whatsapp channel

বিয়ে করেও স্ত্রীর সম্মান পাননি জয়া প্রদা, অভিনেত্রীর করুন কাহিনী সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে

জয়া প্রদা (Jaya Prada)-এর বিরুদ্ধে সম্প্রতি জারি হয়েছে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। 2019 সালে সংঘটিত নির্বাচনের সময় আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। 2019 সালে বিজেপিতে যোগদান করেন জয়া।…

Avatar

Nilanjana Pande

Advertisements
Advertisements

জয়া প্রদা (Jaya Prada)-এর বিরুদ্ধে সম্প্রতি জারি হয়েছে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। 2019 সালে সংঘটিত নির্বাচনের সময় আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। 2019 সালে বিজেপিতে যোগদান করেন জয়া। ওই বছর নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী আজম খান (Azam Khan)-এর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শুধুই কি এক রাজনীতিবিদ ও অভিনেত্রী? ব্যক্তি জয়ার জীবন তাঁর অভিনীত ফিল্মগুলির মতোই ঘটনাবহুল।

Advertisements

Advertisements

প্রকৃত নাম ললিতারানি (Lalitarani)। জয়ার বাবা কৃষ্ণা রাও (Krishna Rao) ছিলেন প্রযোজক। মা নীলাবনী (Neelavani) ছিলেন গৃহবধূ। শৈশবে তেলেগু মাধ্যম স্কুলে ভর্তির পাশাপাশি তাঁকে নাচের স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল। মূলতঃ নাচের মাধ্যমেই বিনোদন জগতে আত্মপ্রকাশ তাঁর। জয়ার মা-বাবার হয়তো সুপ্ত ইচ্ছা ছিল মেয়েকে অভিনেত্রী হিসাবে দেখার। তাই হয়তো নাচের তালিম দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা। স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে নাচের সময় এক পরিচালকের চোখে পড়ে যান জয়া। ওই পরিচালক তাঁকে ‘ভূমি কোসাম’ নামে একটি তেলেগু ফিল্মে তিন মিনিটের নাচের দৃশ্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জয়া প্রথমে চাইছিলেন না ফিল্মে নাচের দৃশ্য করতে। কিন্তু তাঁর পরিবারের উৎসাহে তিনি রাজি হন। প্রথম পারিশ্রমিক দশ টাকা হলেও 1974 সালে ‘ভূমি কোসাম’ হিট হয় এই নাচের দৃশ্যের জন্য। পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়ে জয়ার সৌন্দর্যের খ্যাতি। একসময় তেলেগু ফিল্মের জগৎ ছাড়িয়ে বলিউডে প্রবেশ করেন জয়া। সুপারস্টার হয়ে ওঠেন তিনি।

Advertisements

Advertisements

দক্ষিণী মেয়ে হওয়ার কারণে প্রথমদিকে হিন্দি বলতে অসুবিধা হলেও পরে তা রপ্ত করে নেন জয়া। তাঁর সৌন্দর্যের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল সারা ভারতে। কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) -এর মতে, জয়া ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা। বাংলা ফিল্মে অভিনয় করেছেন জয়া। সত্যজিৎ-এর সাথে কাজ করার কথা থাকলেও পরিচালকের অসুস্থতা ও পরবর্তীকালে প্রয়াণের ফলে সেই স্বপ্ন অধরা থেকে যায়।

কিন্তু জয়ার সৌন্দর্যই হয়তো তাঁর কাছে কাল হয়েছিল। অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি জয়াকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন অমর সিং (Amar Singh)। তাঁকে ‘গডফাদার’ মানতেন জয়া। কিন্তু একসময় এই পবিত্র সম্পর্ককে অপবিত্র করার চেষ্টা হয়েছিল।

সেই সময় অমর সিং-এর ডায়লিসিস চলছিল। হঠাৎই জয়ার সাথে তাঁর কিছু আপত্তিকর ছবি ফাঁস হয়ে যায়। বিনোদন জগতের পাশাপাশি রাজনৈতিক জগতও জয়া ও অমরের সম্পর্ক নিয়ে আঙুল তুলেছিল। মেনে নিতে পারেননি জয়া। আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন তিনি। মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও সেই সময় তাঁর পাশে দাঁড়ান অমর। একই সময় তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন বহুদিনের পুরানো বন্ধু শ্রীকান্ত নাহাটা (Shrikant Nahata)। তাঁদের চেষ্টাতেই এই ছবিগুলির রহস্য জানা যায়। ছবিগুলি আসলে ছিল মর্ফড করা। জয়া ও অমরকে কলুষিত করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন তাঁর প্রথম স্বামী। তিনিও ছিলেন দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিবিদ।

প্রকৃতপক্ষে, জয়া মুখে ‘ইমোশনাল সাপোর্ট’-এর কথা বললেও মনে মনে একপ্রকার ভয় পেয়েই বিয়ে করে নেন শ্রীকান্তকে। অথচ শ্রীকান্ত তখন বিবাহিত ও সন্তানের পিতা। ফলে জয়ার এই বিয়ে বৈধতা পায়নি। কিন্তু শ্রীকান্তকে নৈতিক কারণেই জয়ার পাশে থাকতে হয়েছিল। কিন্তু এই বিয়ের পর জয়ার প্রাক্তন স্বামী দাবি করেন, জয়ার সাথে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। এবার সরব হন জয়া। জানা যায়, ওই ব্যক্তি প্রায় একরকম ভয় দেখিয়েই বিয়ে করেছিলেন রাজনীতিতে নবাগতা জয়াকে। কিন্তু তাঁকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে শুরু করেন তিনি। ওই রাজনীতিবিদের বাড়িতে প্রায়ই অতিথি আসতেন। তাঁদের শয্যাসঙ্গিনী হতে বাধ্য করা হত জয়াকে। এমনকি লাগাতার তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হত। অত্যাচার ও নিত্যদিন ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছিলেন জয়া।

জয়ার জীবনের এই গোপন দিক জানতেন শ্রীকান্ত। লোকলজ্জার ভয়েই বহুদিন চুপ করে থাকার পর এই ঘটনা সামনে এনেছিলেন জয়া। একবিংশ শতকের গোড়ার দিকে মিডিয়া ছয়লাপ হয়ে গিয়েছিল জয়ার প্রথম স্বামী সংক্রান্ত খবরে। ওই ব্যক্তি জয়াকে তাঁর স্ত্রী হিসাবে দাবি করে নিজেই নিজের জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু অমর সিং ও শ্রীকান্ত নাহাটার প্রভাবে জয়ার জীবন থেকে সরতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

প্রকৃত অর্থে জয়া নিরাপত্তার কারণেই বিয়ে করেছিলেন শ্রীকান্তকে। কিন্তু সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি তিনি। পরবর্তীকালে নিজের বোনের পুত্রসন্তান সিধু (Siddhu)-কে দত্তক নেন জয়া। তাঁকে নিজের ছেলের মতোই বড় করে তুলেছেন তিনি।

জয়ার প্রথম বিয়ের ঘটনা যদি তাঁর জীবনে না ঘটত, তাহলে হয়তো তড়িঘড়ি শ্রীকান্তকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিতেন না তিনি। হয়তো অন্য কাউকে বিয়ে করতেন জয়া। বৈধতা পেত তাঁর সেই বিয়ে। সন্তানের জন্ম দিতেন তিনি। কিন্তু জয়ার প্রথম বিয়ে তাঁর জীবনের হিসাবকে এলোমেলো করে দিয়েছে যা আজীবন থেকে যাবে তাঁর সাথেই।

whatsapp logo
Advertisements