Hoop PlusTollywood

Mithun Chakraborty: ‘কাবুলিওয়ালা’ হয়ে জীবনের এক বাস্তব সত্য ফাঁস করলেন মিঠুন চক্রবর্তী

তিনি মহাতারকা। মুখোপাধ্যায় পরিবারের পর মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) সেই বাঙালি যিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মুম্বইয়ের মাটি কারও একার নয়। জিতেন্দ্র (Jeetendra) বলেছিলেন, মিঠুন নায়ক হলে তিনি ছেড়ে দেবেন অভিনয়। বাস্তবে মিঠুন যখন মেগাস্টার, সেই সময় জিতেন্দ্র তাঁর সাথে একটি গানে স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন। গানটির নাম ছিল ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’। এরপর পেরিয়ে গিয়েছে অনেকটাই সময়। বর্তমানে মিঠুন রাজনীতির সাথে যুক্ত। যোগ দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। ফলে তাঁর অভিনীত ‘প্রজাপতি’ প্রদর্শিত হয়নি প্রেক্ষাগৃহে। তবে তাতে কিছুই যায়-আসে না। কারণ এই ফিল্ম ভারত জুড়ে ব্লকবাস্টার হিট। ‘প্রজাপতি’-তে প্রশংসিত হয়েছিল মিঠুন ও দেব (Dev)-এর পিতা-পুত্রের রসায়ন। কিন্তু অনস্ক্রিন পিতা-পুত্র চলতি বছর বড়দিনে একে অপরের সাথে লড়াইয়ের সম্মুখীন হচ্ছেন।

বড়দিনের ছুটিতে মুক্তি পাবে দেব অভিনীত ফিল্ম ‘প্রধান’ ও মিঠুন অভিনীত ফিল্ম ‘কাবুলিওয়ালা’। দুটি ফিল্মই ভিন্ন স্বাদের। ‘কাবুলিওয়ালা’ একদিকে ক্লাসিক। অপরদিকে ‘প্রধান’ হল সমাজের বিভিন্ন অন্যায়ের বিরুদ্ধে পুলিশ অফিসার দীপক প্রধানের লড়াইয়ের কাহিনী। ‘প্রজাপতি’ রিলিজের সময় মিঠুন বলেছিলেন, ভিন্ন ধরনের চিত্রনাট্য হলে তবেই অভিনয় করবেন। সুমন ঘোষ (Suman Ghosh) পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ তাঁর কাছে যথেষ্ট বার্তাবাহী। কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)-এর কালজয়ী কাহিনীতে রয়েছে ধর্ম নির্বিশেষে আবেগ। মিঠুনের কাছে, সত্যিকারের অনুভূতির কাছে জাতি, ধর্ম বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।

মিঠুনের কাছে রবীন্দ্রনাথ প্রাসঙ্গিক। কারণ তিনি ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ করতে শেখান না। কিন্তু কে কতটা মনোযোগ দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণ করবেন তা নিশ্চয়ই তর্কসাপেক্ষ। প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত আগামী প্রজন্মকে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কিছু শিক্ষায় অবগত করা। জ্ঞান না থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। মিঠুন মনে করেন, ভালোবাসাই পারে দুটি ধর্মের বাধা ভেঙে দিতে এবং ‘কাবুলিওয়ালা’ তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। বর্তমান সময়ের অস্থিরতায় দাঁড়িয়ে ‘কাবুলিওয়ালা’ যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক।

তবে মিঠুনের জীবনে সত্যিই একজন ‘কাবুলিওয়ালা’ ছিলেন। না, তাঁর নাম রহমত ছিল না। জামাল (Jamal) নামে ওই ব্যক্তি। সময়টা ছিল আশির দশক। ‘মিঠুন’ উচ্চারণ করতে পারতেন না, বলতেন ‘মঠন’। হাঁপানির রোগ কষ্ট দিত জামালকে। মিঠুনের শুটিং সেটে কিছু না কিছু খাবার রান্না করে নিয়ে আসতেন জামাল। ইউনিটকে মিঠুন আগে থেকেই বলে রাখতেন জামালের কথা। একদিন জামাল বলেছিলেন, তারকা হবেন মিঠুন। ঈশ্বরের কাছে তিনি প্রার্থনা করতেন মিঠুনের সফলতা। কিন্তু যেদিন মিঠুন স্টারডম পেলেন, মেয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে আফগানিস্তানে ফিরে গিয়েছিলেন জামাল। কিছুতেই মিঠুনের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিতে রাজি হননি দৃঢ় চরিত্রের এই মানুষটি। বর্তমানে জামালের সাথে মিঠুনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে তিনি জানেন না , জামাল আদৌ বেঁচে আছেন কিনা! তবু ‘কাবুলিওয়ালা’ নিজের বন্ধুকে উৎসর্গ করেছেন মিঠুন। জামালের কথা বলার ধরন ফুটে উঠতে চলেছে 2023 সালের ‘কাবুলিওয়ালা’-য়। বড়দিনে যখন বাঙালি মেতে উঠবে কমলালেবু , প্লাম কেকের সাহেবি ডালিতে, সেই সময় প্রেক্ষাগৃহের পর্দায় দেশ থেকে অনেক দূরে এক রহমত তার মেয়ের ছায়া খুঁজে নেবে বঙ্গতনয়া মিনির মাঝে। আরও একবার ধর্ম, জাত-পাতকে হারিয়ে জিতে যাবেন রবীন্দ্রনাথ। জিতিয়ে দেবেন সুমন ঘোষ।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Suman Ghosh (@sumanghosh509)

Related Articles