অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তুলে দেওয়া হয় বনকর্মীদের হাতে, ‘বদলা’ নিতে ২২ কিমি পেরিয়ে গ্রামে ফিরল হনুমান
কর্নাটকের চিকমাগালুর জেলার কোট্টিহেগরা গ্রামে এক হনুমানের তাণ্ডবে প্রাণ ওষ্ঠাগত গ্রামবাসীদের। গাছের ফল নষ্ট করা, বাচ্চাদের খাবার কেড়ে নেওয়া, বাড়ি থেকে খাবার চুরি, এই সব অত্যাচার লেগেই থাকত। দীর্ঘদিন ধরে এই উপদ্রব সহ্য করে শেষমেশ অতিষ্ঠ হয়ে বন দফতরকে খবর দেন গ্রামবাসিন্দারা।
বন দফতরের কর্মীরা সেই হনুমানটিকে ধরতে বারবার ব্যর্থ হন। সেই গ্রামের এক স্থানীয় অটোচালক জগদীশের ওপর ওই হনুমানটি হামলাও করে বলে জানা গিয়েছে। নিজেকে বাঁচাতে অটোর ভিতরে আশ্রয় নিলে, সেখানেও তাঁকে হামলা করতে পৌঁছে যায় হনুমানটি। শেষমেশ নিজেকে বাঁচানোর জন্য বাড়ির পথে দৌড়াতে থাকলে তাঁকে হনুমানটি তাড়া করে এবং এরপর জগদীশের হাতে কামড় দেয়। অবশেষে গত ১৬ ই সেপ্টেম্বর বনকর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দা এবং অটোচালকদের সাহায্যে হনুমানটিকে ফাঁদে ফেলতে সক্ষম হয় এবং তাকে ২২ কিলোমিটার দূরে বালুর নামক এক জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসেন।
এত কিছুর পরেও রেহাই পাননি গ্রামবাসীরা। আবারও ২২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গ্রামটিতে ফিরে আসে হনুমানটি। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। করোনার প্রভাব একটু কমতেই সম্প্রতি স্কুল চালু হয় গ্রামে। কিন্তু এই ঘটনার জেরে স্কুল যেতেও ভয় পাচ্ছে পড়ুয়ারা। ফের বন দফতরকে খবর পাঠানো হয় গ্রামবাসিদের তরফ থেকে। হনুমানটির এই আকস্মিক আগমনে ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দেন অটোচালক জগদীশ। তিনি জানান, “ফের ওই হনুমানের আসার খবর শুনে আমি বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দিয়েছি। আমার উপরে ফের হামলা চালাতে পারে সে। বন দফতরকে খবর দিয়েছি হনুমানটিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।”
বনকর্মীদের মতে, পূর্বে ওই অটোচালক হয়তো হনুমানটির কোনো ক্ষতি করেছিলেন যার জন্য কেবল ওই ব্যক্তির ওপরই আক্রমণ করার চেষ্টা করে হনুমানটি। তবে ঠিক কী কারণে এই ক্ষোভ তা এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। গ্রাম বাসিন্দাদের মতে, বদলা নিতেই পুনরায় গ্রামে ফিরে আসে হনুমানটি। বনকর্মীরা জানান, এমন ঘটনা আগে কখনও দেখেননি তাঁরা। তবে এইবার হনুমানটিকে জঙ্গলের আরও গভীরে ছেড়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতর।