অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) যথেষ্ট ডাউন টু আর্থ। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের ভূমিপুত্র অরিজিৎ সোনি টিভির রিয়েলিটি শো ‘ফেম গুরুকুল’-এর মাধ্যমে প্রচারের আলোয় এসেছিলেন। তবে এই শো তিনি জিততে পারেননি। কিন্তু পরবর্তী কালে অরিজিৎ প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিই যোগ্যতম। শুধুমাত্র সেলিব্রিটি নন, অরিজিৎ ব্রতী হয়েছেন সমাজসেবার কাজেও। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল খুলতে চান অরিজিৎ। পাশাপাশি জিয়াগঞ্জের কিশোর-কিশোরীদের জন্য স্পোকেন ইংলিশ শেখার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। তবে একসময় অরিজিৎ-এর জীবনে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল যাতে অনায়াসেই বন্ধ হয়ে যেতে পারত তাঁর পড়াশোনা। অরিজিৎ নিজেই ঘটনাটি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি তারসেম মিত্তল (Tarsem Mittal)-এর সাথে একটি মিউজিক পডকাস্টে এসে এই ঘটনার কথা বলেন অরিজিৎ। ঘটনাটি যখন ঘটে, অরিজিৎ সেই সময় তাঁর স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়তেন। একাদশ শ্রেণীর ছাত্রদের জন্য স্কুলে থাকত ল্যাবের ব্যবস্থা। দশম শ্রেণীর কিছু ছাত্রের ওই ল্যাব সম্পর্কে যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অরিজিৎ-ও। তিনি ও তাঁর দুই বন্ধু এক দিন ল্যাবে ঢুকে টেস্ট টিউব সহ অন্যান্য জিনিসপত্র দেখে যথেষ্ট মজা পেলেও তাঁদের ল্যাব থেকে বার করে দেওয়া হয়। এরপর অরিজিৎ-এর এক বন্ধু তাঁকে বলেন, পার্সোনাল ল্যাব পেয়ে গিয়েছেন তিনি। এটি হবে তাঁদের নিজেদের ল্যাব। এরপর অরিজিৎ তাঁর বন্ধুর সাথে সাইকেল নিয়ে জঙ্গলে পাড়ি দেন।
জঙ্গল পেরিয়ে একটি পাঁচিল টপকে অন্য একটি কম্পাউন্ডে প্রবেশ করেন অরিজিৎ ও তাঁর বন্ধু। এরপর ওই কম্পাউন্ডে একটি বড় রুমে প্রবেশ করেন তাঁরা। সেখানে ছিল একটি বড় টেবিল, বড় লাইট ও অনেক সরঞ্জাম। ছিল গরুদের দেওয়ার জন্য বড় ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ। তাতে জল ভরে পিচকারির মতো চারিদিকে ছিটিয়ে অরিজিৎ ও তাঁর বন্ধু খেলতে শুরু করেন। কিন্তু চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে দুই বন্ধুর কান ধরে চোর অপবাদ দিয়ে নিয়ে আসেন স্কুলের হেড স্যারের কাছে। তাঁরা বলেন, গত রাতে এরাই প্লেট চুরি করেছিল। অরিজিৎ ও তাঁর বন্ধুদের স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।
উপরন্তু বাড়ি এসে বাবা কাছেও যথেষ্ট মারধোর খেয়েছিলেন অরিজিৎ। কারণ ওই বিল্ডিংটি ছিল লন্ডন মিশন হাসপাতালের। ওই স্থানের ইনচার্জের সাথে অরিজিৎ-এর বাবার পরিচয় ছিল। তিনিও অরিজিৎ-এর নামে নালিশ করেছিলেন। এমনকি স্কুল কলোনির বাসিন্দারাও তাঁকে দেখিয়ে বলতে শুরু করেন, অরিজিৎ চুরি করেছেন। অবশেষে হেড স্যারের হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে আবারও স্কুলে প্রবেশ করেছিলেন অরিজিৎ। কারণ সামনেই ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা। ঘটনাচক্রে লন্ডন মিশন হাসপাতালকে নতুন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন অরিজিৎ।
View this post on Instagram