ভয়ানক বিপদ! সেপ্টেম্বরের মধ্যেই করোনা সংক্রমনে এক নম্বরে থাকবে ভারত, দাবি বিশেষজ্ঞদের
গতকাল শনিবার একদিকে দেশ জুড়ে একদিনে সর্বাধিক করোনায় আক্রান্তের ফলে রেকর্ড সৃষ্টি এবং অপরদিকে, করোনায় আক্রান্তের ফলে গোটা দেশে ১০ লক্ষের বেশি করোনা সংক্রমিত রোগী। এই দুই’য়ে মিলে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। ক্রমে দেশ জুড়ে যে হারে লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তাতে চিকিৎসক মহলে যথেষ্টই চিন্তার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যেভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে দেশ জুড়ে তাতে আগামী কয়েকমাসে মারণ করোনা ভাইরাস আরও অশনিসংকেত বয়ে আনবে। আর এই পরিস্থিতিতে যথেষ্ট ভয়ের খবর জানাল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)।
গবেষকগণ জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে করোনা সংক্রমণে বিশ্ব সবার শীর্ষে পৌঁছবে ভারত। এখনি কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল না দিলে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলকে পিছনে ফেলে এক নম্বরে স্থান দখল করবে ভারত। এদিকে গত শুক্রবার, IMA-এর তরফে জানান হয়েছে ভারতে ইতিমধ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশ জুড়ে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে খুব শীঘ্রই করোনার টিকা আবিস্কার না হলে সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আইএমএ হসপিটাল বোর্ড অফ ইন্ডিয়ারে চেয়ারপার্সন ড. ভিকে মংগা জানিয়েছেন, “রাজধানী দিল্লিতে করোনার সংক্রমণকে ঠেকানো গেলেও দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলি যেমন মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরল প্রভৃতি রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামে যেভাবে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে তা কিভাবে আটকানো সম্ভব তা জানা নেই। এদিকে শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী দেশ জুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০,৩৮,৭১৬ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন ৬,৫৩,৭৫১ জন। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানান হয়েছে, দেশ জুড়ে গোষ্ঠী সংক্রমণ এখনো শুরু হয়নি। তবে আইএমএ-এর এমন উক্তি বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ড. ভিকে মংগা আরও জানিয়েছেন, “প্রতিদিন করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৩০,০০০ করে বাড়ছে। এটি সত্যিই খুব চিন্তার বিষয়”।
ভারতীয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ও ICMR-এর কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কে. শ্রীনাথ রেড্ডি জানিয়েছেন, “যেভাবে প্রতিদিন করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের হার বাড়ছে তাতে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে। সরকার ও নাগরিক উভয়কেই করোনা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে”। তিনি আরও বলেন, “গত ১লা জুন দেশ জুড়ে আনলক-১ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে লাফিয়ে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। জুন ও জুলাই এই দুই মাসে হু হু করে বেড়েছে সংক্রমণ”।
এদিকে আনলক-১ ও আনলক-২ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাস্তায় চলতে শুরু করেছে গাড়ি, খুলতে শুরু করেছে অফিস, বাজার। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে মানুষ ব্যর্থ হয়েছে। আর এখানেই ঘটে গিয়েছে সবচেয়ে বড় বিপদ। আর তার ফলে ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখনি শক্ত হাতে মোকাবিলা না করলে আগামী সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ আকার নেবে মারণ করোনা ভাইরাস।