Hoop Special

Tourism: আর বেশি দেরি নেই, গরম পড়ার আগে চটপট ঘুরে আসুন পুরুলিয়ার এই জায়গাটি থেকে

লাল মাটির রাস্তা ধরে যদি নীল জলাশয় দেখতে চান বা যদি এইরকম একটা পরিবেশে দু-তিন দিন কাটিয়ে আসতে চান, তাহলে আপনাকে খুব বেশি দূর যেতে হবে না, কাছে পুরুলিয়াতে রয়েছে এমন অসাধারণ একটি জায়গা। এই জায়গাটি অসাধারণ সৌন্দর্যে ভরা ইতিমধ্যেই হয়তো অনেকেই বেড়াতে গেছেন, নাম বললে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন জায়গাটির নাম হলো বড়ন্তি লেক। রামচন্দ্র সেচ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত এই লেক থেকে সকলে বড়ন্তি লেক নামে চেনে।

আসানসোল কিম্বা মুড়ারি স্টেশনে নেমে পৌঁছে যেতে পারেন, সহজে বড়ন্তি গ্রামে আর সেখানেই দেখতে পাবেন বড়ন্তি লেক। বড়ন্তি খুব একটা উঁচু পাহাড়ের পর্যায়ে পড়ে না। হেঁটে উঠতে সময় লাগবে খুব বেশি হলে মিনিট পঁয়তাল্লিশ। তবে গাছপালার ঘন জঙ্গলে হাঁটাটার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এক অন্য রোমাঞ্চ। ওখান থেকে খুব একটা দূরে থাকার জায়গা নয় তাই হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেলে কাছাকাছি একটু জিরিয়ে নিতে পারেন, এই জায়গাটির নাম রামজীবনপুর। তবে বড়ন্তি লেকের নাম শুনে শুনে মানুষ হয়তো আসল নামে ডাকতে ভুলেই গেছে।

পুরুলিয়াতে বেশ গরম পরে তাই গরমকাল পড়ার আগে অর্থাৎ বসন্তের এই সময়ে তাড়াতাড়ি ব্যাগগুছিয়ে রেডি হয়ে পরিবারের সঙ্গে ঘুরে আসুন অসাধারণ এই জায়গাটিতে, একবার গেলে মন বলবে বারবার চলে যেতে। এখন গেলে এক্সট্রা পাওনা শাল-পিয়াল এর জঙ্গলে লাল পলাশ ফুল। পুরুলিয়ার শুকনো মাটিতে এমন লাল লাল ফুলের গাছ দেখতে বেশ ভালো লাগবে।

টুসু, ভাদু উৎসবে এই সব জায়গা যেন সেজে ওঠে, তাই শুধুমাত্র লেক নয় আশেপাশে আদিবাসী গ্রাম পরিদর্শন করে আসতে পারেন। সাধারণ মানুষের জীবনের কেমন কর্মকাণ্ড বা জীবন জীবিকা দেখে আসতে পারেন। বড়ন্তি গ্রামের পাশেই রয়েছে বড়ন্তি নদী, আর এই নদী লেকে গিয়ে মিশেছে সবমিলিয়ে নদীর ধারে বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিতে পারেন আড্ডা মারতে পারেন।

তবে বড়ন্তি গিয়ে মানজুড়ি দেখে আসতে ভুলবেন না, কিন্তু এটিকে আলপনা গ্রাম বললে ভুল হয় না, এখানে সহজে গাড়ি ভাড়া করতে পারা যায় এত কাছে এসে এত সুন্দর ছবির মত সুন্দর গ্রাম দেখবেন না তা তো হতেই পারে না।এই গ্রামের পরেই আছে পৌরলি পাহাড় থেকে মুড়াডি হয়ে গোল করে লেক বরাবর ঘুরে আসতে পারেন।

যারা ঈশ্বর ভক্ত তারা এখান থেকেই ঘুরে আসতে পারেন খেলাই চন্ডী মন্দিরে, এখানে মন্দিরের মায়ের মূর্তির রূপ দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয়। এখান থেকে আরেকটি জায়গায় ঘুরে আসতে পারেন জায়গাটির নাম দন্ডহি জায়গাটি কিন্তু সাঁওতালদের গ্রাম নয়, এখানে গেলে আপনার একটা বিশেষ মনের ইচ্ছাপূর্ণ হতে পারে, আপনি যদি সবুজায়নের পক্ষ বা আপনি যদি গাছপালা ভালবাসেন, তাহলে এখানে গেলে আপনি গাছ কিনে নিয়ে আসতে পারেন, এখানে থেকে বহু মানুষ গাছ কিনে কলকাতায় নিয়ে আসেন।

আর যদি অনেক দিনের ছুটিতে যান, তাহলে এখান থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে জয়চন্ডী, অযোধ্যা, বিহারীনাথ সমস্ত পাহাড় ঘুরে পুরো পুরুলিয়াকে একেবারে চষে ফেলতে পারেন, আর তো সময় নেই, কারণ গরমকাল পড়ে গেলে পুরুলিয়া দিকে আর সত্যিই যাওয়া যায় না, বীভৎস গরম পড়ে। বসন্তে হালকা ঠান্ডার আমেজ গায়ে মেখে ঘুরে আসুন অসাধারণ থেকে।

সুন্দর জায়গায় কিভাবে যাবেন জেনে নিন কলকাতা থেকে এই জায়গাটির দূরত্ব ২৬৩ কিলোমিটার। হাওড়া শিয়ালদহ বা কোলকাতা স্টেশন থেকে যেকোন ভাবে চলে যাবেন আসানসোল সেখান থেকে আদ্রা লাইনে তিনটি স্টেশন পরেই আছে মুরাডি। মুরাডি থেকে সহজেই চলে যাওয়া যাবে বড়ন্তিতে। তবে পথেই পড়বে ছিন্নমস্তার মন্দির, এই মন্দির ঘুরে আসতে ভুলে যাবেন না কিন্তু।