Tourism: দীঘা-পুরী-দার্জিলিং নয়, মন খারাপ হলে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার এই ছোট্ট গ্রাম থেকে
শীতকাল হলেই মনে হয় ব্যাগ গুছিয়ে পালাই পালাই, ঘর থেকে, কিন্তু কোথায় যাবেন, ভেবে দেখেছেন ছেলে মেয়ের স্কুল, বরের অফিস, নিজেরও হাজার কাজ সবকিছু সামলে কোথায় আর বেড়াতে যাওয়া হয় তার জন্য মন ভীষণ খারাপ হয়ে যায় যখন অন্যের বেড়াতে যাওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেন তখন হয়তো লাইক দিতেই হয়। আজকে আমাদের ডেস্টিনেশন পুরুলিয়া জেলার দুয়ারসিনী।
পুরুলিয়া জেলার দুয়ারসিনীতে পাবেন অপার শান্তি। সাদামাটা গ্রাম্য জীবনে এক টুকরো অক্সিজেন, আপনি যেন হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবেন। জীবন কত নির্মল হয়, মানুষ আজও কত সরল, সেটা বোঝা যায় এখানে। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাহাড়। সবুজের সমারোহ চারিদিকে। দুয়ারসিনীর জঙ্গলে রয়েছে শাল, পিয়াল, শিমুল, পলাশ, বহেড়া গাছের জঙ্গলে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে সাতগুরুং নদ।
এখানকার জঙ্গলে দেখতে পাবেন হাতি, ভল্লুক, বুনো শুয়োর, নেকড়ে বাঘ। ভয় পেয়ে যাবেন না, কিন্তু দূর থেকে এই দৃশ্য উপভোগ করবেন, আর হাতের সামনে যদি ক্যামেরা থাকে তাহলে ক্যামেরাটা অন করতে একেবারেই ভুলবেন না। পড়ন্ত বিকেলে সাতগুরুংয়ের ধারে বসে ওদের কুলুকুলু শব্দ শুনতে এই কোথা দিয়ে ঘড়ির কাটা পেরিয়ে যাবে, আপনি বুঝতেও পারবেন না।
আস্তে আস্তে রাত ঢলে পড়বে দুয়ারসিনী কোলে। কেটে যাবে আনমনা সময়। একটু কান পাতলেই শুনতে পাবেন, কোথাও যেন মাদলের শব্দে ঘুমের মধ্যে এই শব্দ শুনতে শুনতে আপনি হয়তো ঘুমিয়েই পড়বেন, ভোরবেলা আপনার ঘুম ভাঙ্গবে, জঙ্গলের যত পাখি তাদের কিচিরমিচির ডাকের মাধ্যমে। এখানে গেলে আপনি ট্রেকিংও করতে পারেন।
কলকাতা থেকে মাত্র ২৬৩ কিলোমিটার দূরে পুরুলিয়ার দুয়ারসিনীতে। এছাড়া দুয়ারসিনী থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে গালুডি থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। এখানে আপনি কিছু অতীত সভ্যতার সংস্কৃতি অবশেষ দেখতে পাবেন। দুয়ারসিনীর প্রধান আকর্ষণ হল সাঁওতাল, মুন্ডা, শবর এবং খেরিয়ার মতো উপজাতির গ্রামগুলি। তবে আর কি এত সুন্দর জায়গা যখন ব্যাগ পত্র গুছিয়ে দু-তিন দিনের ছুটিতে কাটিয়ে আসুন দুয়ারসিনী।
এত কিছু শোনার পরে এবার জেনে নিন কিভাবে পৌঁছাবেন আপনার স্বপ্নের ডেস্টিনেশনে। হাওড়া থেকে ট্রেনে ঘাটশিলা এসে সেখান বাসে চলে আসুন নরসিংহপুর, ২০ কিলোমিটার পথ। তার পর বনপথ ধরে হাঁটা আধ ঘণ্টা সময় লাগবে ৩ কিমি রাস্তা পার হতে। দল বেঁধে এলে এ পথে আসাই যায়। কলকাতা থেকে বান্দোয়ান সরাসরি বাসেও আসা যায়।