বাংলা ফিল্মে আশির দশকে খল চরিত্র বললেই মনে পড়ে যায় অনামিকা সাহা (Anamika Saha)-র কথা। তবে শুধুমাত্র খল চরিত্র নয়, মা-মাসীর চরিত্রেও অনবদ্য অভিনয় করেছেন অনামিকা। মাত্র উনত্রিশ বছর বয়স থেকে এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করছেন অনামিকা, শুধুমাত্র অভিনয় করবেন বলে, অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে।
বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি থেকে অভিনয় করার অনুমতি পাচ্ছিলেন না অনামিকা। তাঁকে বলা হয়েছিল, তাঁর কন্ঠস্বর সুন্দর। ফলে তিনি বেতার নাটক করতে পারেন। সেই সময় রেডিওতে পাঁচ হাজারের বেশি নাটক করেছিলেন অনামিকা। কিন্তু মেয়ের জন্মের পর আবার অভিনয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। ফলে আইনজীবি শ্বশুরমশাইকে গিয়ে অনামিকা বলেন অভিনয় শুরুর কথা।
View this post on Instagram
শ্বশুরমশাই তাঁকে বলেন, তাঁদের কোনো প্রেজুডিস নেই। কিন্তু এমন কোনো চরিত্রে যেন অনামিকা অভিনয় না করেন যা তাঁদের বসে দেখতে খারাপ লাগবে। অনামিকার মনে হল, নায়িকার চরিত্র করলে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য থাকবেই। তার পরিবর্তে মা-মাসীর চরিত্রে অভিনয় করাই ভালো বলে মনে হয়েছিল অনামিকার। কিন্তু সেই সময় তিনি অত মোটা ছিলেন না। চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet Chakraborty) তাঁকে বুদ্ধি দিলেন পান্তাভাত, ফেনা ভাত খেয়ে মুখটা একটু ঝুলিয়ে ঘুমানোর। তাছাড়া সিজারের মাধ্যমে সন্তানের জন্মের পর এক্সারসাইজ ছেড়ে দিয়েছিলেন অনামিকা। যতদিন না মোটা হচ্ছিলেন, ডাবিং আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করতেন তিনি। বিজয়েতা পন্ডিত (Vijayeta Pandit), জুহি চাওলা (Juhi Chawla)-দের বাংলা ডাবিং তিনিই করতেন।
একদিন ডাবিং করে বেরোনোর সময় কয়েকজন ব্যক্তি এলেন ফিল্মের অফার নিয়ে। অনামিকা তাঁদের বললেন শ্বশুরমশাই-এর সাথে কথা বলতে। শুরু হল ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ ফিল্মের মাধ্যমে অনামিকার দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম দিকে খল চরিত্রে অভিনয় করলেও, অনুপ সেনগুপ্ত (Anup Sengupta) নির্মিত ফিল্মের মাধ্যমে মায়ের চরিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন অনামিকা। প্রসেনজিৎ (Prosenjit Chatterjee), অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee)-দের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনামিকা। অথচ তাঁদের বয়সের ব্যবধান তিন-চার বছর। তাপস পাল (Tapas Pal) ছিলেন বয়সে এক বছরের বড়।
বর্তমানে তেষট্টি বছর বয়স অনামিকার। এখনও সমান তালে কাজ করে চলেছেন। জীবনের শেষ দিন অবধি অভিনয় করতে চান অনামিকা।
View this post on Instagram