লকডাউনে বন্ধ রোজগার, ভিক্ষার বদলে রোজগারের পথ বাছলেন চন্দননগরের বৃদ্ধ পুতুল বিক্রেতা
যারা চন্দননগরের বাসিন্দা, বা চন্দননগরের আশেপাশে থাকেন বিকেলবেলা হলেই চন্দননগর স্ট্যান্ডে বেড়াতে যান তারা এই মানুষটিকে দেখবেন। চন্দননগর স্ট্যান্ড এর ধারে ফুটপাতে পাকা চুল, কালো চশমা পরে বসে আছেন এক অশীতিপর বৃদ্ধ। বৃদ্ধর সামনে রাখা এক ঝুড়ি তুলোর পুতুল হাঁস। সাদা, হলুদ পুতুল হাঁসের সম্ভার সাজিয়ে বসে থাকা কয়েকটা বিক্রির আশায়। পথচলতি মানুষের যদি কখনো ইচ্ছা হয় কিনে নেয় তার থেকে। আর যদি ফিরে না থাকায় সেদিনের জন্য দিনটা মাঠে মারা গেল।
অভাবের সংসারে দুবেলা-দুমুঠো খাবার জোটে না, কিন্তু তা বলে কি সাধারণ মানুষের থেকে ভিক্ষা করতে পারেন? আত্মসম্মান তাকে ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে দেয়নি। যতই কষ্ট হোক হাঁটুমুড়ে ফুটপাতে বসে একটু বিক্রির আশায় সারাদিন পথে যাত্রীদের দিকে চেয়ে থাকা। কেউ যদি দয়া করে একটা পুতুল হাঁস কেনে। তবে সেদিন সংসারে দু’মুঠো খাবার জোটে। অশীতিপর সংগ্রামী এই বৃদ্ধ মানুষটির নাম হরিপদ দাস। তার বাড়ি মানকুন্ডুতে। মানকুন্ডু থেকে চন্দননগর স্ট্যান্ড এ বিক্রি করতে আসেন তুলোর পুতুল।
লকডাউনে ট্রেন বন্ধ সেরকম যাত্রী ও আসেনা স্ট্যান্ডে। সংসারে একেবারে হাঁড়ির হাল। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন এই অশীতিপর বৃদ্ধকে একটু সুখের মুখ দেখাতে। আগেকার দিনের মানুষ যারা সোশ্যাল মিডিয়া বা এই ধরনের নতুন জিনিসপত্র দেখে যতই নাক সিটকান না কেন, যতই বলুক না কেন যে নতুন প্রজন্মের উচ্ছনে যাওয়ার কারণ একমাত্র ওই মুঠোফোন, তাদের দিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে নতুন প্রজন্ম দেখিয়ে দিয়েছে যে তাদের হাতের মুঠোফোন কি করতে পারে।
বৃদ্ধ মানুষটির ছবি দিয়ে তার ফোন নম্বর দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন তারা। এই ভদ্রলোকের থেকে যেন মানুষ জিনিস কেনেন। কোন দয়া-দাক্ষিণ্যে নয়, বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তার হাতে তুলে দিন দাদুর তৈরি এই সুন্দর তুলোর পুতুল হাঁস। প্রয়োজন না থাকলেও যদি একটা কেনেন ওনার থেকে, তাহলে আপনার ভাঁড়ার কতটা শূন্য হবে তা জানা নেই, তবে এই বৃদ্ধ মানুষটির ভাঁড়ার একটু হলেও পূর্ণ হবে। পুতুলের দাম মাত্র কুড়ি টাকা। কিনতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন এই ফোন নম্বরে – 8981813928