বিয়ে হল জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিত্তশালী মানুষদের বিয়েতে হয় ঢালাও আয়োজন। কিন্তু মধ্যবিত্তদের কাছে বিয়ের আয়োজন নাভিশ্বাস ওঠে। কারণ বিয়ের কেনাকাটা থেকে অতিথি আপ্যায়ন, সবেতেই জলের মতো বেরিয়ে যায় সঞ্চয়ের সবটুকু। তবে এবার রাজ্যবাসীর জন্য সুখবর শোনাল রাজ্য সরকার। পকেটে মাত্র ৫০০ টাকা থাকলেই বাঁধা পড়া যাবে সাতপাকে। আজ্ঞে হ্যাঁ, মাত্র ৫০০ টাকা খরচ করেই হবে বিয়ে। এবার থেকে বাংলায় চালু হতে চলেছে ‘দুয়ারে বিয়ে’।
কিন্তু ভাবছেন হয়তো কিভাবে ৫০০ টাকায় বিয়ে সম্ভব! কিছুটা সহজ করে দিই আপনার চিন্তাভাবনা। সামাজিক রীতিতে নয়, আইনিভাবে বিয়ে হবে এই পদ্ধতিতে। ইতিমধ্যে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় মোটামুটি চার পাঁচটি থানা এলাকার জন্য রয়েছে একটি করে সাব রেজিস্ট্রি অফিস। এইসব অফিসগুলিতে এতদিন মূলত জমি বাড়ির রেজিস্ট্রেশন হত। কিন্তু বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য সেই যেতে হত জেলা সদরে। তবে এবার বিয়ের বিষয়টি আরো সহজ করে দিচ্ছে রাজ্য। এবার বিয়ের রেজিস্ট্রেশনও হবে এই সাব রেজিস্ট্রি অফিসগুলি থেকেই। ফলে বিয়ে করতে আর কাউকে বাড়ি থেকে দূরে জেলা সদরে ছুটতে হবে না।
এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডিরেক্টরেট অফ রেজিস্ট্রেশন এবং স্ট্যাপ রেভিনিউ-এর এক আধিকারিক। তিনি বলেন, “এ রাজ্যে সাব রেজিস্ট্রাররা এক্স অফিসও ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করেন। ফলে তাঁরাও বিয়ের রেজিস্ট্রি করাতে পারেন। জেলার রেজিস্ট্রি অফিসে বা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে বিয়ের খরচ পড়ে মাত্র ৫০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে ১০০ টাকা লাগে নোটিস খরচ বাবদ এবং বাকি ৪০০ টাকা বিয়ের রেজিস্ট্রেশন খরচ।” এছাড়াও কেউ যদি নিজের বাড়িতে করতে চান এরকম বিয়েজ তাকে খরচ করতে হবে আরো ৪০০ টাকা। অর্থাৎ বাড়িতে বসে আইনি বিয়ে সারতে মোট ৯০০ টাকা খরচ হতে হবে।
প্রসঙ্গত, এতদিন অব্দি রাজ্যবাসীর সুবিধার্থে নানা জনহিতৈষী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। মানুষের বাড়িতে পরিষেবা পৌঁছে দিতে রূপায়িত হয়েছে নানা প্রকল্প। এতদিন অব্দি সরকারি সব প্রকল্প রাজ্যবাসীর দরজায় পৌঁছে দিতে চালু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’। এদিকে নানা প্রশাসনিক সহায়তার ক্ষেত্রে চালু হয়েছে ‘দুয়ারে পুলিশ’ প্রকল্প। আর এবার সাতপাকে বাঁধা পড়ার সুবিধার্থে চালু হল ‘দুয়ারে বিয়ে’। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই প্রকল্প এক মাইলফলক হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।