ভাগ্যশ্রী না সুমন কোন নামটা পছন্দ ভারতীয় দর্শকের। বলিউডে সর্বকালের সেরা দশটি প্রেমের সিনেমার যদি একটি তালিকা তৈরি করা হয় সেই তালিকায় অবশ্যই এই নামটি থাকবে। তা হল সুরজ বরজাতিয়া পরিচালিত ম্যয়নে পেয়ার কিয়া। ৯০ দশকের সেই রোম্যান্টিক সিনেমা। এই সিনেমা যেমন আজকের ভাইজান ওরফে সলমন খানের মাইলফক হয় অন্যদিকে একজনের এই ছবির পর বলিউড থেকে চিরতরে বিদায় নেন। তিনি আর কেউ নন এই সিনেমার অভিনেত্রী ভাগ্যশ্রী। তার অভিনীত ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শক মহলে এখনো সুমন হয়ে থেকে গেছেন অভিনেত্রী। এর পর তিনি বহু তামিল, কন্নড়, ভোজপুরি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু বলিউডে থাকেননি কিন্তু কেন।
‘ম্যয়নে পেয়ার কিয়া’ সিনেমা অভিনেত্রীর প্রথম সিনেমা নয়। ভাগ্যশ্রীর কেরিয়ার শুরু কৈশোর থেকেই। প্রথম অভিনয় অমল পালেকরের পরিচালনায় দূরদর্শনের ‘কচ্চি ধূপ’ সিরিয়ালে। ভাগ্যশ্রীর মধ্যে সুপ্ত প্রতিভাকে চিনতে পেরেছিলেন পরিচালক অমল পালেকরই। কচ্চি ধূপ’ শেষ হওয়ার পরেই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান। তারপরই প্রথম সিনেমাতে বাজিমাত করেন অভিনেত্রী। এরপরই ভাগ্যশ্রী বলিউডে ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’ নায়িক নায়িকাদের মধ্যে একজন হয়ে ওঠেন।
অভিনেত্রী সিনেমা জগতে না লেখানোর আগেই প্রেমে পড়েন। কেরিয়ার শুরুর আগেই ভাগ্যশ্রীর জীবনে এসেছিলেন ব্যবসায়ী হিমালয়। হিমালয় ও তাঁর পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমায় অভিনেত্রী যতই লাজুক থাকুক বাস্তব জীবনে ভাগ্যশ্রীই হিমালয়কে প্রপোজ করেন। প্রেম হলেও সেই প্রেম মানতে পারেনি অভিনেত্রীর রক্ষণশীল পরিবার। তাই পরিবারের অমতেই ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-র শ্যুটিং চলাকালীনই বিয়ে করে নেন এই হিমালয়- ভাগ্যশ্রী। এই বিয়েতে সিনেমার পুরো ইউনিট ও হিমালয়ের পরিবার উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম ছবিতে সাফল্যলাভে অনেক গুলি সিনেমাতে সুযোগ আসে কিন্তু সংসার ধর্ম পালন করতে আর অন্য কোনো অভিনেতার সাথে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়তে আপত্তি থাকার জেরে আর রাজি হননি অভিনয়ে। এমনকি, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগও হেলায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পরিচালকরা বার বার অনুরোধ করাতেও বরফ গলেনি। এরপর শর্ত দেন অভিনেত্রী সিনেমা যদি করেন তাহলে স্বামীর সাথে। অবশেষে অভিনেত্রীর কথায় রাজী হয়ে স্বামীর সঙ্গে জুটি বেঁধে ভাগ্যশ্রী তিনটি ছবি করেছিলেন। ‘কয়েদ মেঁ হ্যায়ঁ বুলবুল’, ‘ত্যাগী’ এবং ‘পায়েল’। কিন্তু সেই সময় একটা ছবিও হিট হয়নি সিনেজগতে। তাঁর ও হিমালয়ের জুটি পছন্দ করেননি ভারতীয় দর্শকরা। কিন্তু তাতেও সিদ্ধান্ত পাল্টাননি ভাগ্যশ্রী। নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। সংসার আর স্বামী সন্তানকে নিয়ে দিব্যি ছিলেন অভিনেত্রী।
ভাগ্যশ্রী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, অনেকে ভাবেন হিমালয় বুঝি তাকে অভিনয় জগতে ফিরতে দেয়নি। এটি সম্পূর্ণ ভুল তিনি নিজে থেকেই কাজ করেননি। অনেকে ভুল বুঝে তাঁর স্বামীকে নানান ভাবে গালিগালাজ করেছেন। অবশ্য ছেলে ও মেয়ে বড় হতে ফের বলিউডে বেশ কিছু বছর আগে কামব্যাক করেছেন ভাগ্যশ্রী। ‘লউট আও তৃষা’ একটি ধারাবাহিকে নতুন করে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। এ বার প্রভাসের ‘রাধে-শ্যাম’ এবং কঙ্গনা রানাউতের ‘থালাইভি’ সিনেমাতে দেখা যাবে ভাগ্যশ্রীকে।