Tourism: দীঘা-পুরী আর নয়, হাতে দু-দিনের ছুটি নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন কাঁকড়াঝোড় থেকে
হালকা হালকা শীতের আমেজ গায়ে মেখে ঘুরে আসতে পারেন অসাধারণ একটি জায়গা থেকে, কংক্রিটের জঙ্গলে থাকতে থাকতে যদি মন বিষিয়ে ওঠে, আর মন যদি একবার বলে ওঠে যে কোথাও বেড়াতে গেলে মন ভালো হয়ে যায়, তাহলে দু তিন দিনের ছুটিতে আপনি ঘুরে আসতেই পারেন অসাধারণ একটা জায়গা থেকে। যে জায়গাতে গেলে মন বলবে যে আর ফিরে আসতে ইচ্ছা করছে না, তবে প্রখর গরম পড়ে গেলে জায়গাটা কিন্তু বেশ কষ্টকর, গরম পড়ার আগেই কিংবা গরম পরার পরে অথবা বসন্তের দোলের উৎসব পালন করতে চলে যেতেই পারেন এই অসাধারণ এই জায়গাটিতে।
যে জায়গাটির নাম এতক্ষণ ধরে করছি জায়গাটি হল কাঁকড়াঝোড়। বাংলা, ঝাড়খন্ড সীমান্তে অবস্থিত অসাধারণ একটি বেড়াতে যাওয়া জায়গা। ‘কাঁকড়া’ কথাটির অর্থ হলো ‘পাহাড়’ আর ‘জোড়’ কথাটির অর্থ হলো ‘জঙ্গল’। পাহাড় জঙ্গলের অসাধারণ মেলবন্ধন খুঁজে পাবেন জায়গাটিতে বেড়াতে গেলে। পথে পড়বে সুন্দর গ্রাম চাকাডোবা, কাশমোর, কাশীডাঙা, ছুরিমারা, ময়ূরঝরনা। ইচ্ছা করলেই কাছে, পিঠে এই গ্রামগুলো পায়ে হেঁটে ঘুরে আসতে পারেন। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য গ্রামের মানুষের সাদামাটা জীবন দেখলে মন ভরে যাবে, প্রাণ খুলে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারবেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ চারিদিকে।
এর সীমানায় আছে মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া আর অন্যদিকে পড়ছে ঝাড়খন্ড। ওখান থেকে খুব কাছেই আছে দলমা পাহাড় ইচ্ছা করলে সেখান থেকেও একটা ঘুরে আসতে পারেন। মাঝে মাঝে দল বা পাহাড় থেকে দামাল হাতি শুঁড় দুলিয়ে নেমে আসে, কিন্তু ভাগ্য ভালো থাকলে তাদের কেউ একবার দেখে ফেলতে পারবেন।
কাঁকড়াঝোড় পাশেই আছে ভৈরব পাহাড়, আর তার পাশ দিয়েই বয়ে গেছে পাহাড়ি নদী খরা। পাহাড়ি নদীর পাড় দিয়ে যদি একবার হেঁটে যান, তাহলে দেখতে পাবেন প্রায় ২৮ টি গ্রাম যেখানে প্রায় একশোর বেশি পরিবার বাস করেন, যারা মূলত মুন্ডা, সাঁওতাল উপজাতির মানুষ। এখানকার মানুষ মূলত কেন্দুপাতা দিয়ে বিড়ি তৈরি করে, এইভাবেই তাদের জীবিকা হয়, এছাড়াও জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া যায় ওষুধ যথা অনন্তমূল, শতমূল, কালমেঘ এই সব বিক্রি করেও তারা দিনযাপন করেন। এছাড়া এখানকার সাপ্তাহিক হাতে এখানকার মানুষরা সবাই খাতির দড়ি তৈরি করে বিক্রিও করেন।
কাঁকড়াঝোড়ার পশ্চিমেই আছে ভৈরবী নদী। ইচ্ছা করলে এই নদীটিও একবার দেখে আসতে পারেন। এছাড়াও চোখে পড়বে মাকুলি নদী, গিয়ে পড়েছে সুবর্ণরেখার জলে, আর পথে যখন মাকুলি ঝরনা দেখবেন দেখতে কিন্তু বেশ ভালো লাগবে। জঙ্গল থেকে কিছুটা গিয়ে কাশীদা তারপরে কাছেই আছে ঘাটশিলা, তাহলে বুঝতেই পারছেন একটা জায়গায় বেড়াতে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন আশেপাশের অনেকগুলি ডেস্টিনেশন, আর দেরি না করে ঘুরে আসুন অসাধারণ এই জায়গাটি থেকে।