সম্প্রতি পাটুলিতে নিজের অফিসে ‘চা-কাকু’ মৃদুল দেবের সঙ্গে দেখা করলেন অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। এদিন মিমি নিজের অফিসে মৃদুলবাবুকে সসম্মানে নিয়ে আসেন। মৃদুলবাবুর হাতে বিজয়ার মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন মিমি। মৃদুলবাবুর অর্থনৈতিক অভাব এবং অন্যান্য সমস্যার কথা শোনেন তিনি। মিমি মৃদুলবাবুকে যথাসম্ভব সাহায্য করবেন বলে কথা দিয়েছেন।
এককাপ চাও যে মানুষকে বিখ্যাত করে দিতে পারে, তা মৃদুলবাবুর ঘটনাটি না ঘটলে বোঝাই যেত না। পেশায় দিনমজুর মৃদুলবাবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা জনতা কার্ফুর দিন চা খেতে বেরিয়েছিলেন। সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকলেও তাঁদের পাড়ায় একটি চায়ের দোকান খোলা ছিল। মৃদুলবাবু জনতা কার্ফুর বিষয়টি সঠিকভাবে জানতেন না। একটি মেয়ের ভিডিওতে খোলা চায়ের দোকান ও তাঁর খরিদ্দাররা ধরা পড়েন যাঁদের মধ্যে মৃদুলবাবুও ছিলেন।
মেয়েটি চায়ের দোকানে ভিড় করার জন্য খরিদ্দারদের ধমক দেয়। কিন্তু প্রত্যুত্তরে মৃদুলবাবু নম্রভাবে বলে ওঠেন “চা খাবো না আমরা? খাবো না চা?” মেয়েটি ধমক দিয়ে চা খেতে বারণ করে। এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবলভাবে ভাইরাল হয়। মৃদুলবাবু ‘চা-কাকু’ নামে পরিচিত হন। তাঁকে নিয়ে প্রচুর মিম বানানো হ্য়। বহু ইউটিউবাররা মেয়েটির তোলা ভিডিওয় মৃদুলবাবুর অংশটি নিয়ে মজাদার ‘রোস্ট’ করেন। মৃদুলবাবু নেটে নিজের ভাইরাল হওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।
কিছুদিন পরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সোশ্যাল মিডিয়ায় আরেকটি ভিডিও পোস্ট করে যেখানে মৃদুলবাবুকে চড়া রোদে মাটি কোপানোর কাজ করে দিন গুজরান করতে দেখা যায়। এইসময় আরো কিছু ভিডিও করা হয় যেখানে মৃদুলবাবু নিজের পরিচয় দেন ও জনতা কার্ফুর দিন চা খেতে বেরোনোর জন্য নেটিজেনদের কাছে ক্ষমা চান। মৃদুলবাবুর সবকটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
আমজনতা ‘চা-কাকু’র আড়ালে থাকা এক দীনদরিদ্র মানুষের কথা জানতে পারেন। লকডাউনের সময় মৃদুলবাবুর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী ও অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তাঁরা এখনও অবধি নিয়মিত মৃদুলবাবুকে চাল-ডাল সহ সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য দিয়ে সাহায্য করছেন। এমনকি মিমি মৃদুলবাবুর নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এদিন পাটুলির অফিসে মিমি এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা শোনেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।