পরকীয়া ছেড়ে ভালো কিছু দেখালেই টিআরপি পড়ে যায়, দোষ দর্শকদের: কণীনিকা ব্যানার্জি
অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সব সময় তাঁদের দর্শকদের ধন্যবাদ জানান অফুরান ভালোবাসার জন্য। কিন্তু গতকাল নারী দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দর্শকদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অভিনেত্রী কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ‘আয় তবে সহচরী’ এখন দর্শকদের মনের গভীরে একটি জায়গা নিয়ে নিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে রেটিং চার্ট দেখলে বোঝা যায় যে বাংলার ঘরে ঘরে এখন আয় তবে সহচরী কতটা জনপ্রিয়।
তবে সিরিয়ালটি কখন শুরু হয়েছিল তখন অনেক কষ্টে রেটিং অর্জন করতে সক্ষম হত। প্রতি সপ্তাহে সেরা দশের বাইরে থাকত এই ধারাবাহিক। কিন্তু টিপু বরফির বিয়ের পর থেকে ধারাবাহিকটির ভাগ্য বদলাতে থাকে। টিপু বরফির বিয়ের পর গল্পে দেবিনার আগমন সহচরীকে সেরা পাঁচে পাকাপোক্ত জায়গা করে দেয়। কিন্তু বারবার দর্শক অভিযোগ আনেন যে সিরিয়ালটি আর তাদের রুচিতে বাধে না। যে গল্প নিয়ে শুরু হয়েছিল সিরিয়ালটি তার বিন্দুমাত্র এখনও দেখানো হয়নি। আর পাঁচটা সিরিয়ালের মতোই সিরিয়াল দুর্ভাগ্যজনকভাবে পরকীয়ার পথে হেঁটেছে।
আর গতকাল নারী দিবসে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয় সহচরী অর্থাৎ কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় দর্শকদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, “দর্শক কেন এই রিগ্রেসিভ জিনিসগুলোকে দেখে টিআরপি বাড়াতে সাহায্য করে? দর্শক এই জিনিসগুলি বিভোর হয়ে দেখেন বলেই আমায় করতে হয়। আপনারা এসব নোংরা জিনিস দেখা বন্ধ করুন টেলিভিশনে আর দ্বিতীয় দিন থেকে নোংরা জিনিস দেখাবে না। যখন আমি আয় তবে সহচরী তো কাজ শুরু করি তখন সিরিয়ালটি যথেষ্ট ভাল ছিল। এই সিরিয়ালে মাত ভাবনাচিন্তা খুব কম সিরিয়াল করতে সাহস পেয়েছিল। একটি মধ্যবয়স্কা মেয়ের পড়াশোনার সাথে তার স্বপ্ন পূরণ এই গল্প আমাকে খুব ভাবিয়েছিল। নির্মাতা এবং চ্যানেল উভয়ই আপ্রাণ চেষ্টা করছেন যাতে গল্পের মান আবার আগের মত ফিরিয়ে আনা যায়। কিন্তু সমস্যা হল ভালো জিনিস দেখালে টিআরপি পড়ে যাচ্ছে। দিনের শেষে আমাদের অর্থলাভ টিআরপি থেকেই হয়। তাই এই জিনিসটিকে বাদ দিয়ে ভাবে চলবে না। যদি সহচরী কলেজ যেতে শুরু করে আবার দর্শক টিভি বন্ধ করে দেবেন।”
আয় তবে সহচরী এখন পুরোপুরি পরকীয়ায় পরিপূর্ণ একটি সিরিয়াল। এই অভিযোগে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রোমের কলোসিয়ামের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। যেখানে অপরজনের ক্ষতি দেখে অন্যজন হাততালি দিত। আমরা এতগুলো বছর পার করেও সেই একই ভাবনাচিন্তায় পড়ে আছি। আমরা শুধু শিক্ষিত মানুষের মুখোশ পড়ি। মেয়েরা যত নোংরা পাঁকে নামে আমরা তত আনন্দ উপভোগ করি। দর্শক মেয়েদের সংগ্রামকে ভালোভাবে নিতে শিখুন। একটি মেয়ে অন্য মেয়ের ক্ষতি করছে এই জিনিস আর কতদিন চলবে?”
এই ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েরা কি সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণা হতে পেরেছে? এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান, “বলিউডে যেভাবে নারীকেন্দ্রিক কাজ হয় আমাদের এখানে এখনও সেই রকম কাজ হয়না। কিছু মুষ্টিমেয় অভিনেত্রীরাই সেরকম কাজ করার সুযোগ পান কারণ তাদের পরিচিত মহলে অধিকাংশই প্রডিউসার। কিন্তু আমার তো কোন প্রডিউসার চেনা জানা নেই। তাই আমার কপালে মা মাসির চরিত্রই জোটে।”