সময় ৭:৩০ মিনিট, সুরের আকাশ থেকে ঝরে পড়ল শেষ সন্ধ্যাতারা। কিছুদিন আগে সারা বিশ্ব হারিয়েছে সুরের সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মহাপ্রয়াণে আবারও শোকাকুল বাঙালি তথা সারা ভারত। বয়স হয়েছিল ৯০। বাইপাসের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল তাঁর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ হাসি হেসে বিদায় নিলেন সন্ধ্যা দেবী।
প্ৰসঙ্গত, জানুয়ারির শেষদিকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রিপোর্ট আসে করোনা পজেটিভ। ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে তাঁর। ধীরে ধীরে অবস্থায় অবনতি হচ্ছিল। এরপরেই বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন তাঁর অবস্থার অবনতি শুরু হয়। হাসপাতাল সূত্র খবরও আসে সন্ধ্যা দেবীর জীবন সংকট উপস্থিত। ব্লাড প্রেসার কম। পেটের যন্ত্রণাও প্রবল। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ফের আই সি ইউ-তে নিয়ে গিয়ে ‘গীতশ্রী’কে রাখা হয় ভেসোপ্রেসার সাপোর্টে। কিন্তু শেষমেষ হারিয়েই গানের দেবী।
“সন্ধ্যদি হলেন বাঙালির শেষ সুরের ঝংকার”- গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকাকুল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, “সন্ধ্যাদি আমার গান শুনতে ভীষণ ভালোবাসতেন। ওনাকে হারিয়ে চোখ জ্বলে ভরে আসছে আমার।” মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, “লতাজির মৃত্যু সংবাদ সন্ধ্যদিকে জানানো হয়নি, তাঁর শারীরিক অবনতির কথা ভেবে।” মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, আগামিকাল দুপুর ১২টা থেকে ৫টা অবধি রবীন্দ্রসদনে শায়িত থাকবে দেবীর দেহ। সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পরে শেষকৃত্য যথাযথ মর্যাদা সহকারে সম্পন্ন করা হবে।
‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ গেয়েছিলেন সন্ধ্যা দেবী। তাঁর এমনতর অতুলনীয় গানের জন্যই তিনি ২০১১ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গ বিভূষণ পেয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯৭০ সালে জয় জয়ন্তী এবং নিশি পদ্ম চলচ্চিত্রে তার গানের জন্য শ্রেষ্ঠ মহিলা প্লেব্যাক গায়কের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন। তাঁর ঈশ্বর প্রদত্ত সুর মাতোয়ারা করে রেখেছিল সারা সংগীত-জগৎকে। মৃত্যু এসে তাঁর দেহ কেড়ে নিল। কিন্তু তাঁর সুরকে এই পৃথিবীর বুক থেকে কখনোই কেড়ে নিতে পারবেনা।