লাগবে না এক টাকাও, বিনা টিকিটেই চড়তে পারবেন ভারতীয় রেলের এই ট্রেনে!
‘নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান’। কবির ভাষায় ভারত বৈচিত্রের দেশ। এক একটি রাজ্যের সীমানার বাইরে পা রাখলেই এই বৈচিত্রের স্পষ্ট রূপ দেখা যায়। আর ভারতের এই বৈচিত্রকে এক সূত্রে বাঁধার অন্যতম মাধ্যম ভারতীয় রেল (Indian Railway), যা দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিমকে একসঙ্গে বেঁধে রেখেছে। দেশের মানুষদের যাতায়াতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হওয়ার পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্যও ভারতীয় রেল। দীর্ঘ ১,১৫,০০০ কিমি জুড়ে বিস্তৃত ভারতীয় রেল সারা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম রেলওয়ে নেটওয়ার্ক।
দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজ্য, শহর, গ্রামের উপর দিয়ে বিছানো হয়েছে সারি সারি রেল ট্র্যাক। ভারতীয় রেল দেশবাসীর কাছে পরিবহনের অন্যতম সুলভ মাধ্যম। কারণ বেশিরভাগ ট্রেনের টিকিটেরই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে মধ্যবিত্তের সাধ্যের কথা মাথায় রেখেই। অনেক মানুষ একসঙ্গে যাতায়াত করতে পারে ট্রেনে। পাশাপাশি ট্রেন যাত্রা যেমন আরামদায়ক তেমনি অনেকের কাছেই স্মৃতিবিজড়িত। তবে ভারতীয় রেলে শুধু যাত্রীবাহী নয়, পণ্যবাহী ট্রেনও চলাচল করে। কিন্তু এই প্রতিবেদনে পাঠকদের জানাবো এমন একটি ট্রেনের কথা যাতে চড়ার জন্য বা ভ্রমণ করার জন্য লাগে না কোনো টিকিট। সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই এই ট্রেনে চাপতে পারেন যাত্রীরা।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। এমন ট্রেনও রয়েছে ভারতীয় রেল ব্যবস্থায় যাতে চড়ে ভ্রমণ করতে লাগে না কোনো টাকা। কোথায় রয়েছে এমন ট্রেন? জানলে অবাক হবেন, বিগত ৭৪ বছর ধরে এই ট্রেন পরিষেবা দিয়ে আসছে যাত্রীদের। ভাকরা-নাঙ্গাল নামে এই ট্রেন পঞ্জাব-হিমাচল প্রদেশের সীমার মধ্যে চলাচল করে। এই ট্রেনের ইতিহাসও কম আকর্ষণীয় নয়।
স্বাধীনতার ঠিক পরের বছর ১৯৪৮ সালে এই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আসলে সেই সময়েই ভাকরা নাঙ্গাল বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সে সময়ে বাঁধের মাঝে পরিবহনের কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। সে সময়ে বাঁধ তৈরির জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য এই ট্রেনের সূচনা হয়েছিল। বর্তমানে নাঙ্গাল এবং ভাকরার মধ্যে ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এই ট্রেন। রোজই প্রায় ৮০০ জন যাত্রী এই ট্রেনে ভ্রমণ করেন। বিনামূল্যে বাঁধ দেখতে আসেন। মোট ১৩ কিমি পথ পাড়ি দেওয়া এই ট্রেনে সেই পুরনো ডিজাইন এবং কাঠের কোচই রয়ে গিয়েছে। তবে আগের ১০ টি বগির বদলে এখন রয়েছে মাত্র ৩ টি বগি।