বাংলাদেশ আবারও হারাল বিনোদন জগতের অপরিসীম গৌরবকে। চলে গেলে বিখ্যাত অভিনেত্রী ও সঞ্চালিকা শর্মিলি আহমেদ (Sharmili Ahmed)। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন শর্মিলি। শেষ অবধি আর লড়াই চালাতে পারলেন না। শুক্রবার, 8 ই জুলাই, ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রয়াত হলেন শর্মিলি।
বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পী সংগঠনের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম (Ahsan Habib Nasim) শর্মিলির প্রয়াণের বিষয়ে মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়েছেন। এছাড়াও অপর এক অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা (Subarna Mustafa) শর্মিলির মৃত্যুসংবাদে ফেসবুকে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, তাঁর সুন্দর চাচি ও খ্যাতিমান অভিনেত্রী শর্মিলি আহমেদ সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
View this post on Instagram
নাট্যজগতে ‘আম্মা’ নামে পরিচিত শর্মিলির জন্ম হয়েছিল 1947 সালের 8 ই মে, রাজশাহীতে। তাঁর প্রকৃত নাম মাজেদা মল্লিক (Majeda Mullick)। শিশুশিল্পী হিসাবে মাত্র চার বছর বয়সে বিনোদন জগতে এসেছিলেন শর্মিলি। তবে বড় হয়ে তাঁর কেরিয়ার গতিপ্রাপ্ত হয়। 1962 সালে রেডিওতে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন শর্মিলি। রেডিওতে একাধিক বেতার নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি 1964 সালে অভিনয়ে ডেবিউ করেন তিনি। কিন্তু তার আগেই শর্মিলি উর্দু ভাষায় নির্মিত ফিল্ম ‘ঠিকানা’-য় অভিনয় করেছিলেন। তবে তা মুক্তি পায়নি। 1964 সালে সুভাষ দত্ত (Subhash Dutta) নির্মিত ফিল্ম ‘আবির্ভাব’-এর মাধ্যমে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন শর্মিলি। সুভাষবাবুর আরও দুটি ফিল্ম ‘আলিঙ্গন’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ শর্মিলিকে স্টারডম এনে দেয়।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে পর্যন্ত বেশ কয়েকটি উর্দু ফিল্মে অভিনয় করলেও পরবর্তীকালে বাংলা ফিল্মের প্রতি শর্মিলি আগ্রহী হয়ে পড়েন। বিয়ে করেন পরিচালক রকিবউদ্দিন আহমেদ (Rakibuddin Ahmed)-কে। রকিবউদ্দিনের পরিচালনায় ‘পলাতক’ ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন শর্মিলি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ‘রূপালী সৈকতে’, ‘আগুন’, ‘দহন’ সহ একাধিক হিট ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন শর্মিলি। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম সিরিয়াল ‘দম্পতি’-তে অভিনয় করেছিলেন তিনি। 1976 সালে মোহাম্মদ মহসীন (Mohammed Mohsin) পরিচালিত নাটক ‘আগুন’-এ প্রথমবার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এরপর বহু ফিল্মেও তাঁকে মা-দিদিমার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে।
জীবদ্দশায় প্রায় চারশো নাটক ও দেড়শো ফিল্মে অভিনয় করেছেন শর্মিলি। কিন্তু পঁচাত্তর বছর বয়সে এসে নিভে গেল তাঁর জীবনদীপ।
View this post on Instagram