বাজারে আসা ইলিশে উধাও স্বাদ-গন্ধ, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাই নষ্ট, খাঁটি মাছ চেনার উপায় কী!
বাঙালির সঙ্গে মাছ প্রেমের নিবিড় সম্পর্ক। বিশেষ করে ইলিশ মাছ (Hilsa Fish) হলে তো কথাই নেই। এমনিই কি আর ইলিশকে মাছের রানী বলা হয়! ঝমঝম বৃষ্টির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা বা সর্ষের ঝোল বেগুন বড়ির পাতলা ঝোল থেকে ইলিশ ভাপা, রসনা তৃপ্তির জন্য তালিকাটা নেহাত ছোট নয়। কিন্তু এবার বর্ষায় ইলিশ খেয়ে মোটে খুশি নন ভোজন প্রিয় বাঙালি। টাকা দিয়ে ইলিশ কিনেও যেন সেই স্বাদ, গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না।
বর্ষার প্রথম ইলিশ বাজারে আসতেই উচ্ছ্বসিত ভোজনরসিকরা। বেশি দাম দিয়ে হলেও রূপোলি শষ্য কিনছেন অনেকেই। কিন্তু অনেকেরই অভিযোগ, আগের মতো স্বাদ গন্ধ আর পাওয়া যাচ্ছে না ইলিশের। কিন্তু এমনটা হওয়ার কারণ কী? মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইলিশ যখন মিষ্টি জলে প্রবেশ করে তখন তার স্বাদ বাড়ে। ইলিশ ধরতে মূলত সমুদ্রে পাড়ি জমায় মৎস্যজীবীরা। কারণ নদীতে ডিম পাড়ার মরশুম শেষ হয়ে যাওয়ার পর ইলিশ ফের সমুদ্রে ফিরে যায়। কিন্তু নদীর মোহনায় ঢোকার আগেই জাল ফেলে ইলিশ ধরছেন মৎস্যজীবীরা।। ফলে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে স্বাদ গন্ধে।
এ বছর বর্ষা দেরিতে আসায় হিমঘরে থাকা মাছও বের করা হচ্ছে এখন। কিন্তু এতে স্বাদ বা গন্ধ কোনোটাই পাওয়া যাচ্ছে না। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানান, সমুদ্রে থাকাকালীন ইলিশের শরীর থেকে প্রচুর ফ্যাট ক্ষয় হয়। কিন্তু নদীতে ঢোকার পর পর্যাপ্ত খাবার পাওয়ায় শরীরে মাংস বাড়ে মাছের। কিন্তু অধিকাংশ মৎস্যজীবীই নদীতে ঢোকার আগেই বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরেন। তাই ইলিশের স্বাদে গন্ধে খামতি থেকে যায়।
তাহলে ইলিশের মান বোঝার উপায় কী? অনেকেই ভালো ইলিশ বলতে তার আকার বোঝেন। কিন্তু সাইজে বড় মানেই যে ইলিশ স্বাদু হবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। অনেকে বড় ইলিশ কিনতে গিয়ে মায়ানমারের ইলিশ কিনছেন। আর স্বাদে গন্ধে দুটোতেই ঠকছেন। ইলিশ কেনার ক্ষেত্রে ওজনের দিকটা অবশ্যই মাথায় রাখা দরকার। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশে ভালো স্বাদ পাওয়া যায়। আবার ৭০০ গ্রামের ইলিশও সুস্বাদু হয়।