কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Koneenica Banerjee)-র সমস্ত সত্ত্বা ঘিরে এখন শুধুই তাঁর কন্যাসন্তান কিয়া (Kiya)। মেয়ের জন্য নিয়েছিলেন চার বছরের বিরতি। ‘অন্দরমহল’ -এ অভিনয়ের সময় অন্তঃসত্ত্বা হন কণীনিকা। তবে কিয়ার জন্মের পর ‘টনিক’ ফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। কিয়ার জন্মের পর পাল্টে গিয়েছে তাঁর স্বপ্নের সংজ্ঞা। কিয়াকে ভালো রাখতে চান কণীনিকা। ইন্সটাগ্রাম রিলেও কিয়ার উপস্থিতি। কিন্তু কণীনিকার মাঝে মাঝেই মনে হয় মুম্বইয়ে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে, ওটিটিতেও বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট হচ্ছে, পরিচালকরা কেন তাঁর কথা ভাবেন না! কারণ তিনি মনে করেন, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বয়স বলে কিছুই হয় না।
View this post on Instagram
একুশ বছর পরেও ‘এক আকাশের নীচে’-র পাখি বলেই কণীনিকাকে চেনেন সবাই। কিন্তু একুশ বছরে কণীনিকার কাজের সংখ্যা যথেষ্ট কম। একটি করে সিরিয়ালে অভিনয় করার পর অনেকগুলি বছর বসে থাকতে হয়েছে কণীনিকাকে। এর মধ্যেই রবি ওঝা (Rabi Ojha) পরিচালিত ফিল্ম ‘আবার আসব ফিরে’-তে অভিনয় করার সময় কণীনিকা শুনেছিলেন, তিনিই ভবিষ্যতের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিমান অভিনেত্রী। কিন্তু তারপর সেভাবে কেউ ডাকেনি। তিনি মনে করেন, সময় ও ভাগ্য একটা ব্যাপার। তবে তিনি একটু বেশিই লড়াই করেছেন। তবে একুশ বছরের মধ্যে মাত্র সাত-আট বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সুযোগ পেলেও কণীনিকার অনুরাগীর সংখ্যা নেহাত কম নয় তা তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল দেখে বোঝা যায়। তিনি তাঁর অনুরাগীদের কাছে কৃতজ্ঞ।
একসময় পছন্দের চরিত্রে অভিনয় করতে চাইলেও 2011 সাল থেকে 2022 সাল কণীনিকাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রতিভা দিয়ে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু হবে না। খেয়ে-পরে বাঁচতে হলে টাকা চাই। তাই চাকরির মতো অভিনয়টা করে যেতে হবে। কণীনিকা এখন শুধুই দেখেন চরিত্রটিতে অভিনয়ের সুযোগ আছে কিনা! বর্তমানে তিনি ছোট, বড় সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করতে রাজি। তবে তিনি স্পষ্টবক্তা, তেল দেওয়ায় বিশ্বাসী নন। পছন্দ না হলে বেরিয়ে চলে আসেন। এই কারণে ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে অনেকে অপছন্দ করলেও খারাপ সময়ে তাঁর পাশে থেকেছেন শিবপ্রসাদ (Shibaprashad Mukherjee) ও নন্দিতা (Nandita Ray), ইন্দ্রাশিস আচার্য (Indrashish Acharya)-রা। এই কারণে কণীনিকা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ তাঁদের কাছে। নাহলে কবেই অবসাদে ভেঙেচুরে তলিয়ে যেতেন।
View this post on Instagram
তবে ইদানিং সিরিয়ালে কাজ করে মনের খিদে মেটে না। প্রতিদিন কূটকাচালির দৃশ্যে অভিনয় করে হাঁপিয়ে ওঠেন কণীনিকা। ওটিটিতে একটা কাজ করার পর সুযোগ আসেনি। বহু ক্ষমতাশালী প্রযোজক ও পরিচালকদের সঙ্গেও ঝামেলা হয়েছে কণীনিকার। তবে রাজনীতিতে এসেছেন ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই। কিন্তু কণীনিকা নিজেকে রাজনৈতিক দুনিয়ার উপযোগী মনে করেন না। তাই রাজনীতিতে আসতে চাননি।
View this post on Instagram
কাজ না থাকলে অবসাদ এলেও তলিয়ে যেতে দেননি কণীনিকার পরিবার, মা, বাবা, কাকা, কিয়া। আর্থিক সমস্যাও হয়নি। পরিবারের জোর আছে বলেই টিকে রয়েছেন কণীনিকা। প্রযোজক সুরজিৎ হরি (Surajit Hari)-কে বিয়ে করলেও একে অপরের বিষয়ে জড়ান না। সুরজিৎ স্বামী হিসাবে পাশে থাকলেও তাঁর থেকে আর্থিক সাহায্য নেন না কণীনিকা। কণীনিকার বোন একসময় ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন। কণীনিকা সেই সময় মুম্বইয়ে। তাঁর বোন মানতে পারেননি ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতি। সরে গিয়েছিলেন। বর্তমানে বিদেশে স্বামী-সন্তান নিয়ে তাঁর সুখী সংসার। সেখানেই চাকরি করেন তিনি। তবে কণীনিকার মতে, এই মুহূর্তে সিরিয়ালগুলি বদলে গিয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিচালকের তুলনায় চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক ও চ্যানেলের কথার গুরুত্ব বেশি। চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি অভিনেতার সংখ্যা বাড়লেও ভালো কাজের সংখ্যা কম। কিন্তু ক্যামেরা অনেক আধুনিক ও উন্নত হয়েছে। সিরিয়ালের সেটে সাজপোশাকের জন্য আলাদা দফতর রয়েছে। কাজের তত্ত্বাবধানের জন্য লোক থাকছেন। এই পরিবর্তনগুলি কাজের সুবিধা করে দিয়েছে।
View this post on Instagram
পারিবারিক জীবনে মা বোঝানোর পর সুরজিৎকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলেন কণীনিকা। সেই সময় সুরজিৎ-এর জীবনে ছিল তাঁর দশ বছরের ছেলে দ্রোণ (Dron)। কৃষ্ণভক্ত কণীনিকাকে তাঁর মা বুঝিয়েছিলেন, সুরজিৎকে বিয়ে করলে তিনি কৃষ্ণসেবার সুযোগ পাবেন দ্রোণের মাধ্যমে। একসময় ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিলেও বিয়ের পাঁচ বছর পর দ্রোণ, কণীনিকাকে মা বলেই ডাকে। কিয়াকেও যথেষ্ট ভালোবাসে দ্রোণ। একসময় কণীনিকার চিন্তা ছিল সম্পর্কগুলো নতুন খাতে বওয়ার ব্যাপারে। কিন্তু বর্তমানে তিনি চিন্তামুক্ত।
View this post on Instagram