থিয়েটারের নান্দনিকতাকে একসময় স্থাপন করেছিলেন তিনি। হঠাৎই সেই নান্দনিকতার জগৎ ছেড়ে তাঁকে বিলীন হতে হল পঞ্চভূতে। তিনি, শাঁওলি মিত্র (Shaoli Mitra), শুধুমাত্র নাট্যব্যক্তিত্ব নন, এক পরিপূর্ণ শিল্পী। মাত্র চুয়াত্তর বছর বয়সে প্রয়াত হলেন শাঁওলি।
নাট্যজগতের দিকপাল ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্র (Shambhu Mitra) ও তৃপ্তি মিত্র (Tripti Mitra) -র কন্যা শাঁওলি রবিবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এদিন দুপুরে সিরিটি মহাশ্মশানে তাঁর অন্তিম ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রশ্ন উঠতে পারে, এই দেরিতে কেন সংবাদমাধ্যমে শাঁওলির মৃত্যুসংবাদ পেশ করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি ছিল শাঁওলির নিজের ইচ্ছা। তাঁর শেষ ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী, দাহকার্যের পর তাঁর মৃত্যুর খবর সবাইকে জানানো হয়েছে। শাঁওলি অন্তর্মুখী ছিলেন না। কিন্তু প্রাইভেসি পছন্দ করতেন। এই কারণে তিনি এই ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। তাঁর দাহকার্যের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষ (Arpita Ghosh)। অধিক ফুল দিয়ে সজ্জিত ছিল না শাঁওলির দেহ। তাঁর বাবা শম্ভু মিত্রর মতো তিনিও মৃত্যু পরবর্তী বিধি নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী, তাঁর পার্থিব শরীর ফুল দিয়ে সাজানো হয়নি।
View this post on Instagram
শাঁওলি তাঁর শেষ ইচ্ছাপত্রে তাঁর দাহকার্যের ভার দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মানস-পুত্র সায়ক চক্রবর্তী (Sayak Chakraborty) ও মানস-কন্যা অর্পিতা ঘোষের উপর। বরাবর মহা-সমারোহ বা পুষ্প স্তবক দিয়ে পার্থিব শরীর সজ্জিত করার বিরোধী ছিলেন শাঁওলি। সাধারণ ভাবে, সকলের অগোচরে চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।
View this post on Instagram
কিংবদন্তী পরিচালক ঋত্বিক ঘটক (Ritwik Ghatak)-এর ফিল্ম ‘যুক্তি-তক্কো-গপ্পো’-য় বঙ্গবালার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শাঁওলি। এছাড়াও ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’, ‘ডাকঘর’, ‘পুতুল খেলা’-র মতো একাধিক বিখ্যাত নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। 2003 সালে তিনি পেয়েছিলেন ‘সঙ্গীত নাটক অ্যাকাদেমি’ পুরস্কার। 2009 সালে তিনি ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত হন। 2012 সালে শাঁওলি সম্মানিত হন ‘বঙ্গ বিভূষণ’ সম্মানে। 2011 সালে রবীন্দ্র সার্ধ্বশত জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির চেয়ারপার্সন ছিলেন শাঁওলি।