অভিনেত্রী পার্নো মিত্রর কেরিয়ারে এখন লোকাল ট্রেনই যাতায়াতের মূল মাধ্যম। ভাবছেন তো হঠাৎ এমন কেন? একটি শ্যুট উপলক্ষে ২৩শে মার্চ থেকে তাঁকে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করতে হবে। অথচ ট্রেনে কোনো শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই। এর জন্যই অভিনেত্রী মনস্থির করেছেন ট্রেনে তিনি কদাচিৎ জল খাবেন। কারণ ট্রেনে যাতায়াত যাওয়া-আসা মিলিয়ে চার ঘন্টা। যদি একান্তই বাথরুমের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় তখন কি করবেন অভিনেত্রী?
উত্তরে অভিনেত্রী জানান যে তিনি ট্রেনে এক বিন্দুও জল খাবেন না। পরিস্থিতির নিরিখে সবটাই তাঁকে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যেতে হবে। কিন্তু সুলভ শৌচালয় তো বিভিন্ন জায়গায় আছে। সেই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান সুলভ শৌচালয় নৈব নৈব চ। মেয়েদের পক্ষে ওই সুলভ শৌচালয়গুলি চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর। ওখানে স্বাভাবিক মানুষ পা পর্যন্ত রাখতে পারেনা।
কিন্তু অভিনেত্রী করবেন টা কি? জল না খেয়ে বাথরুম আটকে রাখা তো রীতিমতো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আসছে পার্নো মিত্রর পরবর্তী ছবি ‘সুনেত্রা সুন্দরম’। যা সংক্ষেপে গিয়ে দাঁড়ায় ‘সুসু’-তে! মানুষকে সচেতন করতে এই ছবিটির এরকম নামকরণ। ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করবেন পার্নো মিত্র। তাঁর বিপরীতে দেখা যাবে অভিনেতা সোমরাজ মাইতিকে যিনি ‘এই ছেলেটা ভেলভেলেটা’,‘জিয়ন কাঠি’ ইত্যাদি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। এছাড়াও ছবিটিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকছেন ওপার বাংলার দুই অভিনেত্রী নাদিয়া এবং ফারজানা চুমকি।
View this post on Instagram
নারীরা যে সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছেন তারই কথা বলবে এই ছবি। তাই নারীদের জন্য নারী দিবস এই ছবির ঘোষণা হয়েছে। নারীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বড়পর্দায় ছবি হয়েছে এতদিন ধরে। কিন্তু এইরকম ভাবনা সম্পূর্ণ নতুন। এই প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন, “নিজের স্ত্রীকে এই সমস্যার ভুক্তভোগী হতে দেখেছি। সুলভ শৌচালয় গুলিতে পা রাখা যায় না। বাথরুম চাপতে গিয়ে তার রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল।”
তিনি তখন উনি ভেবেছিলেন সমাজকে এই নিয়ে একটা বার্তা দেওয়ার দরকার। ছবি প্রসঙ্গে গবেষণা করতে গিয়ে তাঁর কাছে উঠে এসেছে নানা তথ্য। তিনি দেখেছেন গড়িয়াহাটের মহিলা বিক্রেতারা সারাদিন জল পান করেন না। গোটা ২৪ ঘন্টায় মাত্র দুবার বাথরুমে যান। এমনকি বিধান নগরের পিএনবি বাসস্টপ থেকে করুনাময়ী পর্যন্ত কোন সুলভ শৌচালয় আর নেই। পুরুষরা না হয় প্রকাশ্যে মূত্র ত্যাগ করতে পারেন। কিন্তু যারা মহিলা তারা নিজের আব্রু রক্ষার্থে কাজ কি করে করবেন? একটি লোকাল ট্রেন কিংবা মেট্রোরেলেও শৌচালয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। সমাজের এরকম নানা দিক গুলোকে তুলে ধরতে তিনি তাঁর সিনেমা দর্শকের সামনে আনছেন। এই ছবিটির প্রযোজনা দায়িত্বে শিবপার এন্টারটেইনমেন্ট। নিবেদন করছেন বি ডি বক্স প্রোডাকশন।
এই ছবির নায়ক সোমরাজ ইতিমধ্যে মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে জুটি বেঁধে পরিচালক প্রেমেন্দুবিকাশ চাকীর একটি ছবি করেছেন। পরিচালকের মতে যথেষ্ট দায়িত্বশীল অভিনেতা তিনি। এই ছবিটির মধ্যে দিয়ে হাজার হাজার নারীর দৈনন্দিন জীবন সংগ্রামের কাহিনী উঠে আসবে। রাজারহাট সহ কলকাতার বিভিন্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অংশে এই সিনেমাটির শুটিং হবে।
তিনি কি কোনোভাবে প্রশাসনকে কোনো বার্তা দিতে চান? কারণ এ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান একজন নারী। এই প্রসঙ্গে পরিচালকের সাফ উত্তর যদি আমরা নিজেরাই পরিষ্কার থাকি অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তাঁর মতে একা প্রশাসন আর কত দায়িত্ব নেবেন?