whatsapp channel
GossipHoop Plus

দারিদ্রতার মধ্যেই বড় হয়ে ওঠা, কিভাবে ভারতের ‘সুর সম্রাজ্ঞী’ হলেন লতা মঙ্গেশকার!

‘সুর সম্রাজ্ঞী’ বলি বা ‘কোকিলকণ্ঠী’ সবই ইঙ্গিত দেয় লতা মঙ্গেশকরকে। যার মিষ্টি মধুর কন্ঠী সুরে বুঁদ আসমুদ্র হিমাচল। আজ তাঁর জীবনের পাতা উল্টে দেখব আমরা। আপনি কি জানেন লতা একমাত্র জীবিত ব্যক্তিত্ব যার নামে পুরস্কার দেওয়া হয়? কি মাথাতেই আসেনি তাই তো?

১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লতা। জন্মসূত্রে তাঁর নাম ছিল হেমা। তাঁর বাবা ছিলেন একজন নাট্যকার। পরবর্তীতে তিনিই মেয়ের নাম ‘হেমা’ র পরিবর্তে রাখেন ‘লতা’ “ভাব বন্ধন” নাটকে “লতিকার” চরিত্রে প্রভাবিত হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেন দীননাথ মঙ্গেশকর।

১৯৪২ সালে বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, ঠিক সেই সময় সংসারের হাল ধরেন ‘লতা’। সেদিনের লতা মঙ্গেশকর প্রথম গান গেয়েছিলেন মারাঠি ছবি ‘কিতি হাসাল’(১৯৪২)। ছবিটি সাফল্য পায়নি, এমনকি ‘নাচু ইয়া গাদে, খেলু সারি মানি হাউস ভারি’ কথার গানটি বাদ দেওয়া হয়। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই সংসারের হাল ধরেছিলেন সেদিনের ‘লতা’। মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্রথম রেডিও শুনলেন তিনি। কিনেওছিলেন রেডিও।

এরপর মাত্র ১৯ বছর বয়সে সঙ্গীত পরিচালক গুলাম হায়দার তাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন শশধর মুখার্জীর সাথে। সেইসময় তিনি শহীদ (১৯৪৮) চলচ্চিত্রটি নিয়ে কাজ করছেন। সেদিন তিনি লতাজির গান শুনে বলেছিলেন, “বেশি চিকন গলা, এমন কন্ঠ প্লে-ব্যাকের জন্য নয়”। তখন সঙ্গীত পরিচালক গুলাম হায়দার বলেছিলেন, “একদিন পরিচালকেরা এই মেয়ের পায়ে পড়ে তাকে তাদের চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার জন্য ভিক্ষা করবে।” কে জানতো যে কথাটি এইভাবে সত্য হয়ে উঠবে অক্ষরে অক্ষরে। ১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করে।

এই লতাজির জীবনের প্রথম উপার্জন কত ছিল জানেন? মাত্র ২৫ টাকা। যদিও রা অনেক আগের ঘটনা। তখন ২৫ টাকার অনেক মূল্য থাকলেও তাঁর প্রতিভা অনুযায়ী খুবই সামান্য। যাইহোক, ‘মজবুর’ (১৯৪৮) ছবিতে প্রথম বড় সুযোগ পান লতা মঙ্গেশকর। এই ছবিতে ‘দিল মেরা তোড়া’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক হিট গান দিয়ে যান তিনি। হয়ে উঠলেন এই উপমহাদেশের ‘সুর সম্রাজ্ঞী’। ১৯৭৪ সালে লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে লতা নিজের প্রথম প্রোগ্রাম করছিলেন। এর আগে (১৯৪৯) সালে ‘মহল’ ছবির ‘আয়েগা আনেওয়ালা’ গান গেয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পান। এরপর ১৯৭২ সালে ‘পরিচয়’ ছবির ‘বীতি না বিতাই’ এর জন্য সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।

বর্তমানে তিনি যে কতটা সফল গায়িকা তা আবালবৃদ্ধবনিতা জানে। ১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান লতা মঙ্গেশকর। ২০০১ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্নে ভূষিত করা হয়। ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাবে ভূষিত করে। এছাড়াও পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণ পুরস্কার পান তিনি। হিন্দি সহ ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষাতে ও বিদেশি ভাষায় গান গাওয়ার একমাত্র রেকর্ডটি এখনও তারই ঝুলিতে রয়েছে।

whatsapp logo