Smart Nandini: ভাইরাল ভিডিও ঘিরে ফের বিতর্কে নন্দিনী!
মহিলারা যখন রোজ প্রচন্ড গরমের মধ্যেও আগুনের তাপে রান্না করেন, তাঁদের সহানুভূতি দেখালেও অধিকাংশ পরিবারেই কোনো সদস্য একবারের জন্যও বলেন না রান্না থেকে ছুটি নেওয়ার কথা। অধিকাংশ পরিবারেই শোনা যায়, বাইরের খাবার নাকি সহ্য করতে পারেন না তাঁরা। ফলে মহিলারাও কিছু না বলে মাথায় তুলে নেন রান্নার গুরুভার। কিন্তু রান্নার সময় তাঁরা যদি চেঁচামেচি করেন রান্নাঘরে কোনো ভুল দেখে, তাহলে তাঁদেরই দু’কথা শুনিয়ে দেওয়া হয়। একই ঘটনা ঘটল ‘স্মার্ট হোটেলদিদি’ নন্দিনী গাঙ্গুলী (Nandini Ganguly)-র ক্ষেত্রে।
অফিসপাড়ায় নন্দিনীর ভাতের হোটেল সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বর্তমানে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। প্রায় সারাক্ষণ নন্দিনীর ভাতের হোটেলের সামনে ভ্লগারদের ভিড় লেগেই থাকে। একসময় বাইরে চাকরি করতেন নন্দিনী। কিন্তু করোনা অতিমারীর সময় তা চলে যায়। মা-বাবার কাছে ফিরে আসেন নন্দিনী। নন্দিনীর বাবাও কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। তিনিই হোটেলটি তৈরি করেন। শুরুর দিকে ভালোমত বিক্রি না হলেও নন্দিনী তাঁর বাবার সাথে হোটেলে কাজ শুরু করতেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে। এরপরেই প্রবেশ ঘটে সোশ্যাল মিডিয়ার। বর্তমানে নন্দিনীর হোটেল যথেষ্ট সফল তো বটেই, পাশাপাশি তিনি নিজেও খুলেছেন ইউটিউব চ্যানেল। কিন্তু হঠাৎই নন্দিনীর একটি ভিডিও নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে যাতে তাঁকে রীতিমত অশ্রাব্য ভাষা বলতে দেখা যাচ্ছে।
এই ভিডিওটি সম্পর্কে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লেখা হচ্ছে, নন্দিনী তাঁর বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। প্রকৃত ঘটনাটি বোঝা যাবে যদি ভিডিওটি খুঁটিয়ে দেখা হয়। নন্দিনীর হোটেলের এক কর্মচারী আগুনের উপর তেলের কড়াই চাপিয়ে দিয়েছিলেন। তেল গরম হয়ে তাতে আগুন ধরে যায়। দাউদাউ করে কড়াই জ্বলতে দেখে ছুটে আসেন নন্দিনী। সামনেই রয়েছে গ্যাসের সিলিন্ডার। আতঙ্কিত নন্দিনী রেগে গিয়ে চিৎকার করে বাবাকে বলেন, তিনি একটি গাধার বাচ্চাকে রেখেছেন। হোটেলের কর্মচারীকে যথেষ্ট তিরস্কার করার পাশাপাশি নন্দিনী বলেন, এই ব্যক্তির কারণেই বন্ধ হয়ে যাবে তাঁদের হোটেল। এরপর বাবাকে সরিয়ে নিজেই আগুন থেকে কড়াই নামান নন্দিনী।
নন্দিনীর বাবা কর্মচারীকে বলেন, তাঁর মেয়ের পছন্দমতো কাজ না হলেই খারাপ ভাষা বলেন নন্দিনী। বাবার কথা শুনতে পান নন্দিনী। হোটেলের কর্মচারীকে তিনি উদ্দেশ্য করে আবারও ‘জানোয়ারের বাচ্চা, জানোয়ার লোক’ বলে কেঁদে ফেলেন। তবে কাঁদতে কাঁদতেই নন্দিনী সকলকে খাবার পরিবেশন করতে থাকেন। সামলান ক্যাশ বাক্সের দায়িত্ব। এরপর নন্দিনী বাবাকে বলেন, তাঁর কপালে দুঃখ আছে। কারণ তিনি মেয়েকে সকলের সামনে অপমান করছেন। নন্দিনীর এই ভিডিও ভাইরাল হতেই, নেটিজেনদের একাংশ তাঁর অশ্রাব্য গালিগালাজের কারণে নন্দিনীকে কটাক্ষ করেন। অনেকে বলেন, তিনি নিজেই তাঁর বাবাকে অপমান করছেন। কিন্তু নন্দিনী তাঁর বাবাকে কটু কথা বলেননি। ভিডিওটি খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, হোটেলের কর্মচারীকে তিরস্কার করেছিলেন তিনি।
নন্দিনী কিন্ত অকারণে রেগে যাননি। দাউদাউ করে জ্বলা আগুন যদি গ্যাস সিলিন্ডার অবধি এগিয়ে যেত তাহলে সেদিন বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড ঘটত নন্দিনীর ভাতের হোটেলে। সেই সময় হোটেলের চারপাশে মানুষজনের ভিড় ছিল। টেবিলে ও রাস্তার ধারে অনেকেই হোটেল থেকে খাবার নিয়ে খাচ্ছিলেন। ফলে কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে প্রচুর মানুষের প্রাণসংশয় হতে পারত। এর জন্যও কিন্তু নন্দিনীকেই দায়ী করা হত। সুতরাং একটি ভিডিও খুঁটিয়ে না দেখে, কারণ না বুঝে কখনও কাউকে বিচার করা ঠিক নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার অর্থ ট্রোল এবং সমালোচনা নয়, সঠিক বিচার করাও বটে!