Tourism: এক ছুট্টে বেড়িয়ে আসুন পাহাড়, নদী, জঙ্গলে ঘেরা সাতকোশিয়া থেকে
কংক্রিটের জঙ্গলে থাকতে থাকতে আপনার কি আর সত্যিই ভালো লাগছে না, তাহলে চলে যেতে পারেন উড়িষ্যার অসাধারণ জায়গা সাতকোশিয়া। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এখানে যাওয়ার জন্য একেবারেই উপযুক্ত জায়গা। তাহলে বুঝতেই পারছেন সামনের প্রতিটা মাসই রয়েছে আপনার জন্য উপযুক্ত সাতকোশিয়া ভ্রমণের। নদী, বন, পাহাড় এখানে যেন মিলেমিশে একেবারে একাকার হয়ে গেছে। সাতকোশিয়া কিন্তু কোন ছোট জায়গা নয় সাত ক্রোশ বা ১৪ মাইল এলাকা জুড়ে অবস্থিত অসাধারণ এই ভ্রমণের স্থান। যখন মনে হবে দূরে কোথাও যাওয়ার জন্য ছুটি পাচ্ছেন না, তখন তিন চার দিনের জন্য চটজলদি ঘুরে আসতে পারেন অসাধারণ এই জায়গা থেকে।
পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে, এখানকার উন্নয়ন দপ্তর আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। পূর্বঘাট পর্বতমালা চিরে বয়ে চলেছে কুলুকুলু শব্দে মহানদী। মহানদীর চর থেকে শুরু করে পাহাড়ের গা পর্যন্ত ধাপে ধাপে আপনি পেয়ে যাবেন এসি কটেজ এবং তাঁবু। যে যেখানে থাকতে ভালোবাসবেন সেখানেই থাকতে পারেন। সাতকোশিয়ার সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশনটি হল অঙ্গুল। এই অঙ্গুল থেকে গাড়ি করে পৌঁছে যেতে পারেন সাতকোশিয়া। হাওড়া থেকে শনিবার রাত্রিবেলা অঙ্গুল যাওয়ার একটি মাত্রই ট্রেন ছাড়ে।
এখানে পৌঁছে কাছে পিঠে ঘুরে দেখতে পারেন কুমীর প্রকল্প। তবে এখানে যেতে গেলে আপনাকে গাড়ি ভাড়া করতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি নিজেরা গাড়ি নিয়ে যান তাহলে তো কোন কথাই নেই, কিন্তু যদি তা না হয় তাহলে ওখানে গিয়ে দু-তিন দিনের জন্য একটি গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারেন। নদীর ধার দিয়ে পৌঁছে যাবেন সেই অসাধারণ জায়গায়। কুমিরের সাথে সাথে বেশ কয়েকটা কচ্ছপও দেখতে পারেন। মহানদীতে নেমে স্নানও করতে পারেন, তবে কিন্তু খুব সাবধান এখানে প্রচুর পরিমাণে কুমির থাকে।
সাতকোশিয়ায় থাকার বা ঘোরার জায়গা প্রধানত চারটে- টিকরপাড়া, ছোটকেই, পুরুনাকোটে আর লবঙ্গী । এদের মধ্যে টিকরপাড়াতে একদিন অবশ্যই থাকা উচিৎ। সাতকোশিয়া বেড়াতে গেলে লবঙ্গী যেতে একেবারেই ভুলবেন না। দুদিকে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে মাঝখানে রাস্তা দিয়ে চলে যেতে আপনার মন তো লাগবে না। আজই মধ্যে গাড়ি থামিয়ে প্রকৃতির মাঝে ক্যামেরা নিয়ে কয়েকটা ফটো তুলতে একেবারে ভুলবেন না যেন। যারা একাকীত্ব পছন্দ করেন, তাদের এই জায়গা গুলি বেশ ভালো লাগবে।
সাতকোশিয়া বেড়াতে গেলে মহানদীর বোটিং করতে কিন্তু একবারই ভুলবেন না। ৩০ মিনিটের বোটিং আপনাকে সারা জীবনের জন্য অসাধারণ স্মৃতি, চারিদিকে পাহাড় আর মহানদীর শান্ত জল আপনার মন প্রাণ ভরিয়ে দেবে। মহানদীর চরে রাত নামতেই নিস্তব্ধতা নেমে আসে। চাঁদের আলো মহানদীর উপরে যেন উপুড় হয়ে পড়েছে। মনে হবে সারা রাত বসে বসে এমন অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করব। কিন্তু তা তো সম্ভব না ফিরে আসতেই হবে, তিন চার দিনের জন্য বেড়াতে বেরিয়ে সংগ্রহ করে আসুন অনেক সুখ স্মৃতি।