‘আগলে জনম মোহে বিটিয়া না কিযো’ , কন্যাসন্তানদের আজও এই আকুতি। একবিংশ শতকের সমাজে এখনও কন্যাসন্তানের জন্ম চান না বহু তথাকথিত আধুনিক পরিবার। ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর পুজা হলেও কন্যার সঠিক কদর এখনও বোঝেনি সমাজ। এই কারণেই উরফি জাভেদ (Urfi Javed)-এর শৈশব ছিল যথেষ্ট বিপর্যস্ত। সম্প্রতি একটি পডকাস্টে উরফি নিজের শৈশবের কথা তুলে ধরেছেন। লখনউ-এর অত্যন্ত রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারের কন্যা উরফি। পরিবারে ছিল না আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য। এমনকি বাড়ির মহিলাদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত আবৃত করে বাইরে বেরোতে হত।
উরফি জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল। স্বামী ছিলেন অত্যন্ত গোঁড়া মনোভাব সম্পন্ন। পরপর পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন উরফির মা। শৈশব থেকেই কন্যাসন্তান হওয়ার কারণে উরফিকে পছন্দ করতেন না তাঁর বাবা। সংসারে প্রায়ই লেগে থাকত অশান্তি। উরফিকে প্রচন্ড মারধোর করতেন তাঁর বাবা। যতক্ষণ না পর্যন্ত উরফি অজ্ঞান হয়ে যেতেন, ততক্ষণ অবধি চলত তাঁর উপর অকথ্য নির্যাতন। আর সহ্য করতে না পেরে মাঝপথে পড়শোনা ছেড়ে নিজের বাড়ি থেকে পালান উরফি। তাঁর লক্ষ্য ছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানো। প্রথমে দিল্লি ও পরে মুম্বইয়ে কাজের খোঁজে আসেন উরফি। একের পর এক অডিশন দিতে শুরু করেন তিনি।
ধীরে ধীরে হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় ও রিয়েলিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করা শুরু করেন উরফি। ‘বিগ বস ওটিটি’-র মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। অদ্ভুতদর্শন পোশাকের কারণে হন গুগলের মোস্ট সার্চড এশিয়ান উওম্যান। একসময় উরফিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা। ফলে নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করে নজর কাড়েন তিনি। আবু জানি সন্দীপ খোসলা (Abu Jani Sandip Khosla), আনাইতা শ্রফ আদাজানিয়া (Anaita Shroff Adajania)-র কাছে বর্তমানে উরফি অত্যন্ত পছন্দের মডেল। একসময় উরফি মনে করতেন, তিনি পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্য নন। তাঁর মধ্যে জন্ম হয়েছিল নেতিবাচক মনোভাবের।
কখনও সখনও উরফির মনে হয়, মহিলা হিসাবে তিনি হয়তো সমাজ ও নতুন প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা বহ করছেন। এই কারণেই হয়তো তাঁকে ট্রোল করা হয়। কিন্তু তবু তিনি মনে করেন, তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা পরিবেশ কলুষিত করতে পারবে না।
View this post on Instagram