বেলাগাম বৃষ্টি! তুমুল জলোচ্ছ্বাসে রাজ্য জুড়ে বন্যার আশঙ্কা
গতকাল সকালে বালেশ্বরে ঘূর্ণিঝড় যশের ল্যান্ডফল হলেও এই ঝড় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তার আস্ফালন দেখিয়েছে। সকাল থেকেই ফুলেফেঁপে উঠেছিল সমুদ্র। তারপর সমুদ্রের জল ধীরে ধীরে ঢুকে গিয়েছে গ্রামের দিকে। গতকাল যশ এর প্রভাবে একাধিক উপকূলবর্তী গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেঙেছে শতাধিক নদী বাঁধ। তবে গতকালই সব শেষ হয়ে যায়নি! আজ সকালে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর নতুন বিপদের পূর্বাভাস দিল। তারা জানিয়েছে, আগামী ১-৩ ঘন্টার মধ্যে বাংলার ৬ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে যশ চলে গেলেও তার প্রভাব এখনো যায়নি। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ শক্তি হারিয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। বর্তমানে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় এখন উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে। অভিমুখ ঝাড়খণ্ডের দিকে। পরবর্তী ৬ ঘন্টায় শক্তি হারিয়ে যশ পরিণত হবে নিম্নচাপে। আর সেই নিম্নচাপের প্রভাবেই ঝাড়খন্ড ও বিহার লাগোয়া রাজ্যের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের সকাল ৮:৩০ টার বুলেটিন অনুযায়ী, আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ৬ জেলায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। জেলাগুলি হল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা। এই জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে বইবে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া। এছাড়া দুই মেদিনীপুর জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সকাল থেকেই গাঙ্গেয় পশ্চিমাঞ্চলের আকাশের মুখ ভারি। মেঘলা আকাশ থেকে মাঝেমাঝেই ঝরে পড়ছে বৃষ্টি এবং বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বৃষ্টির পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় যশ ২৪ মে সোমবার বঙ্গোপসাগরের বুকে জন্ম নিয়ে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল। তারপর ৬৩ ঘন্টা জীবনচক্র পেরিয়ে গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত ১১ টায় তা শেষ হয়। গতকাল রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে এই ঘূর্ণিঝড়। লক্ষ লক্ষ মানুষের বাড়ি ভেঙে যায়। শতাধিক নদী বাঁধ ভেঙ্গে যায়। জলমগ্ন উপকূলের একাধিক গ্রাম। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন অসংখ্য ভিটে হারানো মানুষ।