whatsapp channel
Hoop PlusTollywood

সত্যিই কি টেট কেলেঙ্কারিতে যুক্ত জনপ্রিয় টলি অভিনেতা!

18 ই ফেব্রুয়ারি সকাল হতে না হতেই খবরের শিরোনাম “টেট দূর্নীতি কান্ডে গ্রেফতার টলি অভিনেতা”। সেলিব্রিটি হলেও সকলেই মানুষ। ফলে স্টুডিওয় গসিপ চূড়ান্ত পর্যায়ে। কিন্তু যিনি গ্রেফতার হয়েছেন, তিনি কি আদৌ টলি-অভিনেতা বা শিল্পী? একটি ফিল্ম প্রযোজনা করলে বা অভিনেতা হিসাবে কাজ করলে কতদূর ‘অভিনেতা’ বা ‘শিল্পী’-র তকমা পাওয়া যায়, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অবশ্যই উচিত। যাঁকে নিয়ে সরগরম স্টুডিওপাড়া, তাঁর নাম শেখ শাহিদ ইমাম (Shaikh Shahid Imam) যাঁকে অনেকে চেনেন ‘শুভম’ নামে অথবা ‘মহারাজ’ নামে। আদতে তিনি হুগলি জেলার প্রাক্তন যুব তৃণমূল সম্পাদক। কিন্তু শিরোনামের গুণে বর্তমানে শাহিদ ইমাম পেয়ে গিয়েছেন শাহিদ কাপুর (Shahid Kapoor)-এর জনপ্রিয়তা।

হুগলি জেলার আরামবাগের বাসিন্দা শাহিদ ইমামের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। আরামবাগ পুরসভার বাঁধপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহিদের বিলাসবহুল একটি বাড়ি রয়েছে। অপর একটি বাড়ি নির্মীয়মাণ। তবে শাহিদের প্রতিবেশী শম্ভুনাথ অধিকারী (Shambhunath Adhikari) জানালেন, ওই যুবক কখনও কারও সাথে খারাপ আচরণ করতেন না। এমনকি বন্যাকবলিত বাঁধপাড়ার সাহায্যের জন্য একাধিক বার এগিয়ে এসেছেন তিনি। বর্তমানে শাহিদের বাড়ি তালা দেওয়া থাকলেও ওই বাড়িতে তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থাকতেন। জানা গিয়েছে, ‘শ্লীলতাহানি’, ‘আমার চ্যালেঞ্জ’, ‘বিষাক্ত মানুষ’-এর মতো কয়েকটি বি গ্রেড বাংলা ফিল্মে অভিনয় করেছেন শাহিদ। তাঁর একটি ফিল্মে নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন ঋত্বিকা (Rittika)। ‘সোনা বন্ধু’ নামে একটি মিউজিক ভিডিওয় অভিনয় করেছেন শাহিদ। এটিও একটি বি গ্রেড মিউজিক ভিডিও। তবে বলিউডে রাখি সাওয়ান্ত (Rakhi Sawant)-এর সাথেও কাজ করেছেন শাহিদ। প্রশ্ন উঠছে, নিয়োগ দূর্নীতির টাকা কি বলিউডেও ছড়িয়েছে!

তবে শাহিদ কোন বাংলা ফিল্মগুলির প্রযোজক ছিলেন তা এখনও সুস্পষ্ট নয়। এই তথ্য সামনে আসার পরেই বিরোধীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, চাকরি বিক্রির টাকাতেই কি ফিল্ম প্রযোজনা করেছেন শাহিদ! সদুত্তর মেলেনি। তবে শুক্রবার, 17 ই ফেব্রুয়ারি, সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শাহিদ। ইতিমধ্যেই তাঁকে তিন দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁর পিতা হাসান ইমাম (Hasan Imam) পেশায় স্কুল শিক্ষক।

2001 সালে আরামবাগ বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন শাহিদ। পরে জাতীয় কংগ্রেসের তরফে লোকসভার প্রার্থী হন তিনি। তবে 2017 সালে হুগলি জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদকের পদে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এছাড়াও হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন শাহিদ। স্কুলে আসতেন ফরচুনা, বিএমডব্লিউ-এর মতো দামি গাড়ি চড়ে। ইতিমধ্যেই শাহিদের গ্রেফতারি নিয়ে হুগলির রাজনীতি জুড়ে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। আরামবাগ তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি পলাশ রাই (Palash Rai) বলেছেন, আইন আইনের পথে চলবে। তবে এটি বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে তিনি মনে করেন। অপরদিকে রাজ্য বিজেপির সম্পাদক ও পুড়শুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ (Biman Ghosh) জানিয়েছেন, এটি কোনো রাজনৈতিক চক্রান্ত নয়। হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত চলছে।

তবে শাহিদ ইমাম কয়েকটি ফিল্মে অভিনয় ও প্রযোজনা করলেই তাঁকে ‘টলি অভিনেতা’ বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় না। এই ধরনের অযথা শিরোনাম বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে কলুষিত করার প্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by The Probe (@probeindia)

whatsapp logo