সুন্দরভাবে খোঁপা বাঁধার তিনটি ইউনিক স্টাইল শিখে নিন
‘চুল তার কবে কার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য’ একদা কবি এক কোন সুন্দর নারীকে দেখে কবিতা লিখেছিলেন। সেই কবি যে শুধুমাত্র সুন্দর নারীকে দেখেছিলেন তাই নয়, তার সাথে সাথে সেই নারীর চুল দেখে ও কবি পাগল হয়ে ছিলেন। বর্তমানে অমন সুন্দর চুল খুঁজে পাওয়া বিরল কিন্তু যাদের এত সুন্দর চুল থাকে তারা নিঃসন্দেহে শাড়ির সঙ্গে বেঁধে ফেলতে পারে এই তিন রকমের খোঁপা।
‘খোঁপা’ কথাটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘ক্ষম্পেক’ থেকে। এর অর্থ হলো আঁটোসাঁটো করে বেঁধে রাখা। ইতিহাস ঘাটলে জানতে পারা যায়, হাজার বছর আগে বাংলাদেশের নারীরা লম্বা চুল রাখতেন এবং সাথে লম্বা চুল রাখতেন পুরুষেরাও। কারণ সে যুগের নারী-পুরুষ সবাই সেলাই না করা কাপড় পড়তেন তাই লজ্জা নিবারণের জন্য লম্বা চুল অনেকটাই সাহায্য করত।
পরবর্তীকালে মেয়েরাও খোঁপা বাধত। চুল পরিপাটি করে বেঁধে মাথায় ফুল দেওয়ার প্রচলন ছিল। তবে সময়ের বিবর্তনে সাথে সাথে এখন বিনুনি করা অনেকটাই ফ্যাশন হয়েছে। তবে যাই হোক কিছু ট্রাডিশনাল উৎসবে বিয়েতে কিন্তু এখনও মেয়েদের খোঁপা বাঁধার রীতি প্রচলিত রয়েছে। প্রাচীনকালে অমৃতি পাক, লোটন, পান, টালি, খেজুর ছড়ি, এলোকেশী, বিনোদবেণী, প্রজাপতি ইত্যাদি খোঁপার প্রচলন ছিল। বিদেশি ধাঁচের কিছু খোঁপার কথা জানতে পারা যায় যেমন ফিরিঙ্গি খোঁপা, বিবিগঞ্জ, টায়রা খোঁপা, এরোপ্লেন খোঁপা ইত্যাদি।
১) হাত খোঁপা-»
সাধারণত মা ঠাকুমাদের আগেকার দিনে দেখা যেত সকালবেলা স্নান করে মাথার সিঁথিতে সিঁদুর পড়ে হাত দিয়ে পাকিয়ে ঘাড়ের কাছে একটা খোঁপা করে হেঁসেলে ঢুকে পড়তেন। এমন চুলের স্টাইল এখনো করতে পারেন। আপনার যদি বড় চুল হয় তাহলে কোন বিয়ে বাড়িতে কিংবা কোন পূজা অনুষ্ঠানে এমন সাধারন হাত খোঁপা বেঁধে কোন একটি ফুল খোঁপায় গুঁজে নিন। ব্যাস তাহলেই আপনার সাজ একেবারে কমপ্লিট।
২) ব্রাইডাল খোঁপা-»
বিয়ের কনে হিসাবে সাজের সঙ্গে মানানসই উপযুক্ত খোঁপা হলো ব্রাইডাল খোঁপা। চুলের গোড়ায় একটা গার্ডার দিয়ে শক্ত করে বেঁধে নিন। তার সঙ্গে একটি টার্সেল লাগিয়ে নিন। এবার পুরো চুলটা নিয়ে একটা বড় বিনুনি বাঁধুন। সেই বিনুনিটা সমেত একটা বড় খোঁপা করুন। খোঁপার আকার বেশ বড় হবে এমনটাই ধারণা করা যেতে পারে। এরপর কাঁটার সাহায্যে খোঁপার ভেতর ভেতর ভালো করে আটকে দিন। জুঁইয়ের গোড় কিংবা রজনীগন্ধার মালা অথবা একেকটা করে গোলাপ ফুল নিয়ে ভেতরে ভেতরে পুরো খোঁপায় লাগিয়ে দিন।
৩) বিনুনি খোঁপা-»
এটিও একেবারে হাত খোঁপার মতোই সহজ। শুধু হাত খোঁপা করার আগে পাশে সিঁথি কেটে সামনে থেকে একফালি চুল নিয়ে আলাদা করে রেখে দিয়ে খোঁপা করার পরে সেই সামনের চুল বিনুনি করে কানের পাশ দিয়ে নিয়ে গিয়ে খোঁপার সঙ্গে বেঁধে দিন।