whatsapp channel

আজও অমর উত্তম-সুপ্রিয়ার জমকালো প্রেম, হার মানাবে সিনেমার গল্পকেও

সুপ্রিয়া মানে ঢাকাই শাড়ি কপালে বড় সিঁদুরের টিপ, সিঁথিতে চওড়া সিঁদুর, সোনায় মোড়া গা, বড় নাকছাবি, আঁচলে চাবির গোছা। আবার সুপ্রিয়া মানেই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সেক্স সিম্বল। নাহ কাহিনীর শুরু এখান…

Avatar

HoopHaap Digital Media

Advertisements
Advertisements

সুপ্রিয়া মানে ঢাকাই শাড়ি কপালে বড় সিঁদুরের টিপ, সিঁথিতে চওড়া সিঁদুর, সোনায় মোড়া গা, বড় নাকছাবি, আঁচলে চাবির গোছা। আবার সুপ্রিয়া মানেই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সেক্স সিম্বল। নাহ কাহিনীর শুরু এখান থেকে নয়, বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন বার্মায় বসবাসরত অনেক ভারতীয় ভারতে চলে আসেন তখন থেকেই শুরু হয় সুপ্রিয়ার যাত্রা। পায়ে হেঁটে যেতে হবে ভারতে এসেছিলেন বাবার সঙ্গে তিনি। টানা এক মাস তেইশ দিন পায়ে হাঁটেন। ভারতে এসে প্রথম ‘নাগপাশ’ ছবির জন্য বাবার অনুমতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন, যদিও সেইসময় তাঁকে অনেক গঞ্জনা সহ্য করতে হয়। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর এটাই সুযোগ- এমনটাই ভেবেছিলেন সুপ্রিয়া দেবী। অবশ্য ‘নাগপাশ’ ছবিটি রিলিজই করেনি৷

Advertisements

Advertisements

নির্মল দের পরিচালনায় ‘বসু পরিবার’ করেন তিনি ১৯৫২ তে। এরপর আর থেমে থাকা নয়। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে একজন গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী হয়ে উঠলেন। চরিত্রের বৈচিত্রময়তা সুপ্রিয়া দেবীকে বসিয়েছে এক অন্য স্থানে। এখনও তাঁর ‘মেঘে ঢাকা তারা’ বা ‘কোমলগান্ধার’ সিনেমাপ্রেমীদের মনে আলাদা জায়গা করে আছে।’সন্ন্যাসী রাজা’ হোক বা ‘দুই পৃথিবী’ বা ‘বাঘ বন্দী খেলা’, ‘পলাশীর পদাবলী’, ‘উত্তরায়ণ’ একেকটা সিনেমায় একেক রকমভাবে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। ‘বসু পরিবার’ ছাড়াও ‘সোনার হরিণ’ দিয়ে উত্তম কুমারের সঙ্গে পাকাপাকি অভিনয় জীবনের যাত্রা শুরু করেন তিনি, যদিও সেই যাত্রা তাঁর রিয়েল লাইফেও প্রভাব ফেলে।

Advertisements

Advertisements

উত্তম কুমার শেষ জীবনে তাঁর স্ত্রী গৌরী দেবীকে ছেড়ে সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গেই থাকতেন। স্ত্রী গৌরী দেবীকে ডিভোর্স দেননি তিনি, কিন্তু সুপ্রিয়া দেবী তাঁর স্বামী বিশ্বনাথ চৌধুরীকে বিয়ে করার কিছু বছর পর ডিভোর্স দিয়ে দেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে ছিলেন সোমা। চার বছর সংসার করার পর তাঁরা আলাদা হয়ে যান। স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার পর ফের অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। পরিচয় হয় উত্তম কুমারের সঙ্গে। ভালোবেসে ফেলেন তিনি।

দারুন রান্না করতে পারতেন বেণুদি। আজও তাঁর রান্নার কদর হয় কিছু রান্নার অনুষ্ঠানে। উত্তম কুমার তাঁর হাতের রান্না খেতে খুব পছন্দ করতেন। তাই তাঁর জন্য জমিয়ে রান্না করতেন তিনি। হ্যাঁ, ১৯৬৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গিরীশ মুখার্জি রোডের পৈতৃক বাসভবন থেকে উত্তম কুমার চলে আসেন সুপ্রিয়া দেবীর ময়রা রোডের ফ্ল্যাটে। সেদিন ছিল উত্তম কুমারের প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবীর জন্মদিন। হঠাৎ একটা মনকষাকষি হয়ে যায় সেদিন। এরপরেই সুপ্রিয়া দেবীর বাড়িতে চলে আসেন। সেদিনের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গেই ছিলেন তিনি।

এই ঘটনা ১৯৬৩-র একটি শীতের সকালের কথা। উত্তম কুমার একদিন হঠাত্ এসে সুপ্রিয়া দেবীকে বলেন, ‘বেনু, তুমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করো ! আমি কিন্তু করি৷ ’‘আমিও৷ ’‘তোমার বাবা আইনজীবী , উনি ঠিকই বলেছেন আইন -বিষয়টা মানুষের সৃষ্টি করা৷ সবার উপরে ধর্ম, মানবিকতা৷ তাই ধর্ম সাক্ষী করে তোমাকে গ্রহণ করতে চাই৷ স্বীকৃতি জানাতে চাই।’ সেদিন মহানায়কের মুখ থেকে এমন কথা শুনে চমকে গিয়েছিলেন সুপ্রিয়া দেবী। প্রাণের মানুষের থেকে এমন কথা শুনে সেদিন সুপ্রিয়া দেবী শুধু বলেছিলেন ‘তুমি যা ভাল মনে করবে তাই হবে৷’ তারপর ২রা ডিসেম্বর , ১৯৬৩ সালে ধর্মসাক্ষী করে এবং হিন্দুমতে সমস্ত নিয়ম করেই বিয়ে করেন সুপ্রিয়া দেবী ও উত্তম কুমার।

সেই জমজমাট ময়রা স্ট্রীটের বাড়ি আজ আর নেই। একজন মাড়োয়াড়ী ওই বাড়ি কিনে গড়ে তুলেছে হোটেল। কিন্তু আজও সুপ্রিয়া দেবী ও উত্তম কুমারের প্রেম অমর, আজও অনুপ্রাণিত করে স্টোরি, আজও ‘মেঘে ঢাকা তারা’ বুঝিয়ে দেয় কত ভারী মাপের অভিনেত্রী তিনি।

whatsapp logo
Advertisements
Avatar