বৃষ্টি থামলেও ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় নতুন করে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা দক্ষিণের ৫ জেলায়
ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ -এর জেরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি এখন ঝাড়খণ্ডের উপর অবস্থান করছে। এর জেরে ওই রাজ্যে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলার উপরেও। একনাগাড়ে বর্ষণের ফলে বাংলার নদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠছে। জলস্রোতের চাপ কমাতে ব্যারেজগুলি জল ছাড়তে শুরু করেছে, যার জেরে গাঙ্গেয় উপকূলের এলাকাগুলি বানভাসি হতে পারে এমন সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
জানা গেছে শুক্রবার সকালে ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে মাইথন জলাধার থেকে এবং ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে পাঞ্চেত জলাধার। পাশাপাশি দেড় লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। এর ফলে গাঙ্গেয় উপকূলের জেলাগুলি বিশেষ করে হাওড়া ও হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে প্লাবনের আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। এর আগে গত জুলাই-আগস্ট মাসে ভয়াবহ বন্যার কারণে নদীবাঁধ ভেঙে গিয়ে অনেক জায়গায় ভীষণ ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফের যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেই উদ্দেশ্যে পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছে জেলাপ্রশাসনগুলি।
বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলার উদ্দেশ্যে হাওড়ার উদয়নারায়নপুরে এক প্রশাসনিক বৈঠক হয়। এই এলাকার বিধায়ক সমীর পাঁজা নিজে নদীবাঁধ পরিদর্শনে যান। উদয়নারায়নপুর ছাড়াও হুগলির বেশ কিছু এলাকা বিশেষ করে আরামবাগ ও খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা, ভগবানপুর এবং পটাশপুর এলাকায় এখনও জল যন্ত্রণা কাটেনি সাধারণ মানুষের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কেলেঘাই নদীর বাঁধ মেরামত ভীষণ ঢিমেতালে চলছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ২০-২৫ টি গ্রাম এই নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বর্তমানে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জল। চন্দ্রকোনার বসনছরা গ্রামও এখনও জলের তলায়। দাসপুর ব্লকেও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন করে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কারণে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘাটালের মনসুকা গ্রামে প্লাবনের আশঙ্কা থাকায় জেলাপ্রশাসনের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই সর্তকতা জারি করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে মহকুমার শাসক সুমন বিশ্বাস বলেছেন, “ঘাটালের নদীগুলিতে জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।”