ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সরোজ খান এক জনপ্রিয় ও পরিচিত নাম। নিজের কাজ দিয়েই স্বনামধন্য হয়েছিলেন তিনি। নিজের নৃত্য কলা দিয়ে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন মাধুরী দীক্ষিত সহ বহু অভিনেত্রীকে। তার নাচের জাদুতে আজও বহু গান ও বহু অভিনেত্রী হিট। কিন্তু, এই মানুষটার জীবনে রয়েছে অসংখ্য বাঁধা। একরাশ দুঃখ, যন্ত্রণা, অভাব দিয়ে শুরু হয় জীবন। খুব কম বয়স থেকে লড়াই দেখেছিলেন আর তারও আগে দেখেছিলেন নিজের ছায়া।
হ্যাঁ, ছোটবেলায় নিজের ছায়া দেখে দেখে নাচ করতেন সরোজ খান। মুম্বাইতে এক দরিদ্র নিঃস্ব দম্পতির ঘরে জন্ম নেন তিনি। ভারত পাকিস্তান নিয়ে যখন ভাগাভাগির খেলা চলছিল তখন ভারতে চলে আসেন এই মুসলিম পরিবার। এরপরেই মুম্বাইতে জন্ম হয় সরোজ খানের। ছোট থেকে ছায়ার সঙ্গে নাচতেন বলে তার মা বাবা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সেইসময় ওই ডাক্তার সাথ দেন সরোজ খানের। বুঝতে পারেন এই মেয়ে নাচ করতে ভালোবাসে। তিনি তখন তাকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে আনেন।
এরপর গ্রুপ ড্যান্সার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন সরোজ খান। একেবারে প্রথম দিকে চলচ্চিত্র কোরিগ্রাফার বি. সোহানলালের অধীনে কাজ করতেন এবং গ্রুপ ড্যান্সার হিসেবে নাচ করতেন। পরে, তিনি একজন সহকারী কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে, তিনি নিজে কোরিওগ্রাফার হিসাবে “গীতা মেরা নাম” চলচ্চিত্রে দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর তার কোরিওগ্রাফিতে জীবন্ত হয়ে ওঠেন বৈজয়ন্তীমালা, শ্রীদেবী, মাধুরী, ঐশ্বর্য থেকে বহু তাবর তাবড় অভিনেত্রী।
খুব কম বয়স থেকে পরিবারের দ্বায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছিলেন সরোজ খান। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তার পরে একটি ছোট বোন ছিল, সেই বোন মা সকলের দ্বায়িত্ব নিজে তুলে নেন। সরোজ খানের কথায়, আল্লাহর পরে নিজের কলা অর্থাৎ শিল্পী সত্বাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নিজের গোটা জীবন তিনি নাচে মনোনিবেশ করে গিয়েছিলেন।
এমনকি তার জীবনের আরো একটি মর্মান্তিক ঘটনা হল, যখন তার নিজের সন্তানের বয়স মাত্র আট মাস, সেই সময় তার সন্তান মারা যায়। সেদিন তার শ্যুটিং ছিল। সকালে কন্যা সন্তান মারা যায়, দুপুরে কবর দেন এবং বিকেল ৫ টায় শ্যুটিং স্থলে যান দম মারো দম গানের নাচের শ্যুটিংয়ের জন্য!!!