whatsapp channel

Sanjukta Banerjee: বাঙালির চিরকালের সেরা ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন কোথায়!

আকাশে পেঁজা তুলোর মত মেঘ ভাসমান। ভোরে ঝরে পড়ছে শিউলি। কুমোরটুলিতে মৃৎশিল্পীর ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে রূপ গ্রহণ করছে কায়া, মা আসছেন। মহালয়ার আর বেশি দেরি নেই। পিতৃপক্ষের শেষ , দেবীপক্ষের…

Avatar

আকাশে পেঁজা তুলোর মত মেঘ ভাসমান। ভোরে ঝরে পড়ছে শিউলি। কুমোরটুলিতে মৃৎশিল্পীর ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে রূপ গ্রহণ করছে কায়া, মা আসছেন। মহালয়ার আর বেশি দেরি নেই। পিতৃপক্ষের শেষ , দেবীপক্ষের শুরু। কিন্তু মহালয়ার অর্থ বাঙালির কাছে শুধুই তর্পণ অথবা পুজোর বাজার নয়। মহালয়ার সম্পূর্ণতা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র (Birendrakrishna Bhadra)। পেরিয়ে গিয়েছে শতক। তবু আজও মহালয়ার ভোরের পূর্ণতা ঘটে তাঁর কন্ঠে। পরবর্তীকালে বাঙালির ঘরে স্থান করে নেয় টেলিভিশন। সেই সময় এত চ্যানেলের রমরমা ছিল না। নায়িকারা নায়িকাই ছিলেন। তাঁদের দেবীত্ব প্রদান করা হয়নি। নব্বইয়ের দশকে দূরদর্শন তৈরি হত নির্ভেজাল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। প্রতি বছর দূরদর্শনে পরিবর্তিত হত মা দুর্গার মুখ। কিন্তু 1997 সাল বাঙালি মননে চিরন্তন হয়ে গেল। দূরদর্শনে সম্প্রচারিত ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র মুখের আদলে দর্শক খুঁজে পেলেন উমাকে।

সেই মেয়ের নাম ছিল সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sanjukta Banerjee)। শ্রী শিক্ষায়তন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। পাশাপাশি নাচ শিখতেন নৃত্যগুরু গোবিন্দন কুট্টি (Govindan Kutti)-র কাছে। একদিন হঠাৎই গুরুজি ডেকে পাঠালেন সংযুক্তাকে। নির্দেশ ছিল শাড়ি পরে আসার। গন্তব্যস্থলে পৌঁছে সংযুক্তা দেখেন, গুরুজী ছাড়াও রয়েছেন আরও কয়েকজন ব্যক্তি। এছাড়াও বেশ কয়েকজন মেয়ে রয়েছেন। মেয়েগুলি প্রায় তাঁরই বয়সী। সংযুক্তা প্রথমে কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। হঠাৎই গুরুজী উপস্থিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসা করেন, কাকে পছন্দ হয়েছে তাঁদের। সবাই এক বাক্যে সংযুক্তার নাম নেন। এরপর তাঁকে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছিল।

পরবর্তী দুই মাস ধরে চলে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ হয়ে ওঠার পরিশ্রম। ওয়ার্কশপ করতে হয়েছিল। রিহার্সালের সময় ফাইট মাস্টার সংযুক্তাকে শেখাতেন ত্রিশূল ধরা, চক্র ধরা, মহিষাসুরের সাথে লড়াই।

1997 সালের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র প্রযোজক ও পরিচালক ছিলেন শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্ত (Sharmishtha Dasgupta)। স্ক্রিপ্ট লিখেছিলেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী (Nrishinha prashad Bhaduri)। নির্দেশক ছিলেন তপন সিনহা (Tapan Sinha)-র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সনৎ মোহান্ত (Sanat Mohanta)। লাগাতার দুই-তিন সপ্তাহ ধরে চলেছিল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র শুটিং। সংযুক্তা বাঙালি দর্শকের মনে অঙ্কিত হয়ে রইলেন মা দুর্গা রূপে।

বর্তমানে সপরিবারে কানাডায় থাকেন সংযুক্তা। তিনি একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী। কানাডায় তাঁর নাচের স্কুল রয়েছে। পুজোর সময় ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান করতে ব্যস্ত থাকেন সংযুক্তা।

whatsapp logo