নব্বইয়ের দশকে দূরদর্শনের নিয়মিত সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন মিতা চট্টোপাধ্যায় (Mita Chatterjee)। রবীন্দ্রসদনে অজস্র অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। বেরিয়েছে তাঁর প্রচুর হিট গানের ক্যাসেট। ‘পালকিতে বৌ চলে যায়’ এখনও অবধি হিট। কিন্তু এই গানটি যখন প্রথম রিলিজ করে, তখন সেই ভাবে বঙ্গসমাজে ছাপ ফেলতে পারেনি। ফলে এই গানটি দ্বিতীয়বার নতুন করে রিলিজ করা হয়। সেই সময় খুব অদ্ভুত ভাবেই গানটি হিট করে যায়। তবে এই গানের পিছনে রয়েছে একটি গল্প।
মিতা নিজেই সেই গল্পের কথা তুলে ধরেছেন। ‘পালকিতে বৌ চলে যায়’ গানটি প্রথম রিলিজ হয় 1993 সালে। কিন্তু সেই সময় গানটি জনপ্রিয়তা পায়নি। এরপর ওই মিউজিক কোম্পানিটি উঠে যায়। এরপর 2000 সালে এই গানটি আবারও মিতা নতুন করে গান এবং রিলিজ করে অন্য একটি মিউজিক কোম্পানি। এবার গানটি রিলিজ হতেই সুপারহিট হয়ে যায়। আজও এই গানের সমান জনপ্রিয়তা দেখে ভগবানকে ধন্যবাদ জানান মিতা।
কিন্তু ‘পালকিতে বৌ চলে যায়’ রিলিজের আগে মিতার পরিচয় ছিল ‘আশাকন্ঠী’ নামে। আশা ভোঁসলে (Asha Bhonsle)-র বাংলা গান গেয়ে রীতিমতো সাড়া ফেলেছিলেন মিতা। কিন্তু তাঁর পরিবারের লোকেরা বলতেন, আশাজির গান গেয়ে সফল হলেও তাঁর নিজস্ব পরিচয় তৈরি করা উচিত। ফলে এবার নিজের গান গাওয়ার দিকে তাঁর মনোনিবেশ করা উচিত। তবে মিতা মনে করেন, আশা ভোঁসলের গান গাওয়া তাঁর কাছে অপমানের নয়। কিন্তু ‘আশাকন্ঠী’ তকমা ভালো লাগত না মিতার। কারণ তিনি আশার কন্ঠকে নকল করেন না, তাঁর স্টাইল অনুসরণ করেন। তবে মিতার নিজস্ব গান রিলিজ হওয়ার পর তাঁকে আর কেউ ‘আশাকন্ঠী’ বলেন না।
আজও আশা ভোঁসলের সঙ্গে সাক্ষাতের দিনটি ভুলতে পারেন না মিতা। একটি অনুষ্ঠানে আশা হলের মধ্যে বসেছিলেন। মিতা তাঁর সামনে গিয়ে পায়ের কাছে বসে প্রণাম করেন। একটু অবাক হয়ে তাকিয়েছিলেন আশা। এরপর তিনি মিতার মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন মিতা আশার হাত চেপে ধরে বলেছিলেন, তিনি আশার গান গেয়ে সঙ্গীত জগতে নাম অর্জন করেছেন। আশার আশীর্বাদ তাঁর পাথেয়। আশীর্বাদ করে আশা সেদিন মিতাকে বলেছিলেন এগিয়ে যেতে।
View this post on Instagram