Hoop Story

বিদেশের মাটিতে বাঙালির জয়, মাছের ঝোল রেঁধেই বিচারকদের কুপোকাত করলেন বাঙালি কন্যা

সিনেমার প্রেক্ষাপট ঠিক থাকলে এখনো মানুষের মনে জায়গা করে নেয় বাংলা চলচ্চিত্র। ঠিক তেমনই একটি মনকাড়া চলচ্চিত্র হয়েছিল মাছের ঝোল। যেখানের পুরো গল্পটাই তৈরি হয়েছিল মাছের ঝোলকে কেন্দ্র করে। আদ্যোপান্ত বাঙালি ঘরের একটি ছেলে যে ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল একজন নামকরা সেফ হবেন বলেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। আর বিদেশের মাটিতে গিয়ে সকলকে মাছের ঝোল রান্না খাইয়ে একেবারে অবাক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এটাতো ছিল সিনেমার প্রেক্ষাপট, সিনেমার প্রেক্ষাপটে এমন কত কিছুইনা সম্ভব। কিন্তু এই রুপোলি পর্দার রূপকথাকে এই বাস্তবের মাটিতে নিয়ে এসেছেন এক বাঙালি কন্যা।

তার নাম কিশোয়ার চৌধুরী। অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী একজন বাংলাদেশী গৃহবধূ মাস্টার শেফ এর বিচারকদের শুধুমাত্র বাঙালি মাছের ঝোল খাইয়ে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে পার্টিসিপেট করেছিলেন তাবড় তাবড় শেফরা। তাদের অসাধারণ মেনুর কাছে একেবারে হিট হয়ে গেছে বাঙালির মাছের ঝোল। সাধে কি আর বলে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’? গোটা বিশ্বের লোক যতই যাই করুক না কেন বাঙালিরা ভাতের সঙ্গে মাছের ঝোল খাবেনা এমনটা হতেই পারেনা। তার এই সাফল্যে আপাতত বাঙালির বুক ফুলে গেছে কয়েক ইঞ্চি। তবে এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, যে গোটা বিশ্বে বাঙালিয়ানা কতটা সমাদৃত হয়। সবজি দিয়ে মাছের ঝোল কিংবা একটু কালো জিরার ফোড়ন দিয়ে মাছের ঝোল, কখনো ইলিশমাছ তো কখনো ছোট চারা মাছ, যে কোন মাছ যেকোনোভাবে ঝোল রান্না করলেই গরম গরম ভাতের মাঝে এক হাতা দিয়ে দিলেই কেল্লাফতে। দুপুরটা একেবারে জমে যায়।

কিশোয়ারের জন্মভূমি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষ আর মাছ খাবেননা, এমনটা তো হতেই পারেনা বাংলাদেশীরা নানান রকমের মাছের প্রিপারেশন করতে একেবারে সিদ্ধহস্ত। যতই অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করুন না কেন মন থেকে বাঙালিয়ানা আর মাছ-ভাত একেবারেই ভুলে যেতে পারেননি কিশোয়ার। তাইতো অস্ট্রেলিয়া ২০২১ মাস্টারশেফ এ তার মাছের ঝোলের জয়জয়কার। তবে শুধুমাত্র বিদেশি হৃদয় নয়, ছোটবেলা থেকেই এমন মাছের ঝোল রান্না করে বারবারই পরিবারের সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আর এই মাছের ঝোলের প্রতি এমন অগাধ ভালোবাসা এই তাকে সেরার সেরা মুকুট এর দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে খুব সহজেই।

ভাবা যায়, শুধু মাছের ঝোলের জন্য এমন সেরার মুকুট? বিদেশে যা মাছ সহজেই পাওয়া যায় অর্থাৎ জানা যাচ্ছে এখানকার মাছের ঝোলের প্রধান মাছ ইলিশ কিংবা চারা কিংবা কাতলা অথবা রুই নয়, এখানে যে মাছ সহজে পাওয়া যায় তা হল বারামুন্ডি। আপাতত সেই বারামুন্ডি মাছের ঝোল খেয়েই সকলকে বাজিমাত করে দিয়েছেন তিনি। খুব বেশি মশলা দিয়েছেন যে তা নয়, সামান্য উপকরণ দিয়েই হালকা পাতলা ঝোল রেঁধেছিলেন তিনি। এত কম উপকরণ দিয়েও যে এত সুন্দর স্বাদ হতে পারে তা বুঝতেই পারেননি ওই সাদা চামড়ার দেশের মানুষগুলো। তবে আর কি এবার আপনিও বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নের জন্য রাতেই পারেন খুব অল্প মশলা, টমেটো দিয়ে মাছের ঝোল। তবে তার মধ্যে থাকতে হবে বাঙালিয়ানার প্রতি অগাধ ভালোবাসা।

whatsapp logo