আমরা যারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত তারা জানি সংবাদমাধ্যম হল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা উন্মুক্ত, স্বাধীন এবং গণতন্ত্রের ভীত। যদিও এই ভীত এখনও টলমল করে কিছু অকাঙ্খিত মানুষের প্রবেশে এবং হস্তক্ষেপে। পুঁথিগত বিদ্যা অনুসারে সংবাদমাধ্যম হল শক্তিশালী মাধ্যম, যদিও বর্তমান প্রেক্ষাপট খানিকটা অন্য কথা বলে, কিন্তু বিদ্যা মিথ্যা হতে পারে না, আর এই শক্তিশালী মাধ্যমের হাত ধরেই পথ চলা শুরু করেন এক ট্রান্সজেন্ডার।
নাম -তাসনুভা আনান শিশির। বাংলাদেশের বাসিন্দা। এবং তিনি একজন সংবাদ পাঠিকা। একটি বেসরকারি চ্যানেল, নাম বৈশাখী টিভি, গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সংবাদ পাঠ করেন তিনি।
জীবনের এই অগ্নিপরীক্ষায় উত্তরণ করতেই হবে তাকে, এরকম জেদ, ইচ্ছা মাথায় নিয়েই বৈশাখী টিভিতে সংবাদ পরিবেশন করেন শিশির।
বাংলাদেশের রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শিশির। একটু বড় হওয়ার সাথে সাথে শিশির অনুভব করে যে তার শরীর এটা নয়। তার মন, তার আবেগ
সবটাই নারী কেন্দ্রিক। নিজেকে যখন তিনি বুঝতে পারলেন তখন তার পরিবার চায়নি সে বাড়িতে থাকুক। খুব কম বয়সে সে যৌন নিগ্রহ হয়। এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। শিশির চাননি যে তার নিজের জন্য পরিবারের লোকেরা কথা শুনুক। তিনি পরিষ্কার করে জানান মেরুদন্ড সোজা করে চলা পুরুষমানুষ হতে পারবেনা আমি।
ঢাকায় এলেন শিশির। থিয়েটার কাজ করতে মন চেয়েছিল। ৬ মাস হতে কোনো টাকা ছিল না, এমনকি প্রতিবেশীর এক বাড়িতেই থাকতেন শিশির। চার বার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন শিশির। অবশেষে অনলাইন রিসার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যমে পা রাখেন শিশির। এখন তার একটাই বক্তব্য, হিজড়া বা ট্রান্সজেন্ডার হওয়া কোনো পাপ নয়, এর জন্য যেন কেউ ঘর ছাড়া না হয়, এবং তাদের যেন না খেয়ে মরতে না হয়।