দেখতে দেখতে পার হয়ে গেল একটা বছর। আবারও ফিরে এসেছে সেই অভিশপ্ত দিন, 14 ই জুন। এই দিনে গত বছর নক্ষত্রলোকের পথে পাড়ি দিয়েছিলেন অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত (sushant singh Rajput)। সেই দিন থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিটি মুহূর্তে তাঁর মৃত্যুরহস্যের কাটাছেঁড়া। সুশান্তের পরিবার ও সুশান্তের অনুরাগীরা বারবার এই অনর্থক মৃত্যুর বিচারের আর্তি জানিয়েছেন। এর মধ্যেই নতুন করে ভাইরাল হয়েছে গত বছর সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি (sweta singh kirti)-র শেয়ার করা একটি ভিডিও যেখানে সুশান্তকে ভক্তি ভরে ভজন গাইতে দেখা যাচ্ছে।
ক্যাজুয়াল পোশাকেই একটি অনুষ্ঠানে সুশান্তের কন্ঠে শোনা যাচ্ছে ‘শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ হরে মুরারি’। চোখ বন্ধ করে ভক্তি ভরে কৃষ্ণনাম করছেন সুশান্ত। মাইক্রোফোনে গমগম করছে তাঁর কন্ঠ। সুশান্তের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটি দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নেটিজেনরা। অনেকের এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, তাঁদের প্রিয় ‘সুশি’ আর নেই।
View this post on Instagram
সুশান্তের মৃত্যুরহস্য নিয়ে পোস্টমর্টেম হতে হতে কখনও মনে হয় তাঁর ইচ্ছাগুলোও কি না বলা কথা হয়ে হারিয়ে যাবে সময়ের বাঁকে? সময়ই দিতে পারে তার উত্তর। কিন্তু বারবার মনে হয়, কেন চলে যেতে হল সুশান্তকে? যদি তিনি আত্মহত্যাও করে থাকেন তাহলে তাই বা কেন ঘটল? কারণ একটি সাক্ষাৎকারে সুশান্ত বলেছিলেন, কোনোদিন যদি তাঁর হাতে কাজের অফার নাও থাকে, তাহলেও তিনি ভেঙে পড়ার মতো ছেলে নন। তিনি বলেছিলেন, একটি ডিএসএলআর নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন নিজের মতো করে কিছু শুট করতে। তাহলে তিনি হঠাৎই কি করে আত্মহত্যা করতে পারেন?
পৃথিবীর বুকে সব জায়গায়, সব ক্ষেত্রেই নেপোটিজমের অস্তিত্ব রয়েছে। অনেকেই জানেন, সরকারী স্কুল ও কলেজে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মীদের সন্তানরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। হামেশাই দেখা যায়, উকিলের সন্তান উকিল, ডাক্তারের সন্তান ডাক্তার তা সে পড়াশোনায় যতই খারাপ হোক না কেন! কিন্তু নেপোটিজম কোনোদিন প্রতিভার পথ রুদ্ধ করতে পারে না। সুশান্তের মৃত্যুর ফলে বলিউডকে নেপোটিজমের দোষে দুষ্ট করা হলেও সুশান্তের আর্থিক সংকট ছিল না এবং সুশান্ত কিন্তু 2020-র শেষের দিকে হলিউড যাবার জন্য প্ল্যান করেছিলেন। সেই মতো হলিউডের কাস্টিং ডিরেক্টরদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ শুরু হয়েছিল। এমনকি হলিউডে কাজের আশ্বাস পেয়েই সুশান্ত নিজের ব্যক্তিগত আর্থিক বর্ষের হিসাব তৈরি করেছিলেন যাতে লেখা ছিল হলিউড থেকে তিনি মাসে কত আয় করতে পারেন। কিন্তু বারবার তিনি নিজের করা কোনো ভুলের কথা বলতেন যা তাঁর মা-ও করেছিলেন। এমনকি মৃত্যুর কয়েকদিন আগে মায়ের ছবি ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করেছিলেন সুশান্ত। কিন্তু এখনও অবধি কেউ জানতে পারেননি সুশান্তের করা ভুল আসলে কি বা তা আদৌ ভুল ছিল কিনা। কিন্তু পৃথিবীর বুক থেকে হঠাৎই একটি মানুষের চলে যাওয়া বা নিজেকে সরিয়ে নেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। ফলে সুশান্তের মৃত্যুর সুক্ষ্ম বিচার অবশ্যই প্রয়োজন। সঠিক বিচার হলে হয়তো আরও অনেক সুশান্ত আছেন যাঁদের প্রাণ রক্ষা পাবে।