জীবদ্দশাতেই করেছিলেন অঙ্গীকার, প্রয়াত বুদ্ধদেবের কর্ণিয়ায় দৃষ্টি ফিরে পেলেন দুজন
বৃহস্পতিবার ইন্দ্রপতন হয়েছে বাংলা রাজনীতিতে। প্রয়াত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya)। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি । গত বছর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে হন তিনি। এই সময়ই চিকিৎসকদের পরামর্শে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। সেই থেকে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন বুদ্ধদেব।
জীবিতাবস্থায় চক্ষুদান এবং দেহদান করে গিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। তাই বৃহস্পতিবার তাঁর জীবনবসানের পরেই শোকের মধ্যেও কর্তব্যে অবিচল ছিলেন তাঁর পরিবার। সংশ্লিষ্ট দেহদানে অঙ্গীকারবদ্ধ সংস্থাকে ফোন করেন বুদ্ধদেবের পরিবার। এদিন দুপুরেরর মধ্যেই সংগ্রহ করা হয় প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কর্ণিয়া। রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি বা আরআইও এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এদিন সন্ধ্যাতেই সেই কর্ণিয়া স্থাপন করা হয় দুজনের চোখে।
আরআইও এর ডিরেক্টর জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কর্ণিয়া গ্রহণ করে নতুন দৃষ্টি পেয়েছেন দুজনে। জানা যাচ্ছে, বিগত কয়েক বছর ধরে নাকি চোখের সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছিলেন বুদ্ধদেব। তবে ছানির অপারেশন করাননি তিনি। এর জন্য কর্ণিয়ার মান বেশ ভালো ছিল বলেও জানান চিকিৎসকরা। এবার সেই কর্ণিয়ায় নতুন দৃটি পেলেন আরো দুজন। তবে নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের পরিচয় সহ অন্যান্য তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে গৃহবন্দি জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কয়েকবার অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। জানা যাচ্ছে, বুধবার রাতেও তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যার বাড়াবাড়ি হয়। রাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও ঠিক হয়েছিল, বৃহস্পতিবার বেলায় উডল্যান্ডস এর চিকিৎসকরা এসে তাঁকে পরীক্ষা করে যাবেন। তেমন প্রয়োজন হলে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালেই পরিস্থিতির অবনতি হয়।
সূত্রের খবর, এদিন সকালে প্রাতরাশের পর চা খেয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তারপরেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নেবুলাইজার দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছিল তাঁকে। তখনই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন বলে খবর। তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় চিকিৎসকদের। তাঁরা এসে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। ভবিষ্যতে চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য এনআরএস মেডিকেলে দেহদানের অঙ্গীকার করে রেখেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মরণোত্তর সেখানেই দান করা হবে তাঁর মরদেহ।