নীল বিদ্রোহে দরিদ্র কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন রানী রাসমণি!
সাল ১৮৬০, নীলচাষ বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয় এবং দ্রুত সমগ্র বাংলায় এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এই বিদ্রোহের পিছনে কাজ করে অর্ধ শতাব্দী ধরে নীল চাষীদের উপরে নির্মম অত্যাচার ও নীল চাষ আইন প্রনয়ন। সেই ইতিহাসের পাতা বাঙালী দর্শকের সামনে উজ্জীবিত করলেন রানী রাসমনি। হ্যাঁ রানী রাসমনিতে নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে কিভাবে জানবাজারের রানীমা ও তাঁর জামাই মথুরামোহন মশাই কিভাবে গর্জে উঠেছিলেন সেই নিয়ে এখন পরিচালক মশাই গল্প বুনেছেন।
রানীমার ছোট জামাই ও নাতিরা এখন ইংরেজদের হাতে বন্দী। এই পরিস্থিতিতে রানিমা ভেঙে না পড়ে নিজের বাড়ির মহিলা বাহিনী নিয়ে ইংরেজদের ডেরা থেকে বাড়ির সকল পুরুষ সদস্যদের বাইরে নিয়ে আসেন। বাড়ির সদস্য আর গ্রামের মানুষদের বাঁচাতে হাতে তুলে নিয়েছেন বন্দুক। ইংরেজদের পরাস্ত করতে গ্রামের মহিলাদের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রানিমা।
আবার দীনবন্ধু মিত্রের নাটক নীলদর্পণ নাটকের মহড়া রানীমার অন্দরে বসলে পুলিশ আসে তল্লাসি চালাতে। তখন রানীমা এসে সকলকে মিথ্যা বলে যে তাঁর বাড়িতে কোনো নাটকের কাজ হচ্ছেনা। এইভাবে রক্ষা করেছে সকলকে। গরীব অসহায়দের পাশে সহায় হয়ে দাঁড়িয়েছেন রানীমা। এর আগেও সিপাহি বিদ্রোহের পটভূমিকা এই ধারাবাহিকে দৃশ্যমান ছিল।
অনেকে ভাবেন ধারাবাহিকের পর্বগুলি বুঝি গাছে গরু চড়ানোর মতো দেখানো হয়। এবার এই নিয়ে কথা বললেন ধারাবাহিকের এগজিকিউটিভ প্রোডিউসার অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় । তিনি জানালেন ধারাবাহিকের গল্প পুরোটাই কাল্পনিক নয়। প্রত্যেকটি ঘটনাকে ধারাবাহিকে শ্যুটিং করার আগে তা নিয়ে চলে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা। দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে, বিভিন্ন বইপত্র ঘেঁটে তবেই এক একটি পর্বের শ্যুটিং করে দর্শকদের পরিবেশন করেন। শুধুমাত্র অনির্বান একা নন মাঝে মাঝে রানিমা ওরফে দিতীপ্রিয়া ও নানান বই ঘেঁটে সত্যতা যাচাই করে রানিমার চরিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন।
কৃষক আন্দোলন নিয়ে উত্তাল সারা দেশ। কৃষি আইন সংক্রান্ত বিক্ষোভে কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সরকারের চলছে একের পর এক বৈঠক। এরই মাঝে জি বাংলায় রানিমাতে সম্প্রচার হলে নীল বিদ্রোহ। বর্তমান আর ইতিহাসকে সামঞ্জস্য রেখেই কি পরিচালক বাবু ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য বুনছেন নাকি পুরোটাই টিআরপিতে এগিয়ে আসার জন্য।