমানে সিরিয়াল থেকে ওটিটি সর্বত্র বিচরণ সুদীপের।
View this post on Instagram
সম্প্রতি জি ফাইভে 26 শে জানুয়ারি রিলিজ করেছে ‘মুক্তি’। এই ওয়েব সিরিজে রহমতের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুদীপ। এর আগে ‘রূদ্রবীণার অভিশাপ’-এর দুটি সিজনেই নজর কেড়েছেন তিনি। ‘সোনা রোদের গান’ সিরিয়ালে ক্যামিও করলেও ‘আলতা ফড়িং’ ধারাবাহিকে সুদীপ একটি ভালো চরিত্রে রয়েছেন। এছাড়াও হাতে রয়েছে আরও কিছু ওয়েব সিরিজ। কিন্তু এত ভালো অভিনয় করেও সুদীপের হাতে নেই ফিল্মের অফার। এর উত্তর শুধু তিনি কেন, নেই তাঁর অনুরাগীদের কাছেও। কয়েকটি ফিল্মে অভিনয় করেছেন। একবার একটি বড় প্রযোজনা সংস্থার তরফে ডাক পেলেও ধারাবাহিকের কাজ থাকায় সময় দিতে পারেননি সুদীপ। কিন্তু তারপর আর কেউ ডাকেননি। প্রকৃতপক্ষে, আলোর নিচে থাকা অন্ধকার নিয়ে কেউ মুখ খোলেন, কেউ খোলেন না। সুদীপ একজন সত্যিকারের অভিনেতা। তাই তাঁর হাতে কাজের অভাব হবে না। তিনি কারও কাছে গিয়ে কাজ চাইতে পারেন না। এই ক্ষেত্রে একটা কথা বলা যায়, কেন একজন শিল্পীকে কারোর দরজায় গিয়ে কাজ চাইতে হবে। সকলে দাবি করেন, এটা নাকি ইন্ডাস্ট্রি। প্রকৃত ইন্ডাস্ট্রি দক্ষতাকে চিনে নেয়। সুদীপের ক্ষেত্রেও এটাই হওয়ার কথা।
View this post on Instagram
তবে ওটিটিতে বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে খুশি সুদীপ। ‘নকল হীরে’, ‘কর্কটক্রান্তি’ সবকটি ওয়েব সিরিজ সফল। মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty), ইন্দ্রাশিস (Indrashish)-রাও তাঁর সাথেই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ফিল্মের নিয়মিত মুখ। তাতে খারাপ লাগে না সুদীপের। কারণ তিনি জানেন, প্রত্যেকেই নিজের মতো করে ঘষে-মেজে তৈরি হয়েছেন। সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে থিয়েটার করতে শুরু করেছিলেন। এরপর পরিচালক অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় (Anindya Banerjee)-র সহকারী হিসাবে কিছুদিন কাজ করেছিলেন সুদীপ। ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন তিনি। তবে এখনও ‘ফোর্ট বেল’ থিয়েটার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন নিজের অভিনয়কে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য। একটি অডিও অ্যাপের তিনি নিয়মিত গল্প পাঠক। এর ফলে হয়ে যায় নিজের ভয়েস মডিউলেশন। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সুদীপ অল্পেতেই সন্তুষ্ট।
View this post on Instagram
নায়ক মানে এখনও লার্জার দ্যান লাইফ, ঈশ্বরের মতো। তাই সুদীপ শুধুই খলনায়ক। তবে সেই ধারণা কিছুটা ভেঙে দিয়েছে ওটিটি। বাকিটা ভেঙে দিচ্ছে ‘আলতা ফড়িং’। এই সিরিয়ালে তাঁর চরিত্র ইতিবাচক। সুদীপ মনে করেন, প্রযোজক পরিচালকরা তাঁকে খলনায়ক হিসাবে দেখতে বেশি পছন্দ করেন। বলিউড থেকে ছোটখাট সুযোগ এলেও সময়ের অভাবে যেতে পারেননি। তবে এখন হিন্দি ভাষাটাও ভালো ভাবেই রপ্ত করেছেন তিনি। তাছাড়া টলিউডে সকলের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক। ফলে বলিউড থেকে সুযোগ এলে তাঁরাও সানন্দে কিছুদিনের জন্য ছুটি দেবেন সুদীপকে। তবে মাঝে মাঝে নিজেকে খুব কুঁড়ে লাগে তাঁর। ফলে নিজের উইকিপিডিয়া পেজটা ভালো করে বানানো হয়নি।
View this post on Instagram
এই সব কিছুর মধ্যেই অনিন্দিতার সঙ্গে আলাপ। দুজনেই দুটো সম্পর্ক ভেঙে টালমাটাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। বন্ধুত্বটা কখন প্রেমে পরিণত হল বুঝতে পারেননি। যখন বুঝলেন, বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। করোনা পরিস্থিতির ফলে মাত্র কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পরিবারের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করে বিয়ে করেছেন সুদীপ ও অনিন্দিতা। বিয়ের মেনু ছিল পুরো বাঙালি। ইদানিং অনিন্দিতাই সুদীপের কুঁড়েমির হাল ধরেছেন। তিনিই সুদীপের কাজের আপডেট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। কিন্তু এখনও হানিমুনটা হল না কাজের চাপে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পাহাড়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে দুজনের।
View this post on Instagram