Durga Puja: ১০ হাত নয়, কোন্নগরে পূজিত হন শ্বেত বর্নের ১৮ হাতের দুর্গা
মহালয়া থেকেই মানুষ বেরিয়ে পরেছেন ঠাকুর দেখার জন্য। বর্তমানে এখন থিমের পুজোর একেবারে রমরমা তবে থিমের পুজোর চাকচিক্যকে বাদ দিয়েও এখনো কিছু বনেদি বাড়ির পুজো বা বনেদি পাড়ার পুজো মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এছাড়াও কলকাতার পূজোর পাশাপাশি মফস্বলের কিছু নামিদামী কিন্তু মানুষের মনে ধরে আছে, তার মধ্যে অন্যতম পুরনো পুজো হলো কোন্নগরের সাধুর ঘাটে আঠারো হাতের দুর্গা পুজো।
হুগলি জেলার কোন্নগরে গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে সাধুরঘাটে প্রতিষ্ঠিত শ্রী শ্রী কালী মাতা আনন্দ আশ্রমে প্রতি বছর নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ১৮ হাত দূর্গার পুজো হয়ে থাকে। ১৩২৮ বঙ্গাব্দে তান্ত্রিক সূর্য নারায়ণ সরস্বতী মহারাজ কালীমাতা আনন্দ আশ্রমে এই পূজার প্রচলন করেন। প্রায় ৯৪ বছরের প্রাচীন এই পুজো।
ইতিহাস বলছে, শ্রীশ্রীচণ্ডী তে এই ১৮ হাত এর মা লক্ষ্মীর কথা জানা যায়। পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুরের আক্রমণে স্বর্গ থেকে বিচ্যুত হয়ে দেবগন হিমালয়ের কাত্যায়নের আশ্রম সমবেত হয়ে নিজ নিজ তেজ এর দ্বারা সৃষ্টি করেছিলেন মহিষাসুরমর্দিনীকে।
এইসময় দেবী বিভিন্ন রূপে দেবতাদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন তার মধ্যে ছিল ১৮ হাতের দূর্গা এবং দশোভূজা দূর্গা। তবে চন্ডিকাতে দেখা যায় কুড়ি হাতের দূর্গা।
এখানে দেবীর মুখ এর রং শ্বেত বর্ণ। হাতগুলি নীল বর্ণের, বক্ষস্থল অতি শ্বেতবর্ণ। শরীরের মধ্যে ভাগ এবং চরণ যুগল রক্তবর্ণের। দেবীর ডানদিকে নয় হাতে রয়েছে পদ্ম, বাণ, তরোয়াল, বজ্র, চক্র, গদা, চক্র, পরশু, ত্রিশূল, অক্ষমালা।
বাঁদিকে প্রথম ছয় হাতে আছে শঙ্খ, খড়্গ, ধনুক, ধুনুচি, ঘন্টা, কমণ্ডলু ও শেষের তিন হাতে আছে পদ্ম। প্যান্ডেলের আতিশয্য নেই, কিন্তু বনেদিয়ানা ভরপুর এই ১৮ হাতের দূর্গা।
হুগলি জেলায় এমন ১৮ হাতের দুর্গা কোথাও হয় না। ফলে এই দুর্গা দেখার জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ ভিড় করেন, তবে শুধু ১৮ হাতই নয়, এই দুর্গার গায়ের রং দেখেও প্রত্যেকেই অবাক হন।
পাশাপাশি কুমারী পুজোরও চল আছে এই পুজোয়। অষ্টমীর দিন মালসা ভোগ দেওয়া হয়। তবে এই পুজোয় বলি প্রথার প্রচলন হয় না। পুজোর কিছুদিন আগে থেকে এখানেই মাকে তৈরি করা হয়। এই মন্দিরের পাশে সারা বছরের জন্য রয়েছে একটি কালীমন্দির, সেখানেও কিন্তু পুজো করা হয়।