1989 সালে মুক্তি পেয়েছিল বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ‘বেদের মেয়ে জোসনা’। ফিল্ম যত না সুপারহিট হয়েছিল, তার থেকেও বেশি সুপারহিট হয়েছিলেন ফিল্মের নায়িকা অঞ্জু ঘোষ (anju ghosh)। এরপর অনেক ফিল্ম করলেও ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ হিসাবেই ইন্ডাস্ট্রি মনে রেখেছে অঞ্জুকে। কিন্তু তিনি এখন কোথায়? কেমন আছেন?
বর্তমানে কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা অঞ্জু কিন্তু ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ হিসাবে পরিচিত হয়ে খুশি নন। তাঁর মতে, অনেক ভালো ভালো ফিল্মে অভিনয় করলেও ‘বেদের মেয়ে জোসনা’-র স্টারডমের জন্য তিনি সফলতা পেলেও অভিনেত্রী হিসাবে কোথাও তাঁর মর্যাদাহানি হয়েছে। 2019 সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন অঞ্জু। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয় বাংলাদেশের নাগরিক অঞ্জুকে কারসাজি করে ভারতের নাগরিক বানানো হচ্ছে। কিন্তু বিজেপি দাবি করেছিল, অঞ্জুর মা-বাবার জন্ম বাংলাদেশে হলেও অঞ্জুর জন্ম কলকাতায়।
প্রকৃতপক্ষে, অঞ্জু বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কাটিয়েছিলেন নিজের শৈশব। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় তমিজউদ্দিন রিজভী (Tameezuddin Rizvi) পরিচালিত ফিল্ম ‘আশীর্বাদ’-এর মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেছিলেন অঞ্জু। ‘আশীর্বাদ’ অঞ্জুর প্রথম ফিল্ম হলেও প্রেক্ষাগৃহে কিন্তু প্রথম মুক্তি পেয়েছিল অঞ্জু অভিনীত ফিল্ম ‘সওদাগর’ যার পরিচালক ছিলেন এফ কবীর চৌধুরী (F.kabir chowdhuri)। অভিনয় ছাড়াও অঞ্জু শৈশবে গান ও এস্রাজ বাজানো শিখেছিলেন। মিউজিক ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করার সময় অঞ্জুর পরিচালনায় গান গেয়েছেন রুনা লায়লা(Runa laila), সাবিনা ইয়াসমিন(sabina iasmin) সহ অনেক নামী শিল্পীরা। অঞ্জুর নিজের গাওয়া গান ‘বাঁশিওয়ালা’-ও সুপারহিট হয়েছিল।
এত সাফল্য, এত স্টারডমের পরেও 1988 সালে কেন দেশ ছেড়েছিলেন অঞ্জু? অঞ্জু যখন দেশ ছাড়েন তখন তিনশোর বেশি ফিল্মে অভিনয় করা হয়ে গেছে তাঁর। তাহলে হঠাৎই স্টারডম ছেড়ে অন্তরালে যাওয়ার ইচ্ছা কেন হয়েছিল অঞ্জুর? অঞ্জু কোনোদিন এই বিষয়ে মুখ না খুললেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসবাদী ও পরিচালকরা অঞ্জুকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেছিলেন। ফলে দেশ ছেড়ে চলে যান অঞ্জু।
বর্তমানে কলকাতার সল্টলেকের বাড়িতে স্টারডম থেকে অনেক দূরে বেশ ভালোই আছেন অঞ্জু ঘোষ। তাঁর মা-বাবা দুজনেই মারা গেছেন। অঞ্জু আজকাল বেশির ভাগ সময়ই বাড়িতে থাকেন। বাড়িতে নিজের হাতে বাগান করেছেন তিনি। সেই বাগানের পরিচর্যা করতে অঞ্জুর অনেকটাই সময় কেটে যায়। এছাড়াও নিজের হাতে রান্না করেন অঞ্জু। লকডাউনের সময় নিজেই নিজের বাড়ির যত্ন নিচ্ছেন অঞ্জু। এভাবেই বেশ ভালো আছেন তিনি।