সমাজের কটূক্তি সহ্য করে ৩ ফুটের মেয়েটি আজ IAS অফিসার
সমাজ যতই শিক্ষিত হোক, এখনো সমাজের বেশ কিছু মানুষ রয়েছেন যারা মানুষের রূপ নিয়ে বিচার করে। প্রবাদ বাক্যে ছিল ‘পেহেলে দর্শনধারী পিচে গুণবিচারী’। সমাজ গড় গড়িয়ে এগিয়ে চলেছে উন্নতির পথে কিন্তু এই মানসিকতাকে মানুষের মন থেকে একেবারে মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। এবার সমাজের সেইসব মানুষের থোঁতা মুখ ভোঁতা করে সবার আদর্শ হয়ে উঠলেন উত্তরাখণ্ডের আরতি। মাত্র তিন ফুট উচ্চতাতেও তথাকথিত সমাজের চোখে আঙ্গুল দিয়ে আপাতত তিনি রাজস্থানের IAS অফিসার।
তবে তার এই তিন ফুট উচ্চতা নিয়ে যথেষ্ট বাঁকা চোখে তাকিয়ে ছিল সমাজ। ব্যঙ্গ বিদ্রুপ, হাসাহাসির পাত্রীতেও তিনি একসময় পরিণত হন। তবে, কাজের মাধ্যমে সমস্ত কটুক্তির জবাব দিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা আরতি ডোগরা। উচ্চতা কম থেকেও কিভাবে শুধুমাত্র মনের জোরকে সম্বল করে আর কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সমস্ত বাধা বিপত্তিকে দূরে সরিয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে হয় তারে এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন আরতি।
মেয়ের চলার পথে সমানে তালে তাল মিলিয়ে মেয়েকে সামনে এগোতে সাহায্য করেছেন আরতির মা-বাবা। আরতির বাবার রাজেন্দ্র ডোগরা হলেন সেনাবিভাগের একজন অফিসার। তার মা কুমকুম ডোগরা একজন বিদ্যালয় এর শিক্ষিকা। আরতির জন্মের সময়েই চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, সে আর পাঁচটা বাচ্চাদের সঙ্গে সাধারণ ভাবে বিদ্যালয় এ পড়াশুনা করতে পারবে না। বছরের পর বছর তার বয়স বাড়লেও উচ্চতা বাড়েনি। উচ্চতা বাড়েনি বলে সমাজে চলতে থাকে এই নিয়ে নানান রকম তামাশা।
এত কিছুর পরেও তার মা-বাবা কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি শক্ত হাতে ধরেছিলেন আরতির দুটি হাত। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাদের এই সন্তানই তাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। মা-বাবার কথাও রেখেছেন আরতি। তবে এখন সকলেই একবাক্যে আরতির প্রশংসা করেন। শুধু তাই নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রীরও পছন্দের ব্যক্তির তালিকায় নিজের নামকে নথিভূক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন আরতি। তবে তার মত যেন শুধুমাত্র শারীরিক কারণে কাউকে এমন হেনস্থার সম্মুখীন হতে না হয়, এমনটাই জানিয়েছেন আরতি। দেহের গঠন, দেহের রং, দেহের রূপ সবটাই ঈশ্বরের দান। এতে মানুষের কোনো হাত থাকে না। মানুষ যা করতে পারে তা হল কঠোর পরিশ্রম করে নিজের জায়গাকে মজবুত করতে পারে। এমনটাই করে দেখিয়েছেন আরতি।